HomeBiologyনিষেক কাকে বলে? নিষেক কত প্রকার ও কি কি?

নিষেক কাকে বলে? নিষেক কত প্রকার ও কি কি?

যৌন প্রজননে ডিম্বাণু ও শুক্রাণুর মিলনকে নিষেক (Fertilization) বলে।

নিষেক পদ্ধতিতে দুটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটে। যেমন-

(১) মিলনের ফলে ডিম্বাণু সক্রিয় হয় এবং ভ্রূণ সৃ্ষ্টিতে উদ্বুদ্ধ হয়।

(২) নিউক্লিয়াসের মিলনের ফলে মাতাপিতার জিনগুলি, যেগুলি বংশগতির বৈশিষ্ট্য, সেগুলি ভ্রূণের প্রতিটি কোষে সঞ্চারিত হয়।

এই দ্বিতীয় ঘটনাটিকে অ্যাম্ফিমিক্সি (Amphimixis) বলে।

 

নিষেক দুই প্রকার। যথাঃ- ১. বহিঃনিষেক (External Fertilization) এবং ২. অন্তঃনিষেক (Internal Fertilization)

  • বহিঃনিষেক : যে নিষেক ক্রিয়া প্রাণিদেহের বাইরে সংঘটিত হয় তাকে বহিঃনিষেক বলে। এ ধরনের নিষেক সাধারণত পানিতে বাস করে এমন সব প্রাণীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ। যেমন: বিভিন্ন ধরনের মাছ বা ব্যাঙ। তবে এর ব্যতিক্রম রয়েছে, যেমন: হাঙর এবং কয়েক প্রজাতির মাছ।
  • অন্তঃনিষেক : যে নিষেক ক্রিয়া স্ত্রী দেহের জননাঙ্গে সংঘটিত হয় তাকে অন্তঃনিষেক বলে। সাধারণত সঙ্গমের মাধ্যমের পুরুষ প্রাণী তার শুক্রাণু স্ত্রী জননাঙ্গে প্রবেশ করিয়ে এ ধরনের নিষেক ঘটায়। অন্তঃনিষেক ডাঙ্গায় বসবাসকারী অধিকাংশ প্রাণীর অন্যতম বৈশিষ্ট্য।

 

নিষেক এর প্রয়োজন হয় কেন?

নিষেক হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ জৈবিক প্রক্রিয়া। নিষেক ক্রিয়ার ফলে নতুন প্রজন্মের সৃষ্টি হয়। নিষেক না ঘটলে নতুন প্রজন্ম সৃষ্টি হবে না। ফলে প্রকৃতি থেকে জীবকূল এক সময় ধ্বংস হয়ে যাবে। তাই জীবের বংশধর টিকে রাখার জন্য নিষেকের প্রয়োজন হয়।

 

নিষেকের তাৎপর্য

ক্রোমোজোমের ভারসাম্য রক্ষায়ঃ নিষেক প্রক্রিয়ায় ডিম্বাণু ও পুংগ্যামেটের মিলনের ফলে জাইগোট উৎপন্ন হয়। এ প্রক্রিয়ায় দু’প্রস্থ হ্যাপ্লয়েড (n) ক্রোমোজোম মিলিত হয়ে ডিপ্লয়েড (2n) অবস্থায় ফিরে আসে। ফলে প্রজাতির ক্রোমোজোম সংখ্যার স্থিরতা রক্ষিত হয়।

  • ফল ও বীজ সৃষ্টিঃ নিষেকের উদ্দীপনায় ডিম্বাশয় ও ডিম্বক যথাক্রমে ফল ও বীজে পরিণত হয়।
  • নতুন প্রজাতি সৃষ্টিঃ নিষেকের ফলে বংশধরদের মধ্যে নতুন বৈশিষ্ট্যের সঞ্চার হয়। ফলে নতুন প্রজাতি সৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে।
  • বিবর্তনেঃ নিষেকের পরে সৃষ্ট প্রকরণ বিবর্তনের পথ নির্দেশ করে।
  • অধিক ফলনশীল ও সহনশীল ফসল সৃষ্টিঃ নিষেকের ফলে অধিক ফলনশীল, সবল ও সহনশীল ফসল উৎপন্ন হয়।
  • উদ্ভিদের বংশ রক্ষাঃ নিষেক ক্রিয়ার ফলেই বীজ ও ফলের সৃষ্টি হয়। বীজ উদ্ভিদের বংশ রক্ষা করে থাকে। বীজের সৃষ্টি না হলে বেশির ভাগ সপুষ্পক উদ্ভিদই হয়ত বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকত।
  • খাদ্যের যোগানঃ উদ্ভিদের ফল ও বীজের উপরই প্রাণী সম্প্রদায় বিশেষ করে মানুষ নির্ভরশীল। কাজেই নিষেকক্রিয়া যত না গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভিদ সম্প্রদায়ের জন্য তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ মানব জাতির জন্য। আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, বেল, পেঁপে, ধান, গম, যব, ভুট্টা, প্রভৃতি যা খেয়ে থাকি তা সবই নিষেকক্রিয়ার ফলে উৎপন্ন হয়। ডাল, তেল, সব্জি, ফল, তন্তু, পানীয়, মসলা, ভেষজ জাতীয় সকল উদ্ভিদই আমরা নিষেকক্রিয়ার মাধ্যমে পেয়ে থাকি।

 

Tags :

নিষেক কাকে বলে?;

নিষেক কত প্রকার ও কি কি?;

বহিঃনিষেক কাকে বলে?;

অন্তঃনিষেক কাকে বলে?;

নিষেক এর প্রয়োজন হয় কেন?

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments