HomeBlogধ্বনি কি? কত প্রকার ও কি কি? কিভাবে ধ্বনির সৃষ্টি হয়?

ধ্বনি কি? কত প্রকার ও কি কি? কিভাবে ধ্বনির সৃষ্টি হয়?

ধ্বনি হলো ভাষার মূল উপকরণ। কোন ভাষার উচ্চারিত শব্দকে খুব সূক্ষ্মভাবে ভাগ করলে বা বিশ্লেষণ করলে যে আওয়াজ বা শব্দ পাওয়া যায়, তাই ধ্বনি। অর্থাৎ, ভাব প্রকাশক আওয়াজ বা শব্দকে ধ্বনি বলে।

ভাষা বিজ্ঞানী ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কোন ভাষার উচ্চারিত শব্দকে (Word) বিশ্লেষণ করলে আমরা কতকগুলো ধ্বনি পাই।”

ধ্বনি ও ভাষা বিজ্ঞানী অধ্যাপক মুহাম্মদ আব্দুল হাই বলেন, “শ্বাস বায়ুর বহির্গমণকালে গলনালি ও মুখবিবরের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এ সংঘর্ষের স্থান, রূপ ও পরিমাণ অনুসারে বিভিন্ন ধ্বনি উৎপন্ন হয়। তার মধ্যে অর্থবোধক ধ্বনিগুলোই মানুষের বিভিন্ন ভাষার বাগধ্বনি। ফুসফুস তাড়িত বাতাসের নির্গমনের ফলেই সাধারণত ধ্বনি সৃষ্টি হয়।” যেমন– অ, আ, ই, ক, খ, গ ইত্যাদি।

 

ধ্বনি তৈরির উপাদান

ভাষা বা মানুষের কথা কতগুলো ধ্বনির সমষ্টি। ধ্বনিগুলো বের হয় মুখ দিয়ে, কিন্তু ধ্বনির মূল উৎস হলো ফুসফুস। ফুসফুসের কাজ হলো মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া। সে কারণে ফুসফুস থেকে বাতাস বাইরে বেরিয়ে আসে। বাতাস বের হওয়ার সময় মুখে ধ্বনির সৃষ্টি হয়। ফুসফুস থেকে বাতাস গলনালি, মুখ, নাক দিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসে। মুখে যে ধ্বনি উচ্চারিত হয়, তার পেছনে কাজ করে ফুসফুস থেকে বেরিয়ে আসা বাতাস। ফুসফুস থেকে বাতাস স্বরতন্ত্রীর মাধ্যমে বেরিয়ে আসার সময় মুখের বিভিন্ন অংশে বাধা পায়। ফলে মুখে নানা ধরনের ধ্বনির সৃষ্টি হয়। বাগযন্ত্রের সঙ্গে ফুসফুস থেকে বেরিয়ে আসা বাতাসের স্পর্শের দ্বারা ধ্বনির সৃষ্টি হয়। ধ্বনি ফুসফুস থেকে আসে না, ফুসফুস থেকে আসে বাতাস আর এই বাতাসের আঘাতেই তৈরি হয় ধ্বনি। ধ্বনি তৈরির ক্ষেত্রে সহায়তা করে বাগযন্ত্র।

 

ধ্বনির প্রকারভেদ

বাংলা ভাষার মৌলিক ধ্বনি গুলোকে ২ ভাগে ভাগ করা হয়। যথা– ১. স্বরধ্বনি ও ২. ব্যঞ্জনধ্বনি।

১. স্বরধ্বনি

যে সব ধ্বনি উচ্চারণের সময় মুখের ভিতরে কোনো জায়গায় বাধা পায় না তাদেরকে স্বরধ্বনি বলে। যেমন– অ, আ, ই, ঈ ইত্যাদি। স্বরধ্বনি ২ প্রকার। (i) মৌলিক স্বরধ্বনি (ii) যৌগিক স্বরধ্বনি।

  • মৌলিক স্বরধ্বনি : যে স্বরধ্বনি অন্য স্বরধ্বনির সাহায্য ছাড়াই উচ্চারিত হয় সেগুলো মৌলিক স্বরধ্বনি। যেমন- অ, আ, ই, উ ইত্যাদি। মৌলিক স্বরধ্বনি ৭টি। যথা: অ, আ, ই, উ, এ, অ্যা, ও। মৌলিক স্বরধ্বনির মধ্যে ‘অ্যা/এ্যা’ নামে স্বরধ্বনিটি যোগ করেছেন ধ্বনিবিদ আব্দুল হাই।
  • যৌগিক স্বরধ্বনি : দুটি মৌলিক স্বরধ্বনি দ্রুত উচ্চারিত হয়ে ১টি যুক্ত ধ্বনিতে রূপ নিলে তাকে বলে যৌগিক স্বরধ্বনি। যেমন- ঐ = (অ+ই)/(ও+ই), ঔ = (অ+উ)/(ও+উ)। বাংলা ভাষায় যৌগিক স্বরধ্বনি ২৫টি। যৌগিক স্বরের অপর নাম দ্বিস্বর, দ্বৈতস্বর, যুগ্মস্বর, সন্ধিস্বর, মিশ্রস্বর ও সংযুক্ত স্বরধ্বনি। যৌগিক স্বরধ্বনি একাক্ষর হিসেবে বিবেচিত।

 

২. ব্যঞ্জনধ্বনি

যে সব ধ্বনি উচ্চারণের সময় মুখের ভিতরে কোথাও না কোথাও বাধা পায় তাদেরকে ব্যঞ্জনধ্বনি বলে। যেমন– ক, খ, গ, ঘ ইত্যাদি।

ব্যঞ্জনধ্বনির প্রকারভেদ : ব্যঞ্জন ধ্বনির উচ্চারণের মধ্যে নানারকম বৈচিত্র্য দেখা যায়। এই বৈচিত্র্যের জন্য ব্যঞ্জন ধ্বনিগুলোকে বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। যেমন–

১। স্পর্শ বা স্পষ্ট ব্যঞ্জনধ্বনি

২। জিহ্বামূলীয় কণ্ঠ্যধ্বনি

৩। তালব্য ধ্বনি

৪। দন্তমূলীয় মূর্ধন্য ধ্বনি

৫। দন্ত্যধ্বনি

৬। ওষ্ঠ্যধ্বনি

৭। নাসিক্য বা অনুনাসিক ধ্বনি।

 

কিভাবে ধ্বনির সৃষ্টি হয়?

ধ্বনি তৈরির মূল কেন্দ্র হলো ফুসফুস। ফুসফুস থেকে ছেড়ে দেওয়া বাতাস মুখের ভিতরের বিভিন্ন অংশে বাধা পেয়ে নানা রকম ধ্বনির সৃষ্টি করে।

 

এ সম্পর্কিত বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তরঃ–

১। শব্দের ক্ষুদ্রতম একক কোনটি?

ক) বর্ণ খ) স্বরবর্ণ

গ) ব্যঞ্জনবর্ণ ঘ) ধ্বনি

সঠিক উত্তর : ঘ

 

Tags :

  • ধ্বনি উচ্চারণের মূল উৎস কোনটি?; ধ্বনি কাকে বলে?; ধ্বনি কাকে বলে কত প্রকার?; ধ্বনি ও বর্ণ; শ ষ স হ এ চারটি কোন ধরনের ধ্বনি?; দ্বি ব্যঞ্জনধ্বনি কাকে বলে?; যৌগিক ব্যঞ্জনধ্বনি কয়টি?; ক থেকে ম পর্যন্ত ২৫টি ধ্বনিকে কী বলা হয়?; ব্যঞ্জনধ্বনি কি কি বর্ণ দিয়ে তৈরি?; হলন্ত ধ্বনি কি কি?; ধ্বনি কাকে বলে উদাহরণ দাও; কোন বর্ণের নিজস্ব কোন ধ্বনি নেই?; ল ধ্বনিটি কি ধরনের ধ্বনি?; মৌলিক ব্যঞ্জনধ্বনি কয়টি?; ধ্বনি ও বর্ণের মধ্যে পার্থক্য কি?; স্বরধ্বনি ও ব্যঞ্জনধ্বনি কাকে বলে?; ওষ্ঠ ধ্বনি কাকে বলে?; ধ্বনি পরিবর্তন কাকে বলে?;
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments