HomeElectronicsপাওয়ার ফ্যাক্টর কি? পাওয়ার ফ্যাক্টর কত প্রকার ও কি কি?

পাওয়ার ফ্যাক্টর কি? পাওয়ার ফ্যাক্টর কত প্রকার ও কি কি?

পাওয়ার ফ্যাক্টর কি? (What is Power Factor in Bengali/Bangla?)

পাওয়ার ফ্যাক্টরের বিভিন্ন সংজ্ঞা নিচে তুলে ধরা হলো :

  • এসি সার্কিটে ভোল্টেজ ও কারেন্টের ফেজ অ্যাঙ্গেলের কোসাইনের মানকে পাওয়ার ফ্যাক্টর (Power factor) বলে।
  • কোনো এসি সার্কিট প্রকৃত পাওয়ার ও আপাত পাওয়ারের অনুপাতকে পাওয়ার ফ্যাক্টর বলে।
  • এসি সার্কিটের রেজিস্ট্যান্স (R) ও ইম্পিড্যান্সের (Z) অনুপাত হলো পাওয়ার ফ্যাক্টর। পাওয়ার ফ্যাক্টরকে cosθ দ্বারা প্রকাশ করা হয়। পাওয়ার ফ্যাক্টরের কোনো একক নেই।

একে cosθ দ্বারা প্রকাশ করা হয়, যার মান ০ থেকে ১ পর্যন্ত হতে পারে। পাওয়ার ফ্যাক্টর নির্দেশ করে শতকরা কত ভাগ বিদ্যুৎ আমরা প্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহার করতে পারি। একটিভ পাওয়ার কিলোওয়াট (KW) এ পারিমাপ করা হয় এবং এ্যাপারেন্ট পাওয়ার ভোল্ট-অ্যাম্পিয়ার(VA)এ পরিমাপ করা হয়।

এখানে একটিভ পাওয়ার হল যতটুকু বিদ্যুৎ ক্ষমতা আমরা ব্যবহার করতে পারি, এবং এ্যপারেন্ট পাওয়ার হল মোট শক্তি যা একটিভ পাওয়ার আর রিএকটিভ পাওয়ারের যোগফল।

 

পাওয়ার ফ্যাক্টরের প্রতীক ও একক

পাওয়ার ফ্যাক্টরকে Cosθ প্রতীক দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। পাওয়ার ফ্যাক্টর যেহেতু একই রাশির অনুপাত, সেহেতু তার কোনো একক নেই। পাওয়ার ফ্যাক্টরের মান 0.8 থেকে 0.9 পর্যন্ত গ্রহণযোগ্য।

পাওয়ার ফ্যাক্টর কত প্রকার ও কি কি? (How Many Types of Power Factor?)

Power factor তিন প্রকার। যথা :

১. ইউনিটি পাওয়ার ফ্যাক্টর (Unity power factor);

২. ল্যাগিং পাওয়ার ফ্যাক্টর (Lagging power factor) এবং

৩. লীডিং পাওয়ার ফ্যাক্টর (Leading power factor)।

১. ইউনিটি পাওয়ার ফ্যাক্টর (Unit Power Factor) : যে সার্কিটের রোধে কারেন্ট ও ভোল্টেজের মধ্যে কোন কৌণিক ব্যবধান থাকে না সে সার্কিটে পাওয়ার ফ্যাক্টর এক বা ইউনিট হয়। এজন্য একে ইউনিটি পাওয়ার ফ্যাক্টর।

২. ল্যাগিং পাওয়ার ফ্যাক্টর (Lagging Power Factor) : কোন সার্কিটের ক্যাপাসিটিভ লোডের চেয়ে Inductive লোডের পরিমাণ বেশি হলে ঐ সার্কিটের পাওয়ার ফ্যাক্টরকে ল্যাগিং পাওয়ার ফ্যাক্টর (Leading power factor) বলে। ল্যাগিং পাওয়ার ফ্যাক্টর এ কারেন্ট ভোল্টেজের পিছনে থাকে।

৩. লিডিং পাওয়ার ফ্যাক্টর (Leading Power Factor) : যে সার্কিট Inductive লোডের চেয়ে capacitive লোডের পরিমাণ বেশি থাকে সে সার্কিটের পাওয়ার ফ্যাক্টরকে (p.f) লিডিং পাওয়ার ফ্যাক্টর বলে। এ ক্ষেত্রে ভোল্টেজ, কারেন্টের পেছনে থাকে।

পাওয়ার ফ্যাক্টর উন্নতিকরণ

কল-কারখানায় বা বিভিন্ন ফ্যাক্টরিতে ইন্ডাকটিভ লোড ব্যবহারের কারণে পাওয়ার ফ্যাক্টর নিম্নমানের হয়। ভোল্টেজ ও কারেন্টের মধ্যবর্তী ফেজ কোণের কোসাইনের মানকে পাওয়ার ফ্যাক্টর বলে। যদি ভোল্টেজ থেকে কারেন্ট পিছনে থাকে তাকে ল্যাগিং পাওয়ার ফ্যাক্টর এবং ভোল্টেজ থেকে কারেন্ট যখন এগিয়ে থাকে তখন তাকে লীডিং পাওয়ার ফ্যাক্টর বলে। ক্যাপাসিটিভ লোড ব্যবহারের কারণে পাওয়ার ফ্যাক্টর লীডিং হয়। সুতরাং, লোডের সাথে যে সমস্ত ইকুইপমেন্ট যথা : ক্যাপাসিটর, সিনক্রোনাস কন্ডেনসার, সিনক্রোনাস মোটর ও ফেজ অ্যাডভেন্সার ইত্যাদি ব্যবহার করে ল্যাগিং পাওয়ার ফ্যাক্টর হতে লীডিং পাওয়ার ফ্যাক্টরে উন্নতি করা হয়, তখন তাকে পাওয়ার ফ্যাক্টর উন্নতিকরণ বলে।

পাওয়ার ফ্যাক্টরের গুরুত্ব (Importance of Power factor)

বৈদ্যুতিক সিস্টেমে পাওয়ার ফ্যাক্টরের গুরুত্ব অপরিসীম। পাওয়ার ফ্যাক্টর লোডের প্রকৃতির উপর নির্ভর করে। অর্থাৎ, P = VICosθ। সূত্র হতে দেখা যায়, সার্কিটের পাওয়ার, পাওয়ার ফ্যাক্টর মানের সাথে সমানুপাতিক। ফলে, পাওয়ার ফ্যাক্টরের মান কমলে সমপরিমাণ পাওয়ার স্থানান্তরের ক্ষেত্রে কারেন্টের মান বৃদ্ধি করতে হয়। এতে করে সিস্টেমে ব্যবহৃত বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি যথা- ট্রান্সফরমার, সুইচ গিয়ার, ওভারহেড লাইন ও লাইনের সাপোর্ট ইত্যাদির সাইজ বৃদ্ধি করতে হয় এবং উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পায়। ফলে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের খরচ বৃদ্ধি করতে হবে। এতে করে গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যদি ল্যাগিং পাওয়ার ফ্যাক্টর হতে লীডিং পাওয়ার ফ্যাক্টরে উন্নতি করা হয়, তবে কিলোওয়াট ক্যাপাসিটি নির্ধারিত থাকে। ফলে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ খরচ কম পরবে। এতে করে গ্রাহকের কোনো অসুবিধা হয় না। ফলে বিদ্যুৎ সংস্থার জন্য বাড়তি খরচ নির্ধারণ করতে হয় না। তাই গ্রাহক ও বিদ্যুৎ সংস্থা উভয়ের জন্য পাওয়ার ফ্যাক্টরের গুরুত্ব অপরিসীম।

পাওয়ার ফ্যাক্টর সংশোধন

পাওয়ার ফ্যাক্টর সংশোধন(correction) বলতে আমরা সহজে বুঝি কোন একটা সিস্টেমে রিএকটিভ পাওয়ারের পরিমান কমিয়ে একটিভ পাওয়ার এর পরিমান বাড়ানো। আমরা সাধারনত ক্যাপাসিটর ব্যাংক অথবা সিংক্রোনাস মোটর ব্যবহার করে পাওয়ার ফ্যাক্টর সংশোধন ও বৃদ্ধি করে থাকি। ইন্ডাস্ট্রিতে ক্যাপাসিটর ব্যাংক ব্যবহার করে পাওয়ার ফ্যাক্টর সংশোধন করা হয়।

পাওয়ার ফ্যাক্টর উন্নতির কৌশল

সাধারণত তিনটি উপায়ে পাওয়ার ফ্যাক্টরের উন্নত করা যায়। এগুলো হলো-

  • স্ট্যাটিক ক্যাপাসিটর ব্যাংক (Static capacitor bank) ব্যবহার করে।
  • সিনক্রোনাস কন্ডেন্সার (Synchronous Condenser) ব্যবহার করে এবং
  • ফেজ অ্যাডভেনসার (Phase Advancer) ব্যবহার করে।

পাওয়ার ফ্যাক্টর এর মান কম হলে সিস্টেমে কি কি অসুবিধা হয়ে থাকে?

পাওয়ার ফ্যাক্টর এর মান কম হলে অনেক বেশি আয়তনের পরিবাহীর প্রয়োজন হয়, লাইন লস বৃদ্ধি পায়, পাওয়ার সিস্টেমের দক্ষতা কমে যায়, খরচ অনেক বেড়ে যায় ফলে পার ইউনিট কস্ট অনেক বেশি হয়।

অর্থনিতিক পাওয়ার ফ্যাক্টর কি?

এটি  এমন এক ধরনের পাওয়ার ফ্যাক্টর যে মানে এটিকে উন্নতি করলে বাৎসরিক সর্বোচ্চ সাশ্রয় হয় এবং ঐ পাওয়ার ফ্যাক্টর কে সর্বোত্তম পাওয়ার ফ্যাক্টর ও বলা হয়।

Tags :

  • ডিসি সার্কিটের পাওয়ার ফ্যাক্টর কত?
  • পাওয়ার ফ্যাক্টর এর সুবিধা কী?
  • পাওয়ার ফ্যাক্টর বেশী হলে ভাল না কম হলে ভাল?
  • গ্রাহকদের জন্য সবচেয়ে লাভজনক পাওয়ার ফ্যাক্টর কোনটি?
  • পাওয়ার ফ্যাক্টর কেন ব্যবহার করা হয়?
  • পাওয়ার ফ্যাক্টর এর সূত্র কী?
  • ল্যাগিং পাওয়ার ফ্যাক্টর কি?
  • পাওয়ার ফ্যাক্টর এর একক কি?
  • পাওয়ার ফ্যাক্টর কাজ কি?
  • বাংলাদেশের পাওয়ার ফ্যাক্টর কত?
  • পাওয়ার ফ্যাক্টর এর মান কত?
  • মিল কারখানায় পাওয়ার ফ্যাক্টর কত রাখা প্রয়োজন?
  • পাওয়ার ফ্যাক্টর কাকে বলে?
  • ইউনিটি পাওয়ার ফ্যাক্টর কি
  • কম পাওয়ার ফ্যাক্টরের অসুবিধা
  • পাওয়ার ফ্যাক্টর চার্জ কি
  • পাওয়ার ফ্যাক্টর ক্যালকুলেশন
  • পাওয়ার ফ্যাক্টর কম হওয়ার কারণ কি
  • পাওয়ার ফ্যাক্টর কিভাবে উন্নত করা যায়
  • পাওয়ার ফ্যাক্টর মিটার
  • পাওয়ার ফ্যাক্টর ইমপ্রুভমেন্টে কেন করি
  • ডিসি সার্কিটের পাওয়ার ফ্যাক্টর কত
  • পাওয়ার ফ্যাক্টর কয় প্রকার ও কি কি?
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments