HomeBlogযক্ষ্মা কি? যক্ষ্মার লক্ষণ কি? যক্ষা প্রতিরোধের উপায় কি?

যক্ষ্মা কি? যক্ষ্মার লক্ষণ কি? যক্ষা প্রতিরোধের উপায় কি?

যক্ষ্মা একটি পরিচিত বায়ুবাহিত সংক্রামক রোগ। তবে ক্ষেত্রবিশেষে যক্ষ্মার জীবাণুযুক্ত ত্বকের ক্ষতের সংস্পর্শে এলে কিংবা সংক্রমিত গরুর দুধ খেয়েও কেউ এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। উল্লেখ্য, যেকোনো লোক, যেকোনো সময়ে এ রোগ দ্বারা সংক্রমিত হতে পারে। যারা অধিক পরিশ্রম করে, দুর্বল, স্যাঁতসেঁতে বা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বাস করে, অপুষ্টিতে ভোগে অথবা যক্ষ্মা রোগীর সাথে বসবাস করে, তারা এ রোগে সহজে আক্রান্ত হয়। আমাদের অনেকের ধারণা, যক্ষ্মা শুধু ফুসফুসের রোগ। আসলে ধারণাটা একেবারেই সঠিক নয়। যক্ষ্মা অন্ত্র, হাড়, ফুসফুস এরকম দেহের প্রায় যেকোনো স্থানে হতে পারে। দেহে এ রোগের আক্রমণ ঘটলে সহজে এর লক্ষণ প্রকাশ পায় না। যখন জীবাণুগুলো দেহের রােগ প্রতিরােধক শ্বেত রক্তকণিকাকে পরাস্ত করে দেহকে দুর্বল করে, তখনই এ রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়।

যক্ষা রোগের কারণ : সাধারণত Mycobacterium tuberculosis নামক এক ধরনের ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে এ রোগ হয়। তবে Mycobacterium গণভুক্ত আরও কিছু ব্যাকটেরিয়া যক্ষ্মা সৃষ্টি করতে পারে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস করলে অতি সহজে দেহে রোগ জীবাণুর বিস্তার ঘটে।

রােগ নির্ণয় : কফ পরীক্ষা, চামড়ার পরীক্ষা (MT test), সাইটো ও হিস্টোপ্যাথলজি পরীক্ষা এবং এক্সরের সাহায্যে এ রোগ নির্ণয় করা যায়। তবে যক্ষ্মায় ঠিক কোন অঙ্গটি আক্রান্ত হয়েছে, তার উপরে নির্ভর করবে কোন পরীক্ষাটি করতে হবে। বর্তমানে রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে রোগটি নিশ্চিতভাবে নির্ণয় করা যায় কিনা তা নিয়ে গবেষণা চলছে। ইদানীং আমাদের দেশে রোগীর কফসহ বিভিন্ন নমুনায় যক্ষা জীবাণু আছে কি না তা নির্ণয়ের জন্য DNA ভিত্তিক পরীক্ষা চালু হয়েছে।

 

যক্ষা রোগের লক্ষণ

  • রোগীর ওজন কমতে থাকে, আস্তে আস্তে শরীর দুর্বল হতে থাকে।
  • সাধারণত তিন সপ্তাহের বেশি সময় কাশি থাকে।
  • খুসখুসে কাশি হয় এবং কখনো কখনো কাশির সাথে রক্ত যায়।
  • রাতে ঘাম হয়, বিকেলের দিকে জ্বর আসে। দেহের তাপমাত্রা খুব বেশি বাড়ে না।
  • বুকে পিঠে ব্যথা হয়।
  • অজীর্ণ ও পেটের পীড়া দেখা দেয়।

 

যক্ষা রোগের প্রতিকার

  • ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা করা।
  • এ রোগের চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদি। ডাক্তারের পরমার্শ অনুযায়ী রোগ নিবারণের নিয়মগুলো কঠিনভাবে মেনে চলা।
  • প্রয়োজনে রোগীকে হাসপাতালে বা স্যানাটোরিয়ামে পাঠানো।
  • রোগীর ব্যবহারের সবকিছু পৃথক রাখা।
  • রোগীর কফ বা থুতু মাটিতে পুঁতে ফেলা।
  • রোগীর জন্য উপযুক্ত চিকিৎসা ও পরিমিত পুষ্টিকর খাদ্যের ব্যবস্থা রাখা।
  • ডাক্তারের নির্দেশ ব্যতীত কোনো অবস্থায় ঔষধ সেবন বন্ধ না করা।

 

যক্ষা রোগের প্রতিরোধ

এ মারাত্মক রোগের আক্রমণ থেকে রেহাই পেতে হলে শিশুদের যক্ষ্মা প্রতিষেধক বিসিজি টিকা দিতে হবে। শিশুর জন্মের পর থেকে এক বছর বয়সের মধ্যে এ টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হয়। বিসিজি টিকা শিশুদের প্রাণঘাতী যক্ষ্মা থেকে সুরক্ষা দিলেও বড় হয়ে গেলে তা সাধারণত আর কার্যকর থাকে না। তাই শিশু বয়সে টিকা দিলে তা আজীবন যক্ষ্মা থেকে সুরক্ষা দেয় না। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন টিকাদান কেন্দ্রে এ টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments