কম্পিউটারের প্রধান বৈশিষ্ট্য কয়টি ও কি কি?

 

কম্পিউটারের প্রধান বৈশিষ্ট্য ১০ টি। এগুলো নিচে তুলে ধরা হলো–

১. দ্রুতগতি (High Speed) : কম্পিউটারের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটি অবিশ্বাস্যভাবে দ্রুতগতিতে কাজ করে। এর দ্রুত গতির কারণ এটি বৈদ্যুতিক সংকেতের মাধ্যমে কাজ করে, যার গতি আলোর গতির চাইতে কিছুটা কম। কম্পিউটারের কাজের গতিকে মিলিসেকেন্ড, মাইক্রোসেকেন্ড, ন্যানোসেকেন্ড, পিকোসেকেন্ড ইত্যাদি এককে প্রকাশ করা হয়। একটি শক্তশালী কম্পিউটার প্রতি সেকেন্ডে ৩০ লাখ থেকে ৪০ লাখ বা তার চেয়েও বেশি গাণিতিক কাজ করতে সক্ষম।

২. নির্ভুলতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা Correctness & Reliability) : কম্পিউটারের প্রক্রিয়াকরণ অংশ অসংখ্য সূক্ষ্ম বৈদ্যুতিক বর্তনীর নিয়ে গঠিত। এজন্য কম্পিউটারকে যদি নির্ভুল উপাত্ত ইনপুট ও সঠিক প্রোগ্রাম দেওয়া হয় তবে এটি যেকোনো কাজ নির্ভুলভাবে সম্পন্ন করতে পারে। আর প্রোগ্রামার যদি ভুল ডাটা কিংবা ইনস্ট্রাকশন ইনপুট দেয় কম্পিউটারও তখন ভুল ইনফরমেশন দিয়ে থাকে, যাকে গার্বেজ ইন গার্বেজ আউট (Garbage in Garbage out) বলে। তবে আধুনিক কম্পিউটার প্রমাণ করেছে যে মানুষ ভুল করে কিন্তু কম্পিউটার ভুল করে না।

৩. স্মৃতি (Memory) : কম্পিউটারের রয়েছে বিশাল মেমোরি। কোটি কোটি ডেটা ও নির্দেশ তাতে সেভ করে রাখা যায়। নির্দেশ পাওয়া মাত্র কম্পিউটার তার মেমোরি থেকে রাখা ডেটা দ্রুত ও নির্ভুলভাবে ব্যবহারকারীকে প্রদান করতে পারে। বিশাল আকারের ফাইল কম্পিউটার তার মেমোরিতে অক্ষতভাবে রাখতে পারে যুগ যুগ ধরে।

৪. যুক্তিসংগত সিদ্ধান্ত (Logical Decision) : কম্পিউটার বিভিন্ন গাণিতিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পাশাপাশি লজিক্যাল প্রক্রিয়াও সম্পন্ন করতে পারে। এটির নিজস্ব বিচার-বিবেচনার ক্ষমতা নেই। প্রোগ্রামে প্রদান করা যুক্তি অনুযায়ী এটি সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম।

৫. বহুমুখিতা (Versatility) : একজন মানুষ কোনো একটি বিশেষ কাজের জন্য পারদর্শী হতে পারে। আবার বিভিন্ন যন্ত্রও এক একটি বিশেষ কাজ করার জন্য তৈরি করা হয়ে থাকে। কিন্তু কম্পিউটার এমন একটি যন্ত্র যার সাহায্যে সাধারণ হিসাব-নিকাশ থেকে শুরু করে জটিল বৈজ্ঞানিক সমস্যার সমাধান, ডাটা আদান-প্রদান, ডাটা সংরক্ষণ, ডাটা খুঁজে পাওয়া, শিক্ষা, বিনোদন, টেলিযোগাযোগ ইত্যাদি বহুবিধ কাজ খুব সহজেই সূক্ষ্ম ও দক্ষভাবে সুসম্পন্ন করা যায়।

৬. স্বয়ংক্রিয়তা (Automation) : কম্পিউটার স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করতে পারে। কম্পিউটারকে কোনো কাজের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য ও নির্দেশনা দান করলে কম্পিউটার নিজে থেকেই সম্পূর্ণ কাজটি সমাধা করতে পারে।

৭. ক্লান্তিহীনতা (Diligence) : মানুষ অনেক সময় ধরে কাজ করতে পারে না। বেশ কিছুক্ষণ কাজ করার পর মানুষ ক্লান্ত হয়, বিশ্রাম নিয়ে থাকে। অন্যদিকে কম্পিউটারের একটি স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ক্লান্তিহীনতা। কম্পিউটার ঘণ্টার পর ঘন্টা ক্লান্তিহীন এবং বিশ্রামহীনভাবে কাজ করতে পারে।

৮. তথ্য প্রক্রিয়াকরণ ক্ষমতা (Data Processing Power) : কম্পিউটারকে ইনপুট আকারে তথ্য প্রদান করতে হয়। কাম্পউটার তার ব্যবহারকারীর দেওয়া উপাত্ত প্রক্রিয়াকরণের কাজ সম্পন্ন করার পর তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি ফলাফল বা আউটপুট প্রদান করে থাকে। হিসাব-নিকাশ, লেখালেখি, তথ্য সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি যত প্রকার কাজ মানুষের প্রয়োজন হয়, কম্পিউটার সব রকমের কাজই করতে পারে।

৯. সূক্ষ্মতা (Sharpness) : মানুষ সবসময় সূক্ষ্মভাবে হিসাব-নিকাশ করতে পারে না। কম্পিউটার সূক্ষ্মভাবে হিসাব-নিকাশ করতে পারে। যার ফলে গাণিতিক সমস্যার উত্তর দশমিকের পর অধিক সংখ্যা পর্যন্ত দিতে সক্ষম।

১০. ভুল শনাক্তকরণ ও সংশোধন (Error Testing and Debugging) : কোনো প্রোগ্রামকে কম্পিউটারে টাইপ করার পর প্রোগ্রাম চালিয়ে পরীক্ষা এবং পরবর্তীতে ভুলসমূহ নির্ধারণ করে সংশোধন করা সম্ভব। মানুষ ভুল শনাক্ত করতে পারে কিন্তু সাথে সাথে তা সংশোধন করা প্রায়ই অসম্ভব হয়ে পড়ে।

 

Tags :

  • কম্পিউটার চালু হওয়ার সময় কোনটি প্রথমে ব্যবহৃত হয়
  • এনালগ ও ডিজিটাল কম্পিউটারের মধ্যে পার্থক্য
  • কম্পিউটারের মূল অংশ কয়টি
  • কম্পিউটার কি কি কাজে ব্যবহার হয়
  • ন্যানো কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য
  • কম্পিউটারের ইতিহাস
  • কম্পিউটারের কাজ কি
  • আধুনিক কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য
  • কম্পিউটারের তিনটি বৈশিষ্ট্য
  • কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য
  • কম্পিউটারের প্রধান কাজ কি
  • কম্পিউটারের প্রজন্ম কয়টি
  • কম্পিউটারের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখ
  • ডিজিটাল কম্পিউটার এর বৈশিষ্ট্য
  • কম্পিউটার এর প্রধান বৈশিষ্ট্য কি কি?
  • কম্পিউটার কি কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য ও ব্যবহার লিখ?
  • কম্পিউটার রম কি?
  • কম্পিউটারের জনক কে?
  • হাওয়ার্ড এইকিন কত সালে কম্পিউটার আবিষ্কার করেন?
  • বিশ্বের প্রথম কম্পিউটারের নাম কি এবং কম্পিউটার কত প্রকার?

Leave a Comment