HomeBiologyসংক্রামক রোগ কি? সংক্রামক রোগ প্রতিরোধের উপায় কি?

সংক্রামক রোগ কি? সংক্রামক রোগ প্রতিরোধের উপায় কি?

বিভিন্ন জীবাণু যেমন– ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ছত্রাক ইত্যাদি শরীরে প্রবেশের ফলে সৃষ্ট রোগই হলো সংক্রামক রোগ। এ সকল রোগ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে একজন মানুষ থেকে আরেকজন মানুষের দেহে ছড়াতে পারে।

 

সংক্রামক রোগের বিস্তার

সংক্রামক রোগ বিভিন্নভাবে ছড়াতে পারে। কিছু কিছু রোগ হাঁচি-কাশির মাধ্যমে একজন থেকে আরেক জনে সংক্রমিত হয়। সংক্রমিত ব্যক্তির ব্যবহৃত জিনিস যেমন– গ্লাস, প্লেট, চেয়ার, টেবিল, জামাকাপড়, টয়লেট ইত্যাদি ব্যবহারের মাধ্যমেও যে কেউ জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হতে পারে। মশার মতো পোকামাকড় বা কুকুরের মতো প্রাণীর কামড়ের মাধ্যমে কিছু রোগ ছড়াতে পারে। আবার দূষিত খাদ্য গ্রহণ এবং দূষিত পানি পানের মাধ্যমেও সংক্রামক রোগ ছড়াতে পারে।

 

সংক্রামক রোগের প্রকারভেদ

সংক্রামক রোগ অনেক ধরনের হয়ে থাকে যা নিচে দেওয়া হলো।

বায়ুবাহিত রোগ : বায়ুবাহিত রোগ হলো সে সকল রোগ যা হাঁচি-কাশি বা কথাবার্তা বলার সময় বায়ুততে জীবাণু ছড়ানোর মাধ্যমে হয়ে থাকে। সোয়াইন ফ্লু, হাম, গুটিবসন্ত, যক্ষ্মা এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা ইত্যাদি বায়ুবাহিত রোগ।

পানি বাহিত রোগ : পানিবাহিত রোগ হলো সে সকল রোগ যা জীবাণুযুক্ত দূষিত পানির মাধ্যমে বিস্তার লাভ করে। অনেক ধরনের পানিবাহিত রোগ রয়েছে। যেমন— ডায়রিয়া, কলেরা, আমাশয় ও টাইফয়েড।

ছোঁয়াছে রোগ : রোগাক্রান্ত ব্যক্তির প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সংস্পর্শে যে সকল রোগ সংক্রমন হয় তাই ছোঁয়াছে রোগ। যেমন— ফ্লু, ইবোল, হাম ইত্যাদি। এইডস একটি ভিন্ন ধরনের সংক্রামক রোগ, যা এইচআইভি ভাইরাসের মাধ্যমে ছরায়। যদিও আক্রান্ত ব্যক্তিকে স্পর্শ করলে বা তার ব্যবহৃত কোনো জিনিস ব্যবহার করলে কেউ এইচআইভি দ্বারা আক্রান্ত হবে না।

প্রাণী ও পোকামাকড়বাহিত সংক্রামক রোগ : বিভিন্ন প্রাণী এবং পোকামাকড়ের মাধ্যমে কিছু জীবাণুবাহিত রোগ ছড়ায়। যেমন– কুকুরের কামড়ের মাধ্যমে জলাতঙ্ক রোগ ছড়ায়। মশার কামড়ের মাধ্যমে ম্যালেরিয়া এবং ডেঙ্গু রোগ ছড়ায়।

 

সংক্রামক রােগ প্রতিরােধের উপায়

সংক্রামক রােগ জীবাণুর মাধ্যমে হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে শরীরের রােগ প্রতিরােধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা এবং রােগের জীবাণু ছড়িয়ে পড়া প্রতিরােধ করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সুষম খাদ্য খাওয়া, নিরাপদ পানি ব্যবহার করা এবং হাত জীবাণুমুক্ত রাখার মাধ্যমে এ রোগ থেকে সুস্থ থাকতে পারি। এ ছাড়া ঘরে পর্যাপ্ত আলাে বাতাসের ব্যবস্থা থাকা প্রয়ােজন। হাঁচি-কাশির সময় টিস্যু, রুমাল বা হাত দিয়ে মুখ ঢাকা, চারপাশের পরিবেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা ইত্যাদির মাধ্যমে এ রোগ প্রতিরোধ করা যায়। বাড়ির আশপাশে পানি জমতে পারে এমন আবর্জনা যেমন- কৌটা, টায়ার, ফুলের টব ইত্যাদি পরিষ্কার রাখতে হবে। কারণ, এখানে জমে থাকা পানিতে ডেঙ্গু এবং ম্যালেরিয়া রােগের বাহক মশা ডিম পাড়ে। প্রয়ােজনীয় টিকা নিয়ে এবং অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিহার করে এ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

 

সংক্রামক রােগের প্রতিকার

রােগাক্রান্ত হলে বেশি বেশি বিশ্রাম নিতে হবে, পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে এবং প্রচুর পরিমাণে নিরাপদ পানি পান করতে হবে। এগুলাে রোগীকে সেরে উঠতে সাহায্য করে। হালকা জ্বর হলে বা সামান্য মাথাব্যথা করলে প্রাথমিকভাবে কিছু ঔষধ খেলে এ রোগ থেকে কিছু ভালো বোধ হয়। কিন্তু যদি জ্বর ভালাে না হয়, একের পর থেকে বমি হতে থাকে এবং তীব্র মাথাব্যথা হয় তবে আক্রান্ত ব্যক্তিকে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে হবে।

 

Tags :

১। সার্স (SARS) কি? সার্সের উৎপত্তি, লক্ষণ এবং প্রতিরোধ।

২। ব্রংকাইটিস (Bronchitis) কাকে বলে? ব্রংকাইটিস এর লক্ষণ, প্রতিকার ও প্রতিরোধ।

৩। অ্যানথ্রাক্স বা তড়কা রোগ কি? এ রোগের উৎস, বিস্তার লক্ষণ এবং প্রতিরোধ।

৪। উচ্চ রক্তচাপ কাকে বলে? উচ্চ রক্তচাপের কারণ ও লক্ষণ কি?

৫। কলেরা (Cholera) কি? কলেরার লক্ষণ, প্রতিকার ও প্রতিরোধ।

৬। অ্যাজমা বলতে কি বুঝায়? এর লক্ষণ, প্রতিকার এবং প্রতিরোধ।

৭। জিকা ভাইরাস (Zika Virus) কি? এর লক্ষণ, নিবারণ এবং নিয়ন্ত্রণ।

৮। হার্ট অ্যাটাক বলতে কি বুঝ? হার্ট অ্যাটাকের কারণ ও প্রতিকার।

৯। এইডস (AIDS) কি? এইডস ছোঁয়াচে রোগ নয় কেন?

১০। এপিলেপসি কি? What is Epilepsy in Bengali?

১১। লিউকেমিয়া কি? লিউকেমিয়া কেন হয়? What is Leukemia in Bengali?

১২। জন্ডিস কি? জন্ডিস হওয়ার কারণ কি? What is Jaundice in Bengali?

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments