HomeBlogবাক্য সংকোচন কাকে বলে? বাক্য সংকোচনের প্রয়োজনীয়তা কি?

বাক্য সংকোচন কাকে বলে? বাক্য সংকোচনের প্রয়োজনীয়তা কি?

একটি বাক্য বা বাক্যাংশকে অথবা কয়েকটি পদসমষ্টিকে একটি পদে বা একটি যৌগিক শব্দে পরিণত করাকে এক কথায় প্রকাশ বা বাক্য সংকোচন বলে। সংকুচিত বাক্যের প্রয়োগ সুষ্ঠু ও সুন্দর হলে ভাষা শক্তিশালী ও হৃদয়গ্রাহী হয়। এতে অর্থের কোনো পরিবর্তন ঘটে না। কিন্তু সংক্ষিপ্ত করার জন্য শ্রুতিমধুর হয়। যেমন— আপনাকে যে হত্যা করে – আত্মঘাতী; চৈত্র মাসের ফসল – চৈতালী; ইতিহাস লেখেন যিনি – ঐতিহাসিক।

 

বাক্য সংকোচনের উপায়

বহু পদকে একপদে পরিণত করার প্রক্রিয়াই হচ্ছে বাক্য সংকোচন। এ কাজটি নিম্নলিখিত উপায়সমূহের সাহায্যে করা যেতে পারে। যেমন—

১. সমাসের সাহায্যে : যেমন— যত দিন জীবিত থাকবে ততদিন = আজীবন। (অব্যয়ীভাব সমাসনিষ্পন্ন পদ।)

২. উপসর্গের সাহায্যে : জায়া ও পতি = দম্পতি (দ্বন্দ্ব সমাসনিষ্পন্ন পদ।)

৩. কৃৎ প্রত্যয়ের সাহায্যে : যে সকল দিক জয় করেছে = দিগ্বিজয়ী।

৪. তদ্ধিত প্রত্যয়ের সাহায্যে : বনে জাত = বন্য। ইত্যাদি।

 

বাক্য সংকোচনের প্রয়োজনীয়তা

মনোভাবকে স্পষ্টতা, শ্রুতিমধুরতা ও সৌন্দর্য দান করে অধিকতর গুণাগুণসম্পন্ন করে তোলার ক্ষেত্রে বহুপদকে একপদী করে তোলার গুরুত্ব অপরিসীম। এ পদ্ধতিটাই বাক্য সংকোচন নামে অভিহিত। ভাষা-দেহের উৎকর্ষ ও সৌন্দর্য বিধানে বাক্য সংকোচন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অল্প সময়ে বহু ভাব ব্যক্ত করার জন্য বাক্য সংকোচন একটি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। ভাষা শিক্ষার্থীদের বাক্য সংকোচন সম্পর্কে জ্ঞান থাকা আবশ্যক।

 

নিচে বাক্য সংকোচনের কিছু উদাহরণ দেয়া হলোঃ

  • অগ্রে গমন করে যে — অগ্রগামী
  • অগ্রে বর্তমান যে — অগ্রবর্তী
  • অগ্রে জন্মেছে যে — অগ্রজ
  • অবশ্যই ঘটবে যা — অবশ্যম্ভাবী
  • অকালে পেকেছে যে — অকালপক্ক
  • অভিজ্ঞতার অভাব যার – অনভিজ্ঞ
  • অহংকার করে যে — অহংকারী
  • অহংকার নেই যার — নিরহংকার
  • অনেকের মধ্যে একজন — অন্যতম
  • অন্য ভাষায় পরিবর্তিত — অনূদিত
  • অতি শীতও নয় অতি গরমও নয় – নাতিশীতোষ্ণ
  • অধিক কথা বলে যে –অমিতভাষী, বাচাল
  • অল্পকথা বলে যে — অল্পভাষী
  • অনায়াসে যা লাভ করা যায় – অনায়াসলভ্য
  • অনায়াসে যা করা যায় – অনায়াসসাধ্য
  • অতি দীর্ঘ নয় যা — নাতিদীর্ঘ
  • অর্থ নেই যার — অনর্থ, নিরর্থক
  • অন্তিমকাল উপস্থিত যার — মুমূর্ষু
  • আঠাযুক্ত যা — আঠাল
  • আঘাত পায় নি যে — অনাহত
  • আপনাকে যে ভুলে যায় — আত্মভোলা
  • আপনাকে পণ্ডিত মনে করে যে — পণ্ডিতস্মন্য
  • আকাশে গমন করে যে — বিহগ, বিহঙ্গ
  • কণ্ঠ পর্যন্ত — আকণ্ঠ
  • কর্মে অতিশয় কুশল— কর্মঠ
  • কর্ণ পর্যন্ত বিস্তৃত — আকর্ণ
  • কাতর না হয়ে – অকাতরে
  • কোথাও নত কোথাও উন্নত — বন্ধুর
  • কষ্টে অতিক্রম করা যায় যা — দুরতিক্রম্য
  • কষ্টে নিবারণ করা যায় না যা – দুর্নিবার
  • কথায় বর্ণনা করা যায় না যা — অবর্ণনীয়
  • কথায় ব্যক্ত করা যায় না যা – অব্যক্ত
  • কোনটা দিক কোনটা বিদিক এ জ্ঞান যার নাই — দিগ্বিদিকজ্ঞানশূন্য
  • কোকিলের ডাক — কুহু
  • কোথাও থেকে ভয় নেই যার — অকুতোভয়
  • কূলের সমীপে – উপকূল
  • কষ্ট সহ্য করতে পারে যে — কষ্টসহিষ্ণু
  • কানে কানে যে কথা — কানাকানি
  • কী কর্তব্য তা বুঝতে পারে না যে – কিংকর্তব্যবিমূঢ়
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments