HomeICTই-কমার্স কি? ই-কমার্সের সুবিধা ও অসুবিধা কি?

ই-কমার্স কি? ই-কমার্সের সুবিধা ও অসুবিধা কি?

ই-কমার্স কি? (What is E-commerce in Bengali/Bangla?)

ই-কমার্স (E-commerce) হলো একটি আধুনিক ব্যবসা পদ্ধতি। এর পূর্ণরূপ হচ্ছে ইলেকট্রনিক কমার্স (Electronic Commerce)। ইন্টারনেট বা অন্য কোনো কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে কোনো পণ্য বা সেবা মার্কেটিং, বিক্রয়, ডেলিভারী, ব্যবসা সংক্রান্ত লেনদেন ইত্যাদি করার কাজটিকেই ই-কমার্স বলে। ইন্টারনেটের ব্যবহার বৃদ্ধির সাথে সাথে এখন ইলেকট্রনিক বাণিজ্যের পরিমাণও বৃদ্ধি পেয়েছে। উন্নত বিশ্বে আজকাল বাণিজ্যের বেশিরভাগই সম্পন্ন হচ্ছে ই-কমার্সের মাধ্যমে। ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার, সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট, ইন্টারনেট মার্কেটিং, অনলাইন ট্রানজেকশন প্রসেসিং, ইলেকট্রনিক ডেটা ইন্টারচেইঞ্জ, ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এবং অটোমেটেড ডেটা কালেকশন সিস্টেমের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে ই-কমার্স। ইন্টারনেটের মাধ্যমেই আজকাল বইপত্র, গৃহে ব্যবহৃত ইলেকট্রনিক পণ্য যেমন- টিভি, ফ্রিজ, ওয়াশিং মেশিন ইত্যাদি, গাড়ি, ইত্যাদিসহ আরও বহুবিধ পণ্য কেনা যাচ্ছে। ঘরে বসেই শুভেচ্ছা কার্ড, প্রিয়জনকে বিভিন্ন ধরনের উপহার পাঠানো যাচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে। বিভিন্ন ধরনের ই-কমার্স সাইটগুলো এই সুবিধা দিচ্ছে। ইলেকট্রনিকভাবে পণ্যের অর্ডার দিলে ক্রেতার কাছ থেকে ক্রেডিট কার্ডে উক্ত পণ্যের টাকা কেটে রাখা হয় এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পণ্যটি ক্রেতার কাছে পৌছে দেওয়া হয়। কেনাবেচা ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের সেবা প্রদানের ক্ষেত্রেও ই-কমার্স গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ভ্রমণ, আইনগত, গবেষণামূলক, শিক্ষামূলক বিভিন্ন সেবা পাওয়া যাচ্ছে অর্থের মাধ্যমে যা হচ্ছে ই-কমার্সকে ব্যবহার করেই।

 

ই-কমার্সের প্রকারভেদ (Types of E-commerce)

পণ্য লেনদেনের প্রকৃতি ও ধরন অনুসারে ই-কমার্সকে সাধারণত চারটি ভাগে ভাগ করা যায়। এগুলো হলোঃ

  1. ব্যবসা থেকে ভোক্তা (Business to Consumer – B2C)
  2. ব্যবসা থেকে ব্যবসা (Business to Business – B2B)
  3. ভােক্তা থেকে ভােক্তা (Consumer to Consumer – C2C)
  4. ভোক্তা থেকে ব্যবসা (Consumer to Business – C2B)

ব্যবসা থেকে ভোক্তা (Business to Consumer – B2C)

একে অনেক সময় বিজনেস-টু-কাস্টোমার নামেও অভিহিত করা হয়ে থাকে। এ পদ্ধতিতে ভোক্তা সরাসরি কোনো ব্যবসায়ী বা উৎপাদনকারীর কাছ থেকে পণ্য ক্রয় করে থাকে। ভোক্তা পণ্য বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান বা রিটেইলারের ওয়েবসাইট থেকে পণ্য ক্রয় করে লেনদেনের কাজ সম্পন্ন করে।

ব্যবসা থেকে ব্যবসা (Business to Business – B2B)

এ জাতীয় ই-কমার্সের কার্যক্রম সাধারণত একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সম্পন্ন হয়। যেমনঃ কোনো উৎপাদক ও হোলসেলার কিংবা হোলসেলার ও রিটেইলার-এর মধ্যকার ব্যবসা। ক্রেতা এবং বিক্রেতা উভয়েই এক্ষেত্রে যৌথভাবে ব্যবসায় যুক্ত থাকে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে পাইকারি কেনাবেচার ক্ষেত্রে বি-টু-বি খুবই কার্যকর একটি বাণিজ্য পদ্ধতি।

ভোক্তা থেকে ভোক্তা (Consumer to Consumer – C2C)

এ ধরনের ই-কমার্সে ক্রেতা এবং বিক্রেতার মধ্যে কোনো মধ্যস্থতাকারী থাকে না। এক ক্রেতা সরকার অন্য ক্রেতার পন্য কিনে থাকেন। পুরানো কোনো পণ্য বিক্রির জন্য এ ধরনের ই-কমার্স খুবই উপযোগী। যিনি তার পণ্য বিক্রি করবেন তিনি কি পণ্য বিক্রি করতে চান তার বিবরণ, নাম, ঠিকানা ইত্যাদি উল্লেখ করেন ওয়েবসাইটে। আর যিনি তা কিনবেন তিনি উক্ত বিক্রেতার সাথে যোগাযোগ করে ওই পণ্যটি কিনে নিবেন। পুরাতন কম্পিউটার ও কম্পিউটার যন্ত্রাংশ, গাড়ি, হোম অ্যাপ্লায়েন্স, মোবাইল ফোন ইত্যাদিসহ আরও অনেক ধরনের পণ্য এ প্রক্রিয়ায় ক্রয় বিক্রয় হয়ে থাকে।

ভোক্তা থেকে ব্যবসা (Consumer to Business – C2B)

এমন ধরনের কিছু ব্যবসা রয়েছে যা ভােক্তাদের কাছ থেকে ব্যবসায়ীরা গ্রহণ করে থাকেন। ভােক্তারা তাদের পণ্য ও সেবা কোম্পানিগুলাের কাছে পেশ করে এবং উক্ত পণ্য বা সেবা ওই কোম্পানি দ্বারা গ্রহণ করা হলে কোম্পানি তার জন্য ভােক্তাকে অর্থ প্রদান করে। যেমনঃ ভােক্তাদের একটি প্রতিষ্ঠান যদি কোনাে এয়ারলাইন কোম্পানির কাছে প্রস্তাব নিয়ে যায় যে যদি বিমানের টিকিটের মূল্য একটি ন্যূনতম পর্যায়ে বেঁধে দেয়া হয় তবে তারা নিয়মিত নিদিষ্ট সংখ্যক ভ্রমণকারীর ব্যবস্থা করে দেবে। ওই এয়ারলাইন কোম্পানি যদি সে প্রস্তাব গ্রহণ করে তবে এ ধরনের ব্যবসাকে সি-টু-বি বলা যাবে।

 

ই-কমার্সের সুবিধা (Advantages of E-commerce)

  • দ্রুত ক্রয়/বিক্রয় পদ্ধতি, সহজে পণ্য খুঁজে পাওয়া যায়।
  • ব্যবসা পরিচালনায় খরচ কম হয়।
  • ভৌগলিক সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে সহজেই ক্রেতার কাছে পৌছা যায়।
  • পণ্যের গুণগত মান উন্নয়ন করে।
  • কম খরচে উন্নত সেবা প্রদান করে।
  • বাহ্যিক সেটআপ ছাড়াই ব্যবসা করা যায়।
  • সহজেই ব্যবসা শুরু করা যায় এবং ব্যবস্থাপনা করা যায়।
  • ক্রেতা দৈহিকভাবে না গিয়ে বিভিন্ন প্রােভাইডারদের প্রােডাক্ট নির্বাচন করতে পারে।

 

ই-কমার্সের অসুবিধাসমূহ (Disadvantages of E-Commerce)

ই-কমার্সের সুবিধার তুলনায় অসুবিধাসমূহ অত্যন্ত নগণ্য। তারপরও কতগুলাে অসুবিধার বিষয় মনে রাখা বিশেষ প্রয়ােজন। নিচে এসব অসুবিধাসমূহ বিস্তারিতভাবে আলােচনা করা হলাে।

  • দক্ষ লোকজনের অভাব।
  • উন্নত প্রযুক্তি প্রয়ােগ ব্যয়বহুল।
  • মাত্রাতিরিক্ত অর্ডার সরবরাহের সমস্যা।
  • দূরবর্তী স্থানের অর্ডার ক্ষেত্রবিশেষে ব্যয়বহুল।
  • আইন প্রণয়ন ও প্রয়ােগ সমস্যা
  • লেনদেনের নিরাপত্তা সমস্যা।

 

ই-কমার্সের বৈশিষ্ট্য (Characteristics of E-commerce)

ইকমার্স প্রযুক্তি সাতটি বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি তৈরি হয়, এগুলো হলো–

১. সর্বব্যাপিতা (Ubiquity)

২. সব জায়গায় প্রবেশযোগ্য (Global Reach)

৩. আন্তর্জাতিক মান (Universal Standards)

৪. প্রাচুর্যতা (Richness)

৫. মিথস্ক্রিয়া (Interactivity)

৬. তথ্যের ঘনত্ব (Information Density)

৭. ব্যক্তিগতভাবে যত্নশীলতা (Personalization)

 

 

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments