HomeScienceঅনবায়নযোগ্য শক্তি কাকে বলে? অনবায়নযোগ্য শক্তির সুবিধা কি?

অনবায়নযোগ্য শক্তি কাকে বলে? অনবায়নযোগ্য শক্তির সুবিধা কি?

যে শক্তি একবার ব্যবহার করা হলে তা থেকে পুনরায় ব্যবহার করার শক্তি উৎপন্ন করা যায় না, তাকে অনবায়নযোগ্য শক্তি (Non-renewable energy) বলে। এটি এমন ধরনের জ্বালানি বা শক্তি যা নবায়ন করা যায় না বা পুনরায় উৎপন্ন করা যায় না এবং ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে এর মজুত কমতে থাকে এবং সঞ্চয় সীমিত হওয়ার দরুন তা একসময় নিঃশেষ হয়ে যায়।। প্রকৃতিতে এদের তৈরি করতে যত সময় লাগে, তার চেয়ে কম সময়ে ব্যায়িত হয়। অনবায়নযোগ্য শক্তির মধ্যে অন্যতম হলো কয়লা, তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, ইউরেনিয়াম ইত্যাদি।

 

অনবায়নযোগ্য শক্তির উদাহরণ

খনিজ শক্তি

পৃথিবীতে শক্তির সবচেয়ে বড় উৎস হচ্ছে তেল, গ্যাস বা কয়লা। লক্ষ-কোটি বছর আগে গাছপালা মাটির নিচে চাপা পড়ে দীর্ঘদিনের তাপ আর চাপে এই রূপ নিয়েছে। মাটির নিচ থেকে কয়লা, তেল আর গ্যাসকে তুলতে হয়। মাটির নিচ থেকে যে তেল পাওয়া যায়, তাদেরকে ক্রুড অয়েল বলা হয়। প্রাথমিক অবস্থায় ক্রুড অয়েল অনেক ঘন থাকে। রিফাইনারিতে সেগুলো পরিশোধন করে পেট্রল, ডিজেল বা কেরোসিনে রূপান্তর করা হয় এবং সাথে সাথে আরো ব্যবহারযোগ্য পদার্থ বের হয়ে আসে। আমরা প্রতিনিয়ত খনিজ তেল পেয়ে আসছি বলে মনে হতে পারে, এভাবে আমরা এসব শক্তি পেতেই থাকবো। কিন্তু এই শক্তি একদিন শেষ হয়ে যাবে। তাই খনিজ শক্তি একটি অনবায়নযোগ্য শক্তি।

 

নিউক্লিয়ার শক্তি

অনেক দেশ নিউক্লিয়ার শক্তিকে ব্যবহার করছে, সেখানেও এক ধরনের জ্বালানির দরকার হয়, সেই জ্বালানি হচ্ছে ইউরেনিয়াম। তেল, গ্যাস, কয়লা বা ইউরেনিয়াম, এই শক্তিগুলোর মাঝে একটা মিল রয়েছে, এগুলো ব্যবহার করলে খরচ হয়ে যায়। মাটির নিচে কতটুকু তেল, গ্যাস, কয়লা আছে কিংবা পৃথিবীতে কী পরিমাণ ইউরেনিয়াম আছে মানুষ এর মাঝে সেটা অনুমান করে বের করে ফেলেছে। দেখা গেছে পৃথিবীর মানুষ যে হারে শক্তি ব্যবহার করছে যদি সেই হারে শক্তি ব্যবহার করতে থাকে তাহলে পৃথিবীর শক্তির উৎস তেল, গ্যাস, কয়লা বা ইউরেনিয়াম দিয়ে টেনেটুনে বড়জোর দুই শত বছর চলবে। তারপর আমাদের পরিচিত উৎস যাবে ফুরিয়ে। তখন কী হবে পৃথিবীর মানুষ সেটা নিয়ে খুব বেশি দুর্ভাবনায় নেই, তার কারণ মানুষ মোটামুটি নিশ্চিতভাবেই জানে বিজ্ঞান আর প্রযুক্তি ব্যবহার করে এর মাঝে অন্য কিছু বের করে ফেলা হবে।

 

অনবায়নযোগ্য শক্তির সুবিধা (Advantage of Non-renewable energy)

অনবায়নযোগ্য শক্তির সুবিধা মূলত দুটি দিক থেকে বিবেচনা করা হয়- দাম ও প্রাচুর্য। বেশির ভাগ যন্ত্রপাতি বা যানবাহন অনবায়নযোগ্য শক্তির সাহায্যে চলে, এদের নবায়নযোগ্য শক্তির সাহায্যে চালাতে অনেক বেশি খরচ লাগে। যেমন: সাধারণ গ্যাস বা তেলে কম খরচে এসব যানবাহন বা যন্ত্রপাতি চলে। অপরপক্ষে নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস যেমন সৌরশক্তি দ্বারা কোনো যানবাহন চালানো কষ্টসাধ্য ও ব্যয়বহুল। অনবায়নযোগ্য জ্বালানি সস্তা, এদের অল্প পরিমাণ থেকে বেশি শক্তি পাওয়া যায়, যেমন অল্প ইউরেনিয়াম থেকে অনেক বিদ্যুৎ শক্তি পাওয়া যায়।

 

অনবায়নযোগ্য শক্তির সীমাবদ্ধতা বা অসুবিধা (Limitation or Disadvantage of Non-renewable energy)

অনবায়নযোগ্য জ্বালানির অসুবিধা হলো–

  • এটি অনবায়নযোগ্য ও দ্রুত ফুরিয়ে যায়; এরা মূলত নিঃশেষ হয়ে যায়।
  • পরিবেশকে বেশ উচ্চমাত্রায় দূষিত করে।
  • এদের দহনে কার্বন ডাইঅক্সাইড বাতাসে ছড়ায়, ফলে গ্লোবাল ওয়ার্মিং তৈরি করে।
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments