HomeICTডেটা প্রসেসিং কি? ডেটা প্রসেসিং কত প্রকার ও কি কি?

ডেটা প্রসেসিং কি? ডেটা প্রসেসিং কত প্রকার ও কি কি?

ডেটা প্রক্রিয়াকরণ করে ফলাফল হিসেবে তথ্য পাওয়া যায়। এই প্রাপ্ত ডেটাকে প্রয়োজনীয় বিশ্লেষণ, বিন্যাস প্রভৃতির মাধ্যমে অর্থপূর্ণ তথ্য বা ইনফরমেশনে পরিণত করার প্রক্রিয়াকে বলা হয় উপাত্ত প্রক্রিয়াকরণ বা ডেটা প্রসেসিং (Data processing)। যেমন পরীক্ষায় পাওয়া নম্বরের ভিত্তিতে ছাত্রদের মেধাক্রম নির্ণয়, বাৎসরিক কেনাবেচার সাপেক্ষে কোন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের লাভ, লোকসানের হিসাব নির্ণয় ইত্যাদি। বাহ্যিকভাবে ডেটা প্রক্রিয়াকরণ করার দুটো পদ্ধতি আছে। যথা হাতে-কলমে ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সহায়তা নিয়ে। তাই ডেটা প্রসেসিং দুই প্রকার, যথা-

১. MDP (ম্যানুয়াল ডেটা প্রসেসিং)

২. EDP (ইলেক্ট্রনিক ডেটা প্রলােসং)

 

ম্যানুয়াল ডেটা প্রসেসিং (MDP)

কম্পিউটার বা অন্য কোন ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি ছাড়া হাতে কলমে ডেটা প্রসেসিং করাকে MDP (Manual Data Processing) বলে। যেমন: ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের বেতন রিপোর্ট বা পে-রোল তৈরি করতে হলে প্রত্যেক কর্মী মোট কত ঘণ্টা কাজ করেছে তার ভিত্তিতে ক্যালকুলেটর চেপে কাগজ-কলমে লিখে যোগ, বিয়োগ, গুণ ও ভাগ করে চূড়ান্ত রিপোর্ট তৈরি করা। এতে অনেক সময় লাগে এবং ভুল হওয়ার সম্ভাবনাও প্রচুর।

 

ইলেক্ট্রনিক ডেটা প্রসেসিং (EDP)

ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে কম্পিউটার বা অন্য কোন যন্ত্রপাতির সাহায্যে স্বয়ংক্রিয়ভাবে যে প্রসেসিং করা হয় তাকে ইলেক্ট্রনিক ডেটা প্রসেসিং বা EDP (Electronic Data Processing) বলা হয়। এতে সময় অনেক কম লাগে এবং একই কাজ বার বার করতে হয় এমন কাজ দ্রুত ও সহজে করা যায়। কম্পিউটার দিয়ে অতি দ্রত নির্ভুলভাবে ডেটা প্রসেসিং করা যায়। এক্ষেত্রে ইনপুট ডিভাইসের মাধ্যমে ডেটা কম্পিউটারে ঢুকানো হয়। কম্পিউটার তার অস্থায়ী মেমোরিতে ডেটা রেখে প্রোগ্রামের নির্দেশ অনুযায়ী প্রসেসিং করে। কম্পিউটার প্রদত্ত নির্দেশ অনুযায়ী ডেটাকে বিভিন্নভাবে বিচার-বিশ্লেষণ করে এবং প্রয়োজনীয় গাণিতিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে বা যুক্তিনির্ভর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং সবশেষে কাঙ্ক্ষিত তথ্য আউটপুট ডিভাইসের মাধ্যমে প্রদর্শন করে।

 

ইলেকট্রনিক ডেটা প্রসেসিং প্রক্রিয়ার প্রকারভেদ

প্রযুক্তির উৎকর্ষতার সাথে সাথে বিভিন্ন প্রকার ইলেকট্রনিক ডেটা প্রসেসিং প্রক্রিয়ার উদ্ভব হয়েছে। যেমন,

১. Online Data Processing (অনলাইন ডেটা প্রসেসিং)

২. Distributed Data Processing (ডিস্ট্রিবিউটেড ডেটা প্রসেসিং)

৩. Automatic Data Processing (অটোমেটিক ডেটা প্রসেসিং), ইত্যাদি।

নিচে সংক্ষেপে এই সব ডেটা প্রসেসিং প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

  • অনলাইন ডেটা প্রসেসিংঃ কোন ভিডিও ডিসপ্লে টার্মিনালের মাধ্যমে কম্পিউটারে ডেটা ইনপুট নেয়া হয়। কম্পিউটার তাৎক্ষণিকভাবে ডেটা গ্রহণ করে বা বাতিল করে দেয়। সাধারণত ইন্টারনেটের মাধ্যমে হাজার হাজার মাইল দূরত্ব থেকে এভাবে ডেটা প্রসেসিং করা হয়। যেমন ডাইভারসিটি ভিসা বা ডিভির লটারি ফর্ম পূরণ করার বিষয়টি। ইন্টারনেটের মাধ্যমে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে থেকে সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রে এই ফর্ম পূরণ করা হয়।
  • ডিস্ট্রিবিউটেড ডেটা প্রসেসিংঃ ভৌগলিক বিচারে যখন বিভিন্ন অবস্থানে স্বাধীনভাবে ডেটা প্রক্রিয়াকরণ করা হয় তখন তাকে ডিস্ট্রিবিউটেড ডেটা প্রসেসিং বলে। বিভিন্ন অবস্থানে স্বাধীনভাবে ডেটা প্রক্রিয়াকরণ করা হলেও প্রত্যেকটি ইউনিট নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সংযুক্ত থাকে।
  • অটোমেটিক ডেটা প্রসেসিংঃ মানুষের সাহায্য ছাড়া যেখানে কম্পিউটার, নেটওয়ার্ক ও বিভিন্ন সহায়ক যন্ত্রপাতির সাহায্যে ডেটা সংগ্রহ, সংরক্ষণ, প্রসেসিং ও বিতরণ করা হয় তাকে অটোমেটিক ডেটা প্রসেসিং বলে। যেমন এটিএম মেশিনের মাধ্যমে টাকা লেন-দেন করার বিষয়টি। নির্ধারিত পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে এখানে মেশিনের মাধ্যমে টাকা উঠানো যায় ও মেশিনে টাকা জমা দেয়া যায়।

 

ডোটা প্রসেসিং করার মৌলিক ধাপসমূহ

ডেটা প্রসেসিং এর জন্য এক বা একাধিক মৌলিক ক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়। নিচ উল্লেখযোগ্য কয়েকটির নাম দেওয়া হলোঃ

• Recording (রেকর্ডিং)

• Classification (শ্রেণিবিভাজন)

• Calculation (হিসাব নিকাশ)

• Duplicating (অনুলিপি তৈরি)

• Sorting (সাজানো)

• Research (অনুসন্ধান বা সার্চ)

• Examining (যাচাই)

• Merging (একত্রীকরণ)

• Report (রিপোর্ট)

 

কম্পিউটার দিয়ে ডেটা প্রসেসিং করার সুবিধা

১. ডেটা প্রসেসিং কাজে সময় কম লাগে।

২. নির্ভুল কাজ করা সম্ভব হয়।

৩. একই কাজ বার বার করাতে বিঘ্ন সৃষ্টি হয় না।

৪. কাজের গতি ক্রমশ ধীর হয়ে যায় না।

৫. বহু তথ্য মেমরিতে বছরের পর বছর সংরক্ষণ করে রাখা যায়।

৬. প্রয়োজনে প্রক্রিয়াকরণের ফলাফল পরবর্তীতে ব্যবহার করা যায়।

৭. জটিল ও ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে কম্পিউটার কাজ করতে পারে।

 

কম্পিউটার দিয়ে ডেটা প্রসেসিং করার অসুবিধা

১. প্রতি কাজের জন্য কম্পিউটারকে নির্দেশ দিতে হয়।

২. কম্পিউটার নিজে থেকে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।

৩. নিজে থেকে ভুল সংশোধন করতে পারে না।

 

বিজনেস ডেটা প্রসেসিং কাকে বলে?

ব্যবসা সংক্রান্ত যে কোন কাজের জন্য ডেটা প্রসেসিং করাকে সাধারণত বিজনেস ডেটা প্রসেসিং বলে। যেমন :

  • কর্মচারীদের পে-রোল তৈরি করা।
  • বিক্রয় দপ্তরের ইনভয়েস তৈরি করা।
  • উৎপাদনের হিসাব করা।
  • প্রতিষ্ঠানের আয়-ব্যয়ের হিসাব করা।
  • স্টক এক্সচেঞ্জের মূল্যসূচক নির্ণয় করা।
  • ব্যাংকের হিসাব রাখা ইত্যাদি।

 

ম্যানুয়াল ডেটা প্রসেসিং ও ইলেকট্রনিক ডেটা প্রসেসিং এর মধ্যে পার্থক্য কি?

মানুষ যখন হাতে কলমে বা লগ টেবিল কিংবা গাণিতিক ফাংশন টেবিল ব্যবহার করে ডেটা প্রসেসিং করে তখন তাকে ম্যানুয়াল ডেটা প্রসেসিং বলা হয়। আর কম্পিউটার বা অন্য কোনো ইলেক্ট্রনিক যন্ত্র দিয়ে ডেটা প্রসেসিং করা হলে তাকে বলা হয় কম্পিউটার নির্ভর ডেটা প্রসেসিং বা ইলেক্ট্রনিক ডেটা প্রসেসিং। নিচে ম্যানুয়াল ডেটা প্রসেসিং ও ইলেকট্রনিক ডেটা প্রসেসিং-এর পার্থক্য তুলে ধরা হলো–

ম্যানুয়াল ডেটা প্রসেসিং (Manual Data Processing)

  • কাজের গতি ধীর।
  • নির্ভুলভাবে কাজ করতে পারে না।
  • ক্লান্তি আছে।
  • দীর্ঘস্থায়ী থাকে না।
  • স্মৃতি অসীম।
  • যুক্তি বা বুদ্ধি দিয়ে কাজ করতে পারে।
  • কাজের সময় দিক পরিবর্তন ক্ষমতা নেই।

ইলেকট্রনিক ডেটা প্রসেসিং (Electronic Data Processing)

  • কাজের গতি খুব দ্রুত।
  • নির্ভুলভাবে কাজ করতে পারে।
  • কোন ক্লান্তি নেই।
  • অধিকৃত অবস্থায় দীর্ঘ স্থায়ী।
  • স্মৃতি সসীম।
  • যুক্তি বা বুদ্ধি দিয়ে কাজ করতে পারে না।
  • কাজের সময় দিক পরিবর্তন ক্ষমতা আছে।
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments