স্থিতিস্থাপকতা কাকে বলে?

আমরা এটি দেখে অভ্যস্ত যে, একটি রবারের দড়ি টানলে সেটির দৈর্ঘ্য বেড়ে যায়। আবার রবারের দড়ির ক্ষেত্রে যে পরিমাণ বল প্রয়ােগ করতে হয় তার চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণ বলের প্রয়ােজন হয় একই দৈর্ঘ্যের ও প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল বিশিষ্ট একটি ইস্পাতের তারকে একই পরিমাণ বাড়াতে।

উপরের চিত্র অনুযায়ী ধরা যাক, বাইরে থেকে কোনাে বস্তুর উপর সমান ও বিপরীতমুখী বল প্রয়ােগ করা হয়েছে। এর ফলে শুধুমাত্র বস্তুটির বিভিন্ন বিন্দুর মধ্যে আপেক্ষিক সরণ হয়। যেমনঃ A ও B বিন্দু দুটি মধ্যে দূরত্ব বল প্রয়ােগের পরে বেড়ে গিয়েছে, অর্থাৎ A এর সাপেক্ষে B এর আপেক্ষিক সরণ ঘটেছে। এই কারণে বস্তুর আকার বা আয়তন বা উভয়েরই পরিবর্তন ঘটে। এ অবস্থায় বস্তুর ভিতরে একটি প্রতিক্রিয়া বলের সৃষ্টি হয় যা এই পরিবর্তনকে বাধা দিতে চেষ্টা করে। এই পরিবর্তনের পরিমাণ যদি একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে থাকে তবে প্রযুক্ত বল অপসারিত হওয়ার পরে বস্তুটি আগের অবস্থায় ফিরে আসে। পরিবর্তনের প্রচেষ্টাকে বাধা দেওয়ার এই প্রবণতা কম বেশি সকল পদার্থের মধ্যেই আছে। পদার্থের এই সাধারণ ধর্মকে স্থিতিস্থাপকতা (elasticity) বা স্থিতিস্থাপক ধর্ম বলা হয়। সুতরাং, বাহ্যিক বল প্রয়ােগ করে কোনাে বস্তুর আকার বা আয়তন বা উভয়েরই পরিবর্তনের চেষ্টা করলে, যে ধর্মের ফলে বস্তুটি এই পরিবর্তনের প্রচেষ্টাকে বাধা দেয় এবং বাহ্যিক বল অপসারিত হলে বস্তু তার আগের আকার ও আয়তন ফিরে পায়, সেই ধর্মকে স্থিতিস্থাপকতা বলে। কঠিন, তরল, গ্যাসীয় সব পদার্থের মধ্যেই এই ধর্ম কম বেশী আছে।

 

 

এ সম্পর্কিত আরও প্রশ্ন ও উত্তরঃ–

 

১। পানির ক্ষণস্থায়ী স্থিতিস্থাপকতা আছে– ব্যাখ্যা কর।

 

উত্তর : হাতের আঙ্গুলগুলো প্রসারিত অবস্থায় পানির উপরিতলে জোরে আঘাত করলে হাতে ব্যথা পাওয়া যায়। অর্থাৎ হাতের ওপর পানি বল প্রয়োগ করে। এ বল প্রকৃতপক্ষে পানির স্থিতিস্থাপকতার দরুন উদ্ভূত হয়। হাতের দ্বারা আকস্মিক আঘাতের মাধ্যমে পানির স্তরকে যখন নিচে নামানোর জন্য বল প্রয়োগ করা হয়, তখন উপরের স্তরটি নিচে চলে যাওয়ার চেষ্টা করলেও নিচের স্তরগুলি স্থির তড়িৎ বিকর্ষণজনিত বাধা বল প্রয়োগ করে যা শেষ পর্যন্ত হাতে অনুভূত হয়। অবশ্য হাতের তালু দ্বারা প্রযুক্ত বল তুলনামূলকভাবে অনেক বৃহত্তর মানের হওয়ায় হাত নিমিষেই পানির মধ্যে প্রবেশ করে। সুতরাং পানির ক্ষণস্থায়ী স্থিতিস্থাপকতা আছে।

 

 

আরো পড়ুনঃ-

 

১। স্থিতিস্থাপক বস্তু কাকে বলে?

 

২। স্থিতিস্থাপক অবসাদ বা স্থিতিস্থাপক ক্লান্তি কাকে বলে?

 

৩। স্বাভাবিক বা মুক্ত কম্পন কাকে বলে?

 

৪। পয়সনের অনুপাত কাকে বলে? পয়সনের অনুপাতের মাত্রা ও একক নেই কেন?

 

৫। পীড়ন কাকে বলে?

 

৬। হুকের সূত্র (Hooke’s law)

 

৭। স্প্রিং ধ্রুবক কাকে বলে?

 

 

Leave a Comment