রাসায়নিক সংকেত কাকে বলে? রাসায়নিক সংকেত লেখার নিয়ম কি?

একটি মৌল বা যৌগের অণুতে যে যে ধরনের মৌলের পরমাণু থাকে তাদের প্রতীক এবং যে মৌলের পরমাণু যতটি থাকে সেই সকল সংখ্যা দিয়ে প্রকাশিত সংকেতকে আণবিক সংকেত বা রাসায়নিক সংকেত বলে।

 

রাসায়নিক সংকেত লেখার নিয়ম কি?

রাসায়নিক সংকেত লেখার নিয়ম নিচে তুলে ধরা হলো–

(a) কোনো মৌলের একটি অণুতে যতগুলো পরমাণু থাকে তার সংখ্যাটি ইংরেজি হরফে মৌলটির প্রতীকের ডান পাশে নিচে ছোট করে লিখতে হবে। যেমন : নাইট্রোজেন অণুতে দুটি পরমাণু থাকে তাই নাইট্রোজেন অণুর সংকেত N2। ওজোন এর একটি অণুতে তিনটি অক্সিজেন পরমাণু থাকে— তাই ওজোন অণুর সংকেত O3। কিছু মৌল অণু গঠন করে না তাই তাদেরকে শুধু প্রতীক দিয়ে বোঝানো হয়। যেমন : সকল ধাতু। কাজেই আয়রনকে বোঝাতে শুধু Fe লিখতে হবে। আবার, নিষ্ক্রিয় গ্যাসগুলোও অণু গঠন করে না, তাই হিলিয়ামকে বোঝাতেও শুধু He লিখতে হবে।

(b) কখনো কখনো কোনো যৌগের অণু দুটি ভিন্ন মৌলের পরমাণু দিয়ে গঠিত হয়। তাদের যোজনী যদি কোনো সাধারণ সংখ্যা দ্বারা বিভাজ্য না হয় তাহলে দুটি মৌলের প্রতীক পাশাপাশি লিখে একটি মৌলের প্রতীকের পাশে অন্যটির যোজনী লিখতে হয়। যেমন : অ্যালুমিনিয়ামের যোজনী 3 এবং অক্সিজেন এর যোজনী 2। যোজনী দুটি কোনো সাধারণ সংখ্যা দ্বারা বিভাজ্য নয়। যদি অ্যালুমিনিয়াম এবং অক্সিজেন দ্বারা গঠিত কোনো যৌগের সংকেত লিখতে হয় তবে অ্যালুমিনিয়ামের প্রতীক Al এর নিচের দিকে ডান পাশে অক্সিজেনের যোজনী ছোট করে লিখতে হবে এবং অক্সিজেনের প্রতীক O এর নিচের দিকে ডান পাশে অ্যালুমিনিয়ামের যোজনী ছোট করে লিখতে হবে অর্থাৎ এর সংকেত হবে Al2O3। অনুরূপভাবে ক্যালসিয়ামের যোজনী 2 এবং ক্লোরিনের যোজনী 1। সুতরাং ক্যালসিয়াম ক্লোরাইডের সংকেত Ca1Cl2 হওয়ার কথা, 1টি লিখতে হয় না বলে আমরা লিখি CaCl2। আবার, ম্যাগনেসিয়ামের যোজনী 2 এবং ফসফেটের যোজনী 3। সুতরাং ম্যাগনেসিয়াম ফসফেটের সংকেত Mg3(PO4)2। উল্লেখ্য যে, কোনো যৌগমূলক একাধিক সংখ্যক থাকলে যৌগমূলকটিকে প্রথম বন্ধনীর মধ্যে রেখে তারপর সংখ্যা লিখতে হয়। যেমন : অ্যামোনিয়াম ফসফেট (NH4)3(PO4)1 বা (NH4)3 PO4, অ্যালুমিনিয়াম সালফেট Al2(SO4)3 ইত্যাদি।

Leave a Comment