HomeBlogসংক্রামক রোগ কাকে বলে? সংক্রামক রোগ প্রতিকারের উপায়গুলো কি?

সংক্রামক রোগ কাকে বলে? সংক্রামক রোগ প্রতিকারের উপায়গুলো কি?

যেসব রোগ ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ও অন্যান্য জীবাণু দ্বারা সৃষ্টি হয় ও আক্রান্ত প্রাণী থেকে সুস্থ প্রাণীতে ছড়িয়ে পড়ে সেসব রোগকে সংক্রামক রোগ বলে।

সংক্রামক রোগ ছড়ানোর মাধ্যম :

১। স্পর্শ : বেশ কিছু রোগ এভাবে ছড়ায়। যেমন স্কেবিস, ছত্রাক জনিত চর্ম রোগ।

২। যৌন সংস্পর্শ : এইডস, সিফিলিস, গনোরিয়া, হেপাটাইটিস (বি, সি), হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস ইনফেকশন যেটি জরায়ুমুুখ ক্যান্সারের অন্যতম কারণ, লিমফো গ্রানুলোমা ভেনেরিয়াম, শ্যাাংক্রয়েড।

৩। খাদ্য ও পানীয় : টাইফয়েড, পোলিও মায়েলাইটিস, হেপাটাইটিস (এ, ডি), কলেরা, ডায়রিয়া, আমাশয়, বিভিন্ন কৃমি সংক্রমণ।

৪। বায়ু বাহিত : যক্ষ্মা, ইনফ্লুয়েঞ্জা, হুপিং কাশি, মেনিনজাইটিস, নিউমোনিয়া, ব্রংকাইটিস, ব্রংকিওলাইটিস, মাম্পস, রুবেলা, বসন্ত , হাম, করোনা ভাইরাস রোগ।

৫। ভেক্টর বাহিত : মশা: ডেঙ্গি, চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, ম্যালেরিয়া, ফাইলেরিয়াসিস। মাছি : উদরাময়, আমাশয়, ক্রিমি সংক্রমণ, কালাজ্বর, চ্যাগাস ডিজিস, স্লিপিং সিকনেস, চোখের কৃমি (deer fly)।

৬। ত্বকের মাধ্যমে : কিছু রোগের এজেন্ট সরাসরি ত্বকে ত্বকের সংস্পর্শে ছড়িয়ে পড়তে পারে, যেমন Tinea capitis, ছত্রাক যা দাদ সৃষ্টি করে, Tinea pedis, ছত্রাক যা ক্রীড়াবিদদের পায়ে সৃষ্টি করে এবং impetigo।  যাইহোক, এই রোগ সম্ভবত প্রায়ই ফোমাইটের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

 

সংক্রামক রোগের শ্রেণীবিভাগ :

১। ব্যাকটেরিয়াল : যক্ষ্মা, ধনুস্টংকার, টাইফয়েড, কলেরা।

  • যক্ষ্মা : যক্ষ্মা হচ্ছে ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে সংঘটিত একটি সংক্রামক রোগ। এ রোগ সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে ছড়ায় এবং দেহে প্রবেশ করে প্রথমে ফুসফুসে আশ্রয় নেয়। যক্ষ্মায় আক্রান্ত সব রোগীর কাছ থেকেই কিন্তু যক্ষ্মার জীবাণু ছড়ায় না। যাদের থেকে সংক্রমণ ছড়াতে পারে, তাদের হাঁচি-কাশি, এমনকি কথা বলার সময়ও বাতাসে যক্ষ্মার জীবাণু ছড়ায়। ২০১৮ সালে সারা বিশ্বে এই রোগে আক্রান্ত হয় এক কোটি মানুষ এবং মারা যায় ১৫ লাখ মানুষ।
  • ধনুস্টংকার : এটি একটি ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ যার প্রধান লক্ষণ হল মাংস পেশীর খিঁচুনি। সাধারণত, খিঁচুনি চোয়ালে শুরু হয় এবং তারপরে শরীরের বাকি অংশে ছড়িয়ে পরে। প্রতিটি খিঁচুনির দমক সাধারণত কয়েক মিনিট স্থায়ী হয়। প্রায়ই তিন থেকে চার সপ্তাহ ঘনঘন খিঁচুনি হতে থাকে। কখনও কখনও খিঁচুনির দমক এতই তীব্র হয় যে তা হাড় ভাঙ্গার জন্যও যথেষ্ট। ধনুস্টংকারে এ ছাড়াও জ্বর, ঘাম, মাথাব্যথা, গিলতে সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ, দ্রুত হৃদস্পন্দন ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়। লক্ষণগুলি সাধারণত সংক্রমণের তিন থেকে একুশ দিনের পর দেখা যায়। সুস্থ হতে কয়েক মাস সময় লেগে যায়। প্রায় দশ শতাংশ ক্ষেত্রে মৃৃত্যু হয়ে থাকে।
  • টাইফয়েড : টাইফয়েড (Typhoid) হল এক ধরনের পানিবাহিত ব্যাক্টেরিয়া ঘটিত রোগ, যা Salmonella typhi ব্যাক্টেরিয়ার কারণে হয়। লক্ষণ মৃদু থেকে তীব্র হতে পারে, সচরাচর জীবাণু প্রবেশের ৬-৩০ দিন পর লক্ষণগুলি দেখা যায়। প্রায়ই কয়েকদিনের ব্যবধানে জ্বর এর তীব্রতা বৃদ্ধি পেতে থাকে। দুর্বলতা, পেট ব্যাথা, কোষ্ঠ্যকাঠিন্য, মাথা ব্যাথা সচরাচর হতে দেখা যায়। ডায়রিয়া খুব একটা হয় না, বমিও সেরকম হয় না। কিছু মানুষের ত্বকে র‍্যাশ (Rash) এর সাথে গোলাপী স্পট দেখা যায়। বিনা চিকিৎসায় সপ্তাহ বা মাসখানেক ধরে লক্ষণ থাকতে পারে। কিছু ব্যক্তি আক্রান্ত না হয়েও জীবাণু বহন করে রোগের বিস্তার ঘটাতে পারে। টাইফয়েড জ্বর আন্টিবায়টিক ব্যবহার করে সারানো যায়।

২। ভাইরাল : ভাইরাল ইনফ্লুয়েঞ্জা, রোটা ভাইরাল ডায়রিয়া, ভাইরাল হেপাটাাাইটিস, এইডস, হাম, রুবেলা।

৩। ছত্রাক জনিত : বিভিন্ন চর্মরোগ, ছত্রাক জনিত ফুসফুস সংক্রমণ, মস্তিষ্ক ও মস্তিষ্ক আবরন সংক্রমণ, মহিলাদের শ্বেতপ্রদর ইত্যাদি।

৪। প্রোটিন জনিত (প্রিয়ন) : ম্যাড কাউ, ক্রুজফিল্ড জ্যাকব

সংক্রমণ ঝুঁকি : ডায়াবেটিস রোগী, জন্মগত স্বল্প রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের সংক্ররমণ ঝঝুুঁকি বেশি। কিছু রোগেও শরীর এর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, যেমন এইডস, যক্ষ্মা, কালাজ্বর, ক্যনসার। তাছাড়া অতি ছোট শিশু এবং অতি বৃৃদ্ধদের সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি।

সংক্রামক রোগ প্রতিকারের উপায়গুলো হলো–

i. পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে।

ii. পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে।

iii. প্রচুর পরিমাণে নিরাপদ পানি পান করতে হবে।

iv. রোগের তীব্রতা অনুযায়ী ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular