যোজনী কাকে বলে? যোজনীর উদাহরণ

যৌগ গঠনের সময় কোনো মৌলের অন্য মৌলের সাথে যুক্ত হওয়ার ক্ষমতাকে তার যোজনী (Valence) বলে।

অন্যভাবে বলা যায়, কোন মৌলের একটি পরমাণু হাইড্রোজেন অথবা সমতুল্য অন্য মৌলের যত সংখ্যক পরমাণুর সাথে সংযুক্ত হয় অথবা কোন যৌগ হতে হাইড্রোজেনের যত সংখ্যক পরমাণু প্রতিস্থাপিত করতে পারে সেই সংখ্যাকে সেই মৌলের যোজনী বলে।

উদাহরণঃ পরমাণুর যোজনী সংখ্যা এক হলে একযোজী, দুই হলে দুইযোজী, তিন হলে তিনযোজী মৌল বলে।

একযোজী মৌল, যেমন: হাইড্রোজেন, ক্লোরিন ও সোডিয়াম।

দুইযোজী মৌল, যেমন : অক্সিজেন, সালফার ও ক্যালসিয়াম।

 

যোজনী সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তর

১। ক্লোরিনের যোজনী ও যোজ্যতা ইলেকট্রন ভিন্ন কেন?

উত্তরঃ ক্লোরিন (Cl)-এর ইলেকট্রন বিন্যাস থেকে দেখা যায় যে এর বহিঃস্থ কক্ষপথে 7টি ইলেকট্রন রয়েছে। তাই Cl এর যোজ্যতা ইলেকট্রন 7।

আবার Cl মৌলটি যৌগ গঠনের সময় 1টি ইলেকট্রন গ্রহণ করে তাই এর যোজনী 1। সুতরাং Cl এর যোজনী ও যোজ্যতা ইলেকট্রন ভিন্ন।

 

২। গ্রুপ-1 এর মৌলসমূহ একযোজী কেন?

উত্তরঃ কোনো মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাসে সর্বশেষ কক্ষপথে যত সংখ্যক ইলেকট্রন থাকে অথবা যত সংখ্যক বেজোড় ইলেকট্রন থাকে তাকে ঐ মৌলের যোজনী বলে।

গ্রুপ-1 এর ধাতুগুলোর সর্ববহিঃস্থ স্তরে 1টি করে ইলেকট্রন বিদ্যমান। ফলে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় এরা 1টি ইলেকট্রন দান করে নিস্ক্রিয় গ্যাসের ইলেকট্রন বিন্যাস লাভ করে এবং স্থিতিশীলতা অর্জন করে। তাই গ্রুপ-1 এর মৌলসমূহ একযোজী।

 

৩। যোজনী ও জারণ সংখ্যা এক নয় কেন?

উত্তরঃ আমরা জানি, যৌগ গঠনের সময় কোনো মৌলের অন্য মৌলের সাথে যুক্ত হওয়ার ক্ষমতাকে তার যোজনী বলে। অপরদিকে, কোনো মৌলের জারণ সংখ্যা হলো মৌলটির চার্জযুক্ত যোজনী। ভিন্ন ভিন্ন যৌগে একই যোজনী বিশিষ্ট মৌলের জারণ মান ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। যেমন- CH4 এবং CCl4 উভয় যৌগে C এর যোজনী 4 কিন্তু CH4-এ C এর জারণ সংখ্যা –4 ও CCl4 এ +4 । অর্থাৎ, যোজনী ও জারণ সংখ্যা এক নয়।

 

৪। ক্ষারধাতুর যোজনী নির্দিষ্ট কেন?

উত্তরঃ সকল ক্ষারধাতুর ইলেকট্রন বিন্যাসে সর্ববহিঃস্থ স্তরে মাত্র একটি ইলেকট্রন থাকে। এই একটি ইলেকট্রন ত্যাগ করলেই কেবল তাদের পক্ষে নিষ্ক্রিয় গ্যাসের ইলেকট্রন বিন্যাস গঠন করা সম্ভব হয়। অর্থাৎ, একটি ইলেকট্রন ত্যাগ করার কারণে তাদের একটি মাত্রই যোজনী হয়, যে কারণে ক্ষারধাতুগুলোর যোজনী নির্দিষ্ট এবং 1।

Leave a Comment