ট্রান্সমিশন কাকে বলে?
বৈদ্যুতিক পাওয়ারকে জেনারেটিং স্টেশন হতে সাব-স্টেশন পর্যন্ত পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থাকে ট্রান্সমিশন বলে। এতে পোল, টাওয়ার কন্ডাক্টর, ট্রান্সফরমার ইত্যাদি প্রয়োজন হয়। বাংলাদেশে ট্রান্সমিশন ভোল্টেজ সাধারণত ২৩০ কেভি, ১৩২ কেভি, ৬৬ কেভি ও ৩৩ কেভি। বাংলাদেশে উৎপন্ন জেনারেটিং ভোল্টেজ ১১ কেভি বা ১১০০০ ভোল্ট। জেনারেটিং স্টেশন হতে উৎপন্ন ১১ কেভি ভোল্টেজকে উচ্চ ভোল্টেজে রূপান্তর করে ট্রান্সমিশন লাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন সাব-স্টেশনে পৌঁছে দেয়া হয়। ট্রান্সমিশন লাইনে পাওয়ার ট্রান্সফরমার ব্যবহার করা হয়। ট্রান্সমিশন দুই ধরনের হয়। যথা–
(ক) প্রাইমারি ট্রান্সমিশন : জেনারেটিং স্টেশনের ১১/২৩০ কেভি স্টেপ আপ ট্রান্সফরমার থেকে ২৩০/১৩২ কেভি সাব-স্টেশনের ট্রান্সফরমার পর্যন্ত বিদ্যুৎ শক্তি পৌঁছানোর ব্যবস্থাকে প্রাইমারি ট্রান্সমিশন বলে।
(খ) সেকেন্ডারি ট্রান্সমিশন : ২৩০/১৩২ কেভি সাব-স্টেশনের স্টেপ ডাউন ট্রান্সফরমার থেকে অন্য ১৩২/৩৩ কেভি সাব-স্টেশনের ট্রান্সফরমার পর্যন্ত বিদ্যুৎ শক্তি পৌঁছানোর ব্যবস্থাকে সেকেন্ডারি ট্রান্সমিশন বলে।
ডিস্ট্রিবিউশন কাকে বলে?
বৈদ্যুতিক পাওয়ারকে সাব-স্টেশন হতে গ্রাহকের মিটার পর্যন্ত পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থাকে ডিস্ট্রিবিউশন বলে। বাংলাদেশে ব্যবহৃত ডিস্ট্রিবিউশন ভোল্টেজ সাধারণত ১১ কেভি, ৩.৩ কেভি, ০.৪ কেভি হয়ে থাকে।
ডিস্ট্রিবিউশন লাইনের মাধ্যমে গ্রাহক সরাসরি বিদ্যুৎ সরবরাহ পেয়ে থাকে। ডিস্ট্রিবিউশন লাইনে ডিস্ট্রিবিউশন ট্রান্সফরমার ব্যবহার করা হয়। ডিস্ট্রিবিউশন দুই ধরনের হয়ে থাকে। যথা-
(ক) প্রাইমারি ডিস্ট্রিবিউশন : ৩৩/১১ কেভি সেকেন্ডারি ট্রান্সমিশনের থেকে ১১/০.৪ কেভি ট্রান্সফরমার পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থাকে প্রাইমারি ডিস্ট্রিবিউশন বলা হয়।
(খ) সেকেন্ডারি ডিস্ট্রিবিউশন : ১১/০.৪ কেভি ডিস্ট্রিবিউশন ট্রান্সফরমারের সেকেন্ডারি থেকে গ্রাহকের ওয়্যারিং পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থাকে সেকেন্ডারি ডিস্ট্রিবিউশন বলা হয়।
ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশনে বিভিন্ন ভোল্টেজ ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা
বিদ্যুৎশক্তি উৎপন্ন করে দূর-দূরান্তে সরবরাহ ও বণ্টনের ব্যবস্থা করতে ওভারহেড লাইন ব্যবহার করা দরকার। আমাদের দেশে শুধুমাত্র এসি ওভারহেড লাইনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ ও বণ্টন করা হয়। বৈদ্যুতিক পাওয়ার জেনারেটিং স্টেশনে উৎপন্ন হয়। বৈদ্যুতিক পাওয়ার জেনারেটিং স্টেশন হতে দূর-দূরান্তে প্রেরণের জন্য বিভিন্ন ধরনের সাব-স্টেশন স্থাপন করা হয়। সাব-স্টেশন হতে গ্রাহকদের বিভিন্ন লোড ব্যবহার করার জন্য বিভিন্ন ধরনের ডিস্ট্রিবিউশন লাইন ব্যবহার করা হয়। ডিস্ট্রিবিউশন লাইনের সাহায্যে নিম্ন ভোল্টেজকে বিভিন্ন লোডে সরবরাহ করে গ্রাহকদের চাহিদা মেটানো হয়। তাই, ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশনে বিভিন্ন ভোল্টেজ ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।