মিশ্রণ কাকে বলে? মিশ্রণ কত প্রকার ও কি কি?

মিশ্রণ বলতে বোঝায় দুটি বা ততোধিক পৃথক পদার্থের একত্রিত বস্তুকে। এই পদার্থগুলোকে উপাদান বলে। মিশ্রণে উপাদানগুলো তাদের আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য ধরে রাখে। এখন চলুন জেনে আসি মিশ্রণ কাকে বলে এবং মিশ্রণের উদাহরণ সম্পর্কে।

মিশ্রণ কাকে বলে? (What is called Mixture in Bengali/Bangla?)

দুই বা তার অধিক পদার্থকে যে কোনো অনুপাতে একত্রে মিশালে যদি তারা নিজ নিজ ধর্ম বজায় রেখে পাশাপাশি অবস্থান করে, তবে সেই সমাবেশকে মিশ্রণ (Mixture) বলে।

 

মিশ্রণের প্রকারভেদ

মিশ্রণ দুই প্রকার হতে পারে। যেমন- অসমসত্ব মিশ্রণ ও সমসত্ত্ব মিশ্রণ।

  • সমসত্ব মিশ্রণ: যে মিশ্রণে উপাদানগুলো সমানভাবে মিশে থাকে তাকে সমসত্ব মিশ্রণ বলে। যেমন: পানিতে লবণ মিশিয়ে তৈরি লবণ জল, বাতাস।
  • অসমসত্ব মিশ্রণ: যে মিশ্রণে উপাদানগুলো সমানভাবে মিশে থাকে না তাকে অসমসত্ব মিশ্রণ বলে। যেমন: পানিতে বালি মিশিয়ে তৈরি বালির মিশ্রণ, তেল-জল মিশ্রণ।

 

মিশ্রণের বৈশিষ্ট্য

  • মিশ্রণে উপাদানগুলোর রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য অপরিবর্তিত থাকে।
  • মিশ্রণের উপাদানগুলোকে শারীরিক পদ্ধতিতে আলাদা করা যায়।
  • মিশ্রণের ঘনত্ব, গলনাঙ্ক, স্ফটিকবিন্দু ইত্যাদি বৈশিষ্ট্য উপাদানগুলোর উপর নির্ভর করে।

 

মিশ্রণের উদাহরণ

  • সমসত্ব মিশ্রণ: লবণ জল, বাতাস, পানিতে চিনি মিশিয়ে তৈরি চিনি জল, ইস্পাত (লোহা ও কার্বন)।
  • অসমসত্ব মিশ্রণ: বালির মিশ্রণ, তেল-জল মিশ্রণ, ঝোল, স্যুপ।

বায়ুমণ্ডলের বায়ু একটি মিশ্রণে উদাহরণ। বায়ু একটি সমসত্ব মিশ্রণ যাতে বিভিন্ন বায়বীয় পদার্থ যেমন নাইট্রোজেন, অক্সিজেন ও অন্যান্য কিছু পদার্থ খুব স্বল্প পরিমাণে মিশ্রিত থাকে। লবণ, চিনি ও আরও অনেক পদার্থে পানিতে দ্রবীভূত হয়ে সমসত্ব মিশ্রণ তৈরি করতে পারে।

 

মিশ্রণ থেকে উপাদান আলাদা করার পদ্ধতি

  • চালন: ছাকনির মাধ্যমে মিশ্রণ থেকে উপাদানগুলোকে আলাদা করা।
  • স্যাঁতসেঁতেকরণ: মিশ্রণটিকে গরম করে তরল উপাদানটি বাষ্পীভূত করে উপাদানগুলোকে আলাদা করা।
  • বাষ্পীভবন: মিশ্রণটিকে গরম করে তরল উপাদানটি বাষ্পীভূত করে উপাদানগুলোকে আলাদা করা।
  • পাতন: মিশ্রণটিকে স্থির রেখে উপাদানগুলোকে ঘনত্বের ভিত্তিতে আলাদা করা।

 

মিশ্রণ ও যৌগের মধ্যে পার্থক্য কি?

মিশ্রণ

  • দুই বা ততোধিক পদার্থকে যে কোন অনুপাতে মিশালে যদি তারা নিজ নিজ ধর্ম বজায় রেখে পাশাপাশি অবস্থান করে, তবে উক্ত সমাবেশকে মিশ্রণ বলে।
  • মিশ্রণের উপাদান পদার্থগুলিকে ভৌত পদ্ধতি যেমন ছাঁকন, হিমায়ন, পরিস্রবণ, ইত্যাদি পদ্ধতি ব্যবহার করে আলাদা সহজেই আলাদা করা যায়।
  • মিশ্রণে পদার্থ সমূহের নিজ নিজ ধর্ম অক্ষুন্ন থাকে।
  • মিশ্রণ সাধারণত দুই প্রকারের যথা- সমসত্ত্ব ও অসমসত্ত্ব মিশ্রণ।
  • পানিতে চিনির দ্রবণ বা শরবত একটি মিশ্রণের উদাহরণ।

যৌগ

  • যে বস্তুকে রাসায়নিকভাবে বিশ্লেষণ করলে দুই বা ততোধিক মৌলিক পদার্থ পাওয়া যায় তাকে যৌগ বা যৌগিক পদার্থ বলে।
  • যৌগ গঠিত হওয়ার পর উপাদান পদার্থগুলিকে সহজে আলাদা করা যায় না।
  • যৌগে মৌলসমূহের নিজ নিজ ধর্ম লোপ পেয়ে সম্পূর্ণ নতুন ধর্ম বিশিষ্ট পদার্থের সৃষ্টি হয়।
  • যৌগের কোন সুনির্দিষ্ট প্রকারভেদ নেই।
  • “পানি ” একটি যৌগের উদাহরণ যা হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন সমন্বয়ে গঠিত।

এই পোস্টে মিশ্রণের সংজ্ঞা, প্রকারভেদ, বৈশিষ্ট্য, উদাহরণ এবং উপাদান আলাদা করার পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

 

এ সম্পর্কিত আরও প্রশ্ন ও উত্তরঃ–

১। ফলের জুস কী ধরনের মিশ্রণ?

উত্তর : ফলের জুস এক ধরনের সমসত্ত্ব মিশ্রণ।

 

Keywords :

  • মিশ্রণ বলতে কী বোঝায়?
  • মিশ্রণ কয় প্রকার ও কি কি?
  • সমসত্ত্ব মিশ্রণ কাকে বলে?
  • অসমসত্ত্ব মিশ্রণ কাকে বলে?
  • হিম মিশ্রণ কাকে বলে?
  • সমসত্ত্ব ও অসমসত্ত্ব মিশ্রণ কি?
  • সমসত্ব বলতে কী বোঝায়?
  • সমসত্ত্ব ও অসমসত্ত্ব মিশ্রণ কাকে বলে?
  • দ্রবণ ও মিশ্রণ এর পার্থক্য কি?
  • সমসত্ত্ব মিশ্রণ উদাহরণ;

 

মিশ্রণ সম্পর্কে আরও তথ্য:

Leave a Comment