HomeChemistryনিউক্লিয় বিক্রিয়া কাকে বলে? নিউক্লিয় বিক্রিয়ার প্রয়োগ

নিউক্লিয় বিক্রিয়া কাকে বলে? নিউক্লিয় বিক্রিয়ার প্রয়োগ

রাসায়নিক বিক্রিয়ায় প্রতিটি মৌলের পরমাণু সংখ্যা অপরিবর্তিত থাকে যদিও এক্ষেত্রে এক ধরনের পদার্থ অন্য ধরনের পদার্থে পরিণত হয়। রাসায়নিক বিক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট পরমাণুর যোজ্যতা স্তরের ইলেক্ট্রন বিন্যাসে পরিবর্তন ঘটে, পরমাণুর নিউক্লিয়াসে কোন রকম পরিবর্তন সাধিত হয় না। পরবর্তীতে বিজ্ঞানীগণ একটি নিউক্লিয়াসকে অন্য নিউক্লিয়াস বা মৌলিক কণা দ্বারা আঘাত অন্য ধরনের নিউক্লিয়াস তৈরি করেন। এই ধরনের বিক্রিয়াকে নিউক্লিয় বিক্রিয়া বলা হয়।

সুতরাং বলা যায় যে, কোন উচ্চ গতিসম্পন্ন কণা বা ক্ষুদ্র নিউক্লিয়াস দ্বারা অপর কোন পরমাণুর নিউক্লিয়াসকে আঘাত করলে সংশ্লিষ্ট নিউক্লিয়াসের পরিবর্তনের মাধ্যমে নতুন নিউক্লিয়াস বিশিষ্ট পরমাণুর উদ্ভব ঘটে। এ বিক্রিয়াকে নিউক্লিয় বিক্রিয়া বলে।

 

নিউক্লিয় বিক্রিয়ার প্রয়োগ

নিউক্লিয় বিক্রিয়ার প্রয়োগগুলোকে নিম্নলিখিত পয়েন্ট আকারে আলোচনা করা যায়—

  • নিউক্লিয় বিক্রিয়ার মাধ্যমে নতুন মৌল সৃষ্টি হয়। যেমন : প্রকৃতিতে প্রাপ্ত মৌলসমূহের মধ্যে সর্বোচ্চ পারমাণবিক ভর বিশিষ্ট মৌল হচ্ছে ইউরেনিয়াম। এর পরবর্তী সকল মৌলই নিউক্লিয় বিক্রিয়ার মাধ্যমে সৃষ্টি হয়েছে।
  • নিউক্লিয় বিক্রিয়ার সাহায্যে বিভিন্ন মৌলের বহু তেজষ্ক্রিয় আইসোটোপ তৈরি করা যায়। এসব তেজষ্ক্রিয় আইসোটোপ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সকল শাখায় বিভিন্ন গবেষণায় ব্যবহৃত হয়।
  • নিউক্লিয় বিক্রিয়ার মাধ্যমে প্রচুর শক্তি উৎপাদন করা যায়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পারমাণবিক চুল্লি থেকে যে প্রচুর পরিমাণে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয় তাদের শক্তির উৎস হলো বিশেষ ধরনের নিউক্লিয় বিক্রিয়া।
  • নিউক্লিয় বিক্রিয়া থেকে প্রাপ্ত নিউক্লিয় শক্তি ধ্বংসাত্মক কাজে ব্যবহৃত হয়। হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে নিক্ষিপ্ত এটম বোমাসহ সব ধরনের পারমাণবিক বোমার শক্তির উৎস নিউক্লিয় বিক্রিয়া।

 

নিউক্লিয় বিক্রিয়ার শ্রেণিবিভাগ

বিভিন্ন ধরনের নিউক্লিয় বিক্রিয়া হয়ে থাকে। নিম্নে প্রত্যেক প্রকার নিউক্লিয় বিক্রিয়া আলোচনা করা হলো:

  1. ট্রান্সমুটেশন বিক্রিয়া : কোন মৌলের স্থায়ী নিউক্লিয়াসকে গতিশীল নিউট্রন, প্রোটন বা আলফা কণা দ্বারা আঘাত করলে নতুন মৌলের নিউক্লিয়াসে পরিণত করাকে ট্রান্সম্যুটেশন বিক্রিয়া বলে। এক্ষেত্রে উৎপাদিত নিউক্লিয়াস ও বিক্রিয়ক বা ট্রার্গেট নিউক্লিয়াসের মধ্যে ভর সংখ্যার পার্থক্য ৩ থেকে ৪ এককের বেশি হয় না।
  2. নিউক্লিয় ফিউশন : যে নিউক্লিয় বিক্রিয়ায় ২টি ক্ষুদ্র নিউক্লিয়াস একত্রিত হয়ে অপেক্ষাকৃত বড় নিউক্লিয়াসযুক্ত ভিন্ন মৌল তৈরি করে তাকে নিউক্লিয় ফিউশন বা নিউক্লিয় সংযোজন বিক্রিয়া বলে। এ বিক্রিয়ার অপর নাম থার্মো নিউক্লিয়ার বিক্রিয়া । সূর্য ও অন্যান্য নক্ষত্রের শক্তির উৎস হলো নিউক্লীয় ফিউশান বিক্রিয়া। হাইড্রোজেন বোমার ভিত্তি হলো এ ধরনের নিউক্লীয় ফিউশান বিক্রিয়া।
  3. নিউক্লিয় ফিশন : ফিশন বিক্রিয়ার উপর ভিত্তি করে এটম বোমা তৈরি করা হয়েছে। ফিশন বিক্রিয়ার সাহায্যে পারমাণবিক চুল্লিতে বিদ্যুৎ শক্তি উৎপাদন করা যায়।
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments