সুন্দরবন (Sundarban)

বাংলাদেশ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দেশ। এখানে আছে অনেক সুন্দর স্থান, যা পর্যটকদের আকর্ষণ করে। সুন্দরবন তেমনিই একটা স্থান। এটি বাংলাদেশের জাতীয় বন।

 

সুন্দরবনের অবস্থান

বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার অধিকাংশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কিছু অংশজুড়ে এর বিস্তৃতি। এর দক্ষিণে রয়েছে বঙ্গোপসাগর।

 

সুন্দরবনের বৃক্ষ

এ বনের প্রধান বৃক্ষ সুন্দরী। আর এ কারণে এই বনের নাম সুন্দরবন হয়েছে। সুন্দরী ছাড়াও আরও অনেক বৃক্ষ আছে।

 

সুন্দরবনের প্রাণী

সুন্দরবনে নানা প্রজাতির প্রাণী রয়েছে। এগুলোর মধ্যে জলে রয়েছে কুমির, হাঙ্গর প্রভৃতি। স্থলে রয়েছে পৃথিবীর বিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার, হরিণ, বানর, শজারু, শেয়াল ইত্যাদি। এখানকার চিত্রা হরিণ দেখতে খুব সুন্দর।

 

সুন্দরবনের বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী

নানা রকম প্রাণীর জন্য সুন্দরবন বিখ্যাত। তবে একসময় সুন্দরবনের আরও অনেক প্রজাতির প্রাণী ছিল। শিকারিদের অত্যাচার, প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এগুলো আজ প্রায় বিলুপ্ত। বিলুপ্ত প্রাণীর মধ্যে রয়েছে গণ্ডার, বুনোহাতি, চিতাবাঘ ইত্যাদি।

 

উপকারিতা/গুরুত্ব

বাংলাদেশের জন্য সুন্দরবনের গুরুত্ব অনেক। সুন্দরবনের মাটি খুব উর্বর। চাষিরা সেখানে চাষ করে ফসল ফলায়। এ বন থেকে প্রচুর কাঠ, মধু ও মোম পাওয়া যায়। এটি দেশের দক্ষিণ অঞ্চলকে ঝড় ও জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা করে।

 

সুন্দরবন রক্ষা

সুন্দরবনে যেমন প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে, তেমনি সুন্দরবনের গাছ অবাধে মানুষ কেটে নিয়ে যাচ্ছে। বন থেকে অবাধে গাছ কাটলে পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয় নেমে আসবে। এ ব্যাপারে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। সর্বোপরি সুন্দরবনকে রক্ষা করা আমাদের সবার দায়িত্ব।

সুন্দরবন পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন। ইউনেস্কো ১৯৯৭ সালে এই বনকে একটি বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়।

 

এ সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তরঃ–

১। সুন্দরবনের উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য কী কী?

উত্তরঃ সুন্দরবনের উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্যগুলো নিম্নরূপ:–

১। এ বনের উদ্ভিদের কাণ্ড ও পাতা রসালো থাকে।

২। উদ্ভিদের মূল স্তম্ভ মূল বা ঠেসমূল থাকে যা মাটির সামান্য নিচে বিস্তৃত থাকে।

৩। অনেক উদ্ভিদে শ্বাসমূল বা নিউমেটোফোর থাকে।

৪। এসব উদ্ভিদের প্রস্বেদন কম হয় এবং উদ্ভিদে জরায়ুজ অঙ্কুরোদগম হয়।

৫। এদের কোষস্থ প্রোটোপ্লাজম কিছুটা আঠালো এবং এদের অভিস্রবণিক চাপ বেশি থাকে।

৬। উদ্ভিদ অপেক্ষাকৃত খর্বাকার হয় এবং এদের এপিডার্মিস বহুস্তর বিশিষ্ট হয়।

২। সুন্দরবনে কত ভাগ সুন্দরী গাছ রয়েছে?

উত্তরঃ সুন্দরবনে শতকরা ৭০-৭৫ ভাগ সুন্দরী গাছ রয়েছে।

২। সুন্দরবনকে ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট বলে কেন?

উত্তরঃ লবনাক্ত ও কর্দমাক্ত ভেজা মাটির বনকে ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট বলে। এ বন বা ফরেস্ট চিরসবুজ হয় এবং বনের নিম্নাঞ্চল দিনে দুবার জোয়ারের পানিতে সিক্ত হয়। মাটিতে অক্সিজেনের অভাব থাকায় অধিকাংশ বৃক্ষে শ্বাসমূল তৈরি হয়। ম্যানগ্রোভ ফরেস্টের অনেক উদ্ভিদে জরায়ুজ অঙ্কুরোদগম ঘটে। ম্যানগ্রোভ ফরেস্টের উক্ত সকল বৈশিষ্ট্যগুলো সুন্দরবনে দেখা যায় বলে সুন্দরবনকে ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট বলে।

৩। বাংলাদেশ অংশের সুন্দরবনের আয়তন কত?

উত্তরঃ সুন্দরবন বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অবস্থিত, যার মোট আয়তন ১০,০০০ বর্গ কি.মি.। এর মধ্যে বাংলাদেশ অংশের আয়তন ৬০১৭ বর্গ কি.মি. বা ৬২%।

৪। শ্বাসমূল কী?

উত্তরঃ ম্যানগ্রোভ জাতীয় উদ্ভিদ যেমন সুন্দরী, গেঁওয়া, কেওড়া ইত্যাদিতে শ্বাসমূল থাকে। শ্বাসমূল হলো গাছের ছড়ানো মূল তন্ত্রের ঊর্ধ্বমুখী শাখা যা ভূমি/ জলস্তরের উপর জেগে থাকে এবং এর ডগায় নিউমাটাপোর নামে শ্বাস ছিদ্র থাকে।

৫। সুন্দরবন বাংলাদেশের কয়টি জেলায় অবস্থিত?

৬। সুন্দরবনের উত্তরে কোন নদী অবস্থিত?

৭। সুন্দরবনের আয়তন কত?

৮। সুন্দরবন অঞ্চলের সবচেয়ে বড় দ্বীপের নাম কি?

৯। সুন্দরবন অঞ্চলের সবচেয়ে বড় দ্বীপ কোনটি?

১০। সুন্দরবন আমাদের কাছে কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?

১১। সুন্দরবনের আরেক নাম কি?

১২। সুন্দরবন ইউনেস্কো ঘোষিত কততম ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ?

১৩। সুন্দরবন কয়টি জেলা স্পর্শ করেছে?

১৪। সুন্দরবন এ কি কি গাছ দেখা যায়?

১৫। সুন্দরবন কোন ধরনের বন?

১৬। সুন্দরবন কেন বিখ্যাত?

১৭। সুন্দরবন বাংলাদেশের কোন জেলায় অবস্থিত?

১৮। সুন্দরবন কোন বিভাগে অবস্থিত?

Leave a Comment