অস্থিসন্ধি কাকে বলে? অস্থিসন্ধি কত ধরনের হয়?

আমাদের দেহ যেসব অস্থি নিয়ে গঠিত সেগুলো পরস্পরের সাথে যোজক কলা দিয়ে এমনভাবে সংযুক্ত থাকে যাতে অস্থিগুলো বিভিন্ন মাত্রায় সঞ্চালিত হতে পারে। দুই বা ততোধিক অস্থির এসব সংযোগস্থলকে অস্থিসন্ধি বলে।

 

অস্থিসন্ধির কত ধরনের হয়?

অস্থিসন্ধি সাধারণত তিন ধরনের হয়। যেমন–

  • নিশ্চল অস্থিসন্ধি : নিশ্চল অস্থিসন্ধিগুলো অনড় অর্থাৎ নড়ানো যায় না, যেমন করোটিকা অস্থিসন্ধি।
  • ঈষৎ সচল অস্থিসন্ধি : এসব অস্থিসন্ধি একে অন্যের সাথে সংযুক্ত থাকলেও সামান্য নড়াচড়া করতে পারে। ফলে আমরা দেহকে সামনে, পিছনে ও পাশে বাঁকাতে পারি। যেমন- মেরুদন্ডের অস্থিসন্ধি।
  • পূর্ণ সচল অস্থিসন্ধি : এ সকল অস্থিসন্ধি সহজে নড়াচড়া করানো যায়। এ জাতীয় অস্থিসন্ধির মধ্যে বল ও কোটরসন্ধি, কবজাসন্ধি প্রধান।

 

সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধি

সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধিকে সচল অস্থিসন্ধিও বলা হয়, এ ধরনের অস্থিসন্ধিতে অস্থি, তরুণাস্থি, সাইনোভিয়াল ফ্লুইড বা রস, লিগামেন্ট বা অস্থিবন্ধনী থাকে। যখন দুটি অস্থি একসঙ্গে মিলিত হয়ে একটি অস্থিসন্ধি গঠন করে, তখন তাকে সরল সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধি বলে। দুইয়ের বেশি অস্থি মিলে অস্থিসন্ধি তৈরি হলে তাকে জটিল সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধি বলে। অস্থিসন্ধি গঠনের সময় অস্থির বহির্ভাগে তরুণাস্থি থাকে, ফলে অস্থি ঘর্ষণ থেকে রক্ষা পায় এবং ক্ষয় হয় না। আর লিগামেন্ট দ্বারা অস্থিগুলো বন্ধনীর মতো আবদ্ধ অবস্থায় থাকে। অস্থির আবরণকে পেরি অস্টিয়াম বলে। আমাদের হাঁটুর জয়েন্ট, কনুইয়ের সন্ধি, স্কন্ধ সন্ধি প্রভৃতি সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধির উদাহরণ।

সাইনোভিয়াল রস : সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধিস্থলে এক প্রকার তৈলাক্ত পদার্থ থাকে যাকে সাইনোভিয়াল রস বলে। এর উপস্থিতির কারণে অস্থিতে অস্থিতে ঘর্ষণ কমে যায়। ফলে ঘর্ষণজনিত অস্থির ক্ষয় হ্রাস পায় এবং অস্থির নড়াচড়ায় কম শক্তির প্রয়োজন হয়।

সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধির বৈশিষ্ট্য : অস্থিসন্ধিকে দৃঢ়ভাবে আটকে রাখার জন্য অস্থিবন্ধনী বা লিগামেন্ট বেষ্টিত একটি মজবুত আবরণী বা ক্যাপসুল থাকে। অস্থিসন্ধিতে সাইনোভিয়াল রস ও তরুণাস্থি থাকাতে অস্থিতে অস্থিতে ঘর্ষণ ও তজ্জনীত ক্ষয় হ্রাস পায় ও অস্থিসন্ধির নড়াচড়া করাতে কম শক্তি ব্যয় হয়।

Leave a Comment