নেফ্রন কি? নেফ্রন ও নিউরোন এর মধ্যে পার্থক্য কি?

নেফ্রন (Nephron) হচ্ছে বৃক্কের গঠনগত এবং কার্যগত একক, যা মূত্র তৈরী করে। মানুষের প্রত্যেক বৃক্কে ১০ লক্ষ থেকে ১২ লক্ষ নেফ্রন রয়েছে। প্রতিটি নেফ্রন প্রায় ৩ সে.মি. লম্বা। এ হিসেবে প্রত্যেক বৃক্কে নেফ্রনের নালিকাগুলো সম্মিলিতভাবে ৩৬ কি.মি. (প্রায় ২২.৫ মাইল) এরও বেশি লম্বা হবে। এর ফলে বিভিন্ন পদার্থের বিনিময় ক্ষেত্র ব্যাপক বিস্তৃত হয়েছে। বৃক্কের মাধ্যমে প্রতি মিনিটে রক্ত থেকে ১২৫ ঘন সেমি. তরল পদার্থ পরিশ্রুত হয়। প্রায় ৯৯% পানিই আবার রক্তে ফিরে যায়, সাধারণত প্রতি মিনিটে কেবল ১ ঘন সেমি. মূত্র সৃষ্টি হয়।

নেফ্রন মানবদেহে কীভাবে কাজ করে?

নেফ্রন হচ্ছে বৃক্কের গাঠনিক একক। বৃক্ক দেহের নাইট্রোজেন ঘটিত বর্জ্য মূত্রের মাধ্যমে দেহ থেকে অপসারণ করে। মূত্রে ইউরিয়া, ইউরিক অ্যাসিড, অ্যামোনিয়া, ক্রিয়েটিনিন ইত্যাদি নাইট্রোজেন ঘটিত বর্জ্য পদার্থ থাকে। এগুলো মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। বৃক্কস্থিত নেফ্রন একটি জটিল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ক্রমাগতভাবে মূত্র উৎপন্ন করে। উৎপন্ন মূত্র সংগ্রাহী নালিকার মাধ্যমে বৃক্কের পেলভিসে পৌঁছায় এবং পেলভিস থেকে ইউরেটারের ফানেল আকৃতির প্রশস্ত অংশ বেয়ে ইউরেটারে প্রবেশ করে। ইউরেটার থেকে মূত্র মূত্রথলিতে আসে এবং সাময়িকভাবে জমা হয়। মূত্রথলি মূত্র দ্বারা পরিপূর্ণ হলে মূত্র ত্যাগের ইচ্ছা জাগে এবং মূত্রথলির নিচের দিকে অবস্থিত ছিদ্রপথে দেহের বাইরে বেরিয়ে আসে। এভাবেই নেফ্রন মানবদেহে কাজ করে।

 

নেফ্রন ও নিউরোন এর মধ্যে পার্থক্য কি?

নেফ্রন ও নিউরোন এর মধ্যে পার্থক্য নিচে দেওয়া হলোঃ

নেফ্রন

  • বৃক্কের গঠনগত ও কার্যগত একককে নেফ্রন বলে।
  • এটি ভ্রূণীয় মেসোডার্ম থেকে উৎপত্তি হয়।
  • এটি কেবল বৃক্কে পাওয়া যায়।
  • এটি রেনাল করপাসল ও রেনাল টিউব্যুল নিয়ে গঠিত।
  • নেফ্রন তিন প্রকার- সুপার কর্টিকাল, মিডকর্টিকাল ও ডাক্সটামেডুলারি।
  • এটি রক্তশোধন করে নাইট্রোজেনঘটিত বর্জ্যসহ মূত্র তৈরি করা।

নিউরোন

  • স্নায়ুতন্ত্রের গঠনগত ও কার্যগত একককে নিউরোন বলে।
  • এটি ভ্রূণীয় এক্টোডার্ম থেকে উৎপত্তি হয়।
  • এটি সমগ্র দেহে পাওয়া যায়।
  • এটি সোমা, অ্যাক্সন ও ডেনড্রাইট নিয়ে গঠিত।
  • নিউরোন পাঁচ প্রকার- অ্যাপোলোর, ইউনিপোলার, সিউডো-ইউনিপোলার, বাইপোলার ও মাল্টিপোলার।
  • এটি স্নায়ু উদ্দীপনা গ্রহণ, প্রেরণ ও প্রতিবেদন সৃষ্টি করা।

Leave a Comment