HomePhysicsব্যতিচার কাকে বলে? ব্যতিচার কত প্রকার? ব্যতিচারের শর্ত কি কি?

ব্যতিচার কাকে বলে? ব্যতিচার কত প্রকার? ব্যতিচারের শর্ত কি কি?

দুটি সুসঙ্গত উৎস থেকে নিঃসৃত দুটি আলোক তরঙ্গের উপরিপাতনের ফলে কোনো বিন্দুর আলোক তীব্রতা বৃদ্ধি পায় আবার কোনো বিন্দুর তীব্রতা হ্রাস পায়। এর ফলে কোনো তলে পর্যায়ক্রমে আলোকোজ্জ্বল ও অন্ধকার অবস্থার সৃষ্টি হয়। কোনো স্থানে বিন্দু থেকে বিন্দুতে আলোর তীব্রতার এই পর্যায়ক্রমিক তারতম্যকে আলোর ব্যতিচার বলে। ১৮০১ খ্রিস্টাব্দে টমাস ইয়ং (Thomas Young) আলোকের ব্যতিচার আবিষ্কার করেন।

ব্যতিচার ঝালর : সমান কম্পাঙ্ক ও বিস্তারের দুটি আলোক তরঙ্গের উপরিপাতনের ফলে ব্যতিচার সৃষ্টি হয়। ফলে কোনো তলে বা পর্দায় অনেকগুলো পরস্পর সমান্তরাল উজ্জ্বল ও অন্ধকার রেখা পাওয়া যায়। এই উজ্জ্বল ও অন্ধকার রেখা বা ডোরাগুলোকে আলোকের ব্যতিচার ঝালর বলে।

 

ব্যতিচার কত প্রকার?

ব্যতিচার দুই ধরনের : (১) গঠনমূলক ব্যতিচার ও (২) ধ্বংসাত্মক ব্যতিচার।

  • গঠনমূলক ব্যতিচার (Constructive interference) : দুটি উৎস হতে সমান কম্পাঙ্ক ও বিস্তারের দুটি আলোক তরঙ্গের উপরিপাতনের ফলে উজ্জ্বল বিন্দু পাওয়া গেলে তাকে গঠনমূলক ব্যতিচার বলে।
  • ধ্বংসাত্মক ব্যতিচার (Destructive interference) : দুটি উৎস হতে সমান কম্পাঙ্ক ও বিস্তারের দুটি আলোক তরঙ্গের উপরিপাতনের ফলে অন্ধকার বিন্দু পাওয়া গেলে তাকে ধ্বংসাত্মক ব্যতিচার বলে।

 

ব্যতিচারের শর্ত

ব্যতিচারের শর্তগুলো নিচে তুলে ধরা হলো–

  • আলোর উৎস দু’টি সুসঙ্গত হতে হবে।
  • যে দুটি তরঙ্গের ব্যতিচার ঘটবে তাদের বিস্তার সমান বা প্রায় সমান হতে হবে।
  • উৎসগুলো খুব কাছাকাছি অবস্থিত হতে হবে।
  • উৎসগুলো খুব সূক্ষ্ম হতে হবে।
  • চিড়ের ব্যাস ব্যবহৃত আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য অপেক্ষা কম হতে হবে।

 

আলোকের ব্যতিচারের বৈশিষ্ট্য :

১। দুটি সুসঙ্গত উৎস হতে একই মাধ্যমের কোনো বিন্দুতে আলোক তরঙ্গমালার উপরিপাতনের ফলে ব্যতিচার সৃষ্টি হয়।

২। ব্যতিচার ঝালরে সাধারণত পট্টিগুলোর বেধ সমান হয়। আবার কখনও অসমানও হয়।

৩। ব্যতিচারে উজ্জ্বল পট্টি ও অন্ধকার পট্টিগুলোর অন্তর্বর্তী দূরত্বগুলো সমান থাকে।

৪। ব্যতিচারে অন্ধকার পট্টিতে কোনো আলো থাকে না। এরা সম্পূর্ণ অন্ধকার থাকে।

৫। ব্যতিচারে সব উজ্জ্বল পট্টিগুলোর আলোক প্রাবল্য সমান থাকে।

 

আলোর ব্যতিচারে সুসংগত আলােক উৎস ব্যবহার করা হয় কেন?

ব্যতিচারের জন্য প্রয়োজনীয় আলোক তরঙ্গগুলোর একই তরঙ্গদৈর্ঘ্য থাকতে হবে এবং আলােক তরঙ্গদ্বয় একই দশায় বা নির্দিষ্ট দশা-পার্থক্যে নিঃসৃত হতে হবে। উপরন্তু এ দশা পার্থক্য সব সময়ের জন্য বজায় থাকতে হবে। এ সকল বৈশিষ্ট্য কেবল সুসংগত আলােক উৎসে রয়েছে বিধায় আলোর ব্যতিচারে সুসংগত আলোক উৎস ব্যবহার করা হয়।

 

ব্যতিচার ও অপবর্তনের পার্থক্য কি?

ব্যতিচার ও অপবর্তনের পার্থক্য নিম্নরূপঃ–

ব্যতিচার

i.  দুটি সুসঙ্গত উৎস হতে একই মাধ্যমের কোনো বিন্দুতে আলোক তরঙ্গের উপরিপাতনের ফলে ব্যতিচার সৃষ্টি হয়।

ii.  ব্যতিচারে উজ্জ্বল ও অন্ধকার পট্টিগুলোর অন্তর্বর্তী দূরত্বগুলো সমান থাকে।

iii.  ব্যতিচারের ক্ষেত্রে অন্ধকার পট্টিতে কোনো আলো থাকে না।

অপবর্তন

i.  একটি তরঙ্গ মুখের বিভিন্ন অংশ হতে নির্গত গৌণ তরঙ্গসমূহের ব্যতিচারের ফলে অপবর্তন সৃষ্টি হয়।

ii.  অপবর্তনের ক্ষেত্রে উজ্জ্বল ও অন্ধকার পট্টিগুলোর অন্তর্বর্তী দূরত্বগুলো ক্রমাগত কমতে থাকে।

iii.  অপবর্তনের ক্ষেত্রে অন্ধকার পট্টিগুলোতেও কিছু আলো থাকে।

 

এ সম্পর্কিত আরও কিছু প্রশ্নঃ–

  • ব্যতিচার অর্থ কি?
  • আলোর ব্যতিচার কাকে বলে?
  • ব্যতিচার কত ধরনের?
  • ব্যতিচারের শর্ত কি কি?
  • গঠনমূলক ব্যতিচার কাকে বলে?
  • গঠনমূলক ব্যতিচার এর সূত্র কি?
  • ধ্বংসাত্মক ব্যতিচার কাকে বলে?
  • ধ্বংসাত্মক ব্যতিচার এর শর্ত কি?
  • আলোর অপবর্তন ও ব্যতিচার এক নয়- ব্যাখ্যা করো।
  • ব্যতিচার এক ধরনের সমবর্তন- ব্যাখ্যা কর।
  • ব্যতিচার ও অপবর্তনের পার্থক্য কি?
  • স্থায়ী ব্যতিচারের শর্ত কি?
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments