HomeTechnologyঅপটিক্যাল ফাইবার কি? অপটিক্যাল ফাইবারের সুবিধা ও অসুবিধা কি?

অপটিক্যাল ফাইবার কি? অপটিক্যাল ফাইবারের সুবিধা ও অসুবিধা কি?

অপটিক্যাল ফাইবার হলো এক ধরনে পাতলা স্বচ্চ কাঁচ দিয়ে বানানো তার (Wire), যার ভেতর দিয়ে ডেটা বা তথ্য আলো হিসেবে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যায়। এটা মানুষের চুলের মতাে চিকন এবং নমনীয়। আলােক রশ্মিকে বহনের কাজে এটি ব্যবহার করা হয়। এর ভেতরে আলো পূর্ণ অভ্যন্তরীণ প্রতিফলনের মাধ্যমে চলাচল করে। কাঁচতন্তু সাধারণত মজবুত আবরণে আবৃত থাকে যাতে সহজে ভেঙ্গে না যায়।

 

অপটিক্যাল ফাইবার এর ইতিহাস (History of Optical fibre)

১৮৪০ সালে প্যারিসে প্রতিসরণের মাধ্যমে আলোক প্রেরণ (যা ফাইবার অপটিক্সকে সম্ভব করে তুলেছে) এর ধারণা প্রথম আবিষ্কার করেন জ্যাকিস বেবিনেট এবং ডেনিয়েল কোলাডন। ১২ বছর পরে জন টিন্ডাল লন্ডনে এ বিষয়ে তাঁর ধারণা ব্যাখ্যা করেন। ১৮৭০ সালে টিন্ডাল তাঁর আলোর ধর্ম সম্পর্কিত একটি বইয়ে আলোর পূর্ণ অভ্যন্তরীণ প্রতিফলন বিষয়ে আলোকপাত করেন। আলো যখন বায়ু হতে পানিতে প্রতিসরিত হয়, তখন অভিলম্বের দিকে বেঁকে যায়, আর পানি হতে বায়ুতে প্রতিসরিত হবার সময় অভিলম্ব হতে দূরে সরে যায়। যদি আলোকরশ্মি পানি হতে প্রতিসরণের সময় ৪৮° এর বেশি কোণে আপতিত হয়, তবে আলোক রশ্মি কোনক্রমেই পানি মাধ্যম হতে প্রতিসরিত হয় না। তখন পূর্ণ অভ্যন্তরীণ প্রতিফলন ঘটে। আপতন কোণের যে মান থেকে পূর্ণ অভ্যন্তরীণ প্রতিফলন শুরু হয়, তাকে সংকট কোণ বলে। পানির ক্ষেত্রে সংকট কোণের মান প্রায় ৪৮°২৭’, যেখানে ফ্লিন্ট কাঁচের ক্ষেত্রে এর মান ৩৮°৪১’, হীরকের ক্ষেত্রে এই মান ২৩°৪২’ মানের হয়।

১৯ শতকের শেষ ও ২০ শতকের শুরুর দিকে দেহাভ্যন্তরকে আলোকিত করার কাজে বাঁকানো কাঁচনলকে আলোক সঞ্চারক রূপে ব্যবহার করা হতো। বিশ শতকের শুরুর দিকে দাঁতের চিকিৎসায় মুখাভ্যান্তরভাগ আলোকিত করার কাজে সরু কাঁচনলের প্রায়োগিক ব্যবহার শুরু হয়। ১৯২০ সালে নলের মধ্য দিয়ে প্রতিবিম্ব প্রেরণের পদ্ধতি স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রথমে ব্যবহার করেন টেলিভিশন পাইওনিয়ার জন লজি বেয়ার্ড ও রেডিও নিরীক্ষক ক্ল্যারেন্স হ্যানসেল। ১৯৩০ এর দশকে, হেনরিখ ল্যাম দেখান যে, কেউ আনল্যাড অপটিকাল ফাইবারগুলির একটি বান্ডিলের মাধ্যমে চিত্রগুলি সঞ্চারিত করতে পারে এবং তিনি এটি অভ্যন্তরীণ চিকিৎসা পরীক্ষার জন্য ব্যবহার করেন। তবে তাঁর কাজটি পরবির্তীতে বিস্মৃত হয়ে গিয়েছিল।

অপটিকাল ফাইবারগুলি অপটিক্যাল রাসায়নিক সেন্সর এবং অপটিকাল বায়োসেন্সরগুলির উপাদান হিসাবে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।

 

অপটিক্যাল ফাইবারের গঠন (Structure of Optical Fiber)

অপটিক্যাল ফাইবার বা ফাইবার অপটিক ক্যাবল এর ৩টি স্তর থাকে। এগুলো হল–

  • কোর (Core)
  • ক্ল্যাডিং (Cladding)
  • জ্যাকেট (Jacket)

(১) কোর (Core) : কোর হলো সবচেয়ে ভিতরের স্তর। এর মধ্য দিয়ে আলোক সিগন্যাল চলাচল করে। এটি সিলিকা মাল্টিকম্পোনেন্ট কাচ বা স্বচ্ছ প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি। এর ব্যাস ৮-১০০  মাইক্রোমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। ১ মাইক্রোমিটার/মাইক্রোন = ১০-৬  মিটার।

(২) ক্ল্যাডিং (Cladding) : কোরকে ঘিরে রাখা বাইরের স্তরটি হচ্ছে ক্ল্যাডিং। ক্ল্যাডিং কাচের তৈরি। কোর থেকে নির্গত আলোকরশ্মি প্রতিফলিত করে এটি পুনরায় কোরে ফেরত পাঠায়। ক্ল্যাডিং এর ব্যাস ১২৫ মাইক্রোমিটার।

(৩) জ্যাকেট (Jacket) : ক্লাডিং এর উপর প্লাস্টিক দিয়ে ঘেরা আবরণটিকে জ্যাকেট বলে। ফাইবার অপটিক তারকে ঘর্ষণ মরিচা, জলীয়বাষ্প থেকে রক্ষা করে জ্যাকেট।

 

ফাইবার অপটিক বা অপটিক্যাল ফাইবারের গঠন উপাদান :

ফাইবার অপটিক বা অপটিক্যাল ফাইবার তৈরির অন্তরক পদার্থ হিসেবে সিলিকা এবং মাল্টিকম্পোনেন্ট কাচ বহুলভাবে ব্যবহৃত হয়। এসব অন্তরক পদার্থের গুণগত বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো- অতি স্বচ্ছতা, রাসায়নিক সুস্থিরতা বা নিষ্ক্রিয়তা এবং সহজ প্রক্রিয়াকরণযোগ্যতা।

ফাইবার তৈরীর জন্য সোডা বোরো সিলিকেট, সোডা লাইম সিলিকেট, অ্যালুমিনা সিলিকেট ইত্যাদি মাল্টিকম্পনেন্ট কাচগুলো বেশি ব্যবহৃত হয়। কখনো কখনো ফাইবারের ক্লাডিং হিসেবে প্লাস্টিক ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে পূর্ণ প্লাস্টিক ফাইবারের ব্যবহার পরিলক্ষিত হচ্ছে। অতিরিক্ত ক্ষয় হচ্ছে এক্ষেত্রে প্রধান বাধা। সাধারণ কাচ ফাইবার তৈরির জন্য মোটেই উপযুক্ত নয়। কারণ এর মধ্য দিয়ে আলোকরশ্মি কিছুদূর যেতে না যেতেই নিঃশেষ হয়ে যায়।

 

অপটিক্যাল ফাইবারের প্রকারভেদ (Types Optical fiber)

ফাইবারের গাঠনিক উপাদানের প্রতিসরাঙ্কের উপর নির্ভর করে ফাইবার অপটিক বা অপটিক্যাল ফাইবারকে ৩ ভাগে ভাগ করা যায়। যথাঃ

  • স্টেপ-ইনডেক্স ফাইবার (Step-Index Fiber)
  • গ্রেডেড-ইনডেক্স ফাইবার (Graded-Index Fiber)
  • মনোমোড ফাইবার (Monomode Fiber)

(১) স্টেপ-ইনডেক্স ফাইবার (Step-Index Fiber) : স্টেপ ইনডেক্স ফাইবারে কোরের প্রতিসরাঙ্ক সর্বত্র সমান থাকে এবং এর ব্যাস বেশি হয়।

(২) গ্রেডেড-ইনডেক্স ফাইবার (Graded-Index Fiber) : গ্রেডেড-ইনডেক্স ফাইবারে কোরের প্রতিসরাঙ্ক কেন্দ্রে সবচেেয় বেশি এবং এর ব্যাসার্ধ বরাবর কমতে থাকে।

(৩) মনোমোড ফাইবার (Monomode Fiber) : মনোমোড ফাইবার Single wavelength এ লাইট ক্যারি করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।

কোরের ব্যাস অনুযায়ী অপটিক্যাল ফাইবার বা ফাইবার অপটিককে আবার দু ভাগে ভাগ করা যায়। যথাঃ

  • মাল্টিমোড ফাইবার (Multimode Fiber)
  • সিঙ্গেলমোড ফাইবার (Singlemode Fiber)

(১) মাল্টিমোড ফাইবার (Multimode Fiber) : মাল্টিমোড ফাইবারে কোরের সাইজ ৬২.৫/১২৫ মাইক্রোন। এ ফাইবার দিয়ে বিভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলোকরশ্মি পাঠানো যায় এবং একইসাথে একাধিক ট্রান্সমিশন হতে পারে।

(২) সিঙ্গেলমোড ফাইবার (Singlemode Fiber) : সিঙ্গেলমোড ফাইবারে কোরের সাইজ ৮/১২৫ মাইক্রোন। এতে শুধুমাত্র একটি ট্রান্সমিশন ঘটতে পারে।

 

ফাইবার অপটিক ক্যাবলের বৈশিষ্ট্য (Properties of Optical Fiber)

  • এর গতি আলোর গতির সমান।
  • একই সাথে একাধিক তথ্য প্রেরণ করা যায়।
  • শক্তির অপচয় হয় না বললেই চলে।
  • রাসায়নিক নিষ্ক্রিয়তা।
  • এটিতে গিগাবাইট রেঞ্জ বা তার থেকে বেশি দ্রুত গতিতে ডেটা চলাচল করতে পারে।
  • নেটওয়ার্কের ব্যাকবোন হিসেবে ফাইবার অপটিক ক্যাবল বেশি ব্যবহৃত হয় ইত্যাদি।

 

অপটিক্যাল ফাইবারের সুবিধা (Advantages of Optical fibre)

অপটিক্যাল ফাইবার দিয়ে অনেক দুরে কম সময়ে বিপুল পরিমাণ তথ্য পাঠানো যায়। অপটিক্যাল ফাইবারের আরো অনেক সুবিধার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-

  • এটি দ্রুতগতিসম্পন্ন।
  • আলোর গতিতে ডেটা ট্রান্সমিট হয়।
  • উচ্চ ব্যান্ডউইথ সুবিধা।
  • এক দেশ থেকে অন্য দেশে ডাটা ট্রান্সফার করা যায়।
  • বড় ধরণের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা যায়।
  • নেটওয়ার্ক ব্যাকবোন ব্যবহার করা যায়।
  • ডাটা পরিবহনে কম শক্তি ক্ষয় হয়।
  • মানের অবনতি এন্টিনিউয়েশন ঘটে না।
  • পরিবেশের চাপ-তাপ ইত্যাদি ডাটা চলাচলের ক্ষেত্রে কোন বাধা সৃষ্টি করতে পারে না।
  • আকারে ছোট।
  • সহজে পরিবহনযোগ্য।
  • ওজন অত্যন্ত কম।
  • বিদ্যুৎ চুম্বক প্রবাহ (EMI) হতে সম্পূর্ণ মুক্ত।
  • ডেটা সংরক্ষণের নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা বেশি ইত্যাদি।

 

অপটিক্যাল ফাইবার বা ফাইবার অপটিক ক্যাবলের অসুবিধা (Disadvantage of Optical Fibre or Fiber Optic Cables)

  • ফাইবার অপটিক ক্যাবলকে U আকারে বাঁকানো যায় না। তাই যেখানে অধিক বাঁকানোর প্রয়োজন সেখানে ফাইবার ব্যবহার করা যায় না।
  • এটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল।
  • এ ক্যাবলকে সহজে টুকরো করা যায় না।
  • অন্যান্য ক্যাবলের চেয়ে ফাইবার অপটিক ক্যাবল ইনস্টল করা তুলনামূলকভাবে কঠিন।
  • অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপন এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দক্ষ ও কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন জনবল প্রয়োজন হয় ইত্যাদি।

 

অপটিক্যাল ফাইবার বা ফাইবার অপটিক কীভাবে কাজ করে?

সবার প্রথমে এটিকে অ্যানালগ অথবা ডিজিটাল ডাটা ভোল্টেজে ট্রান্সফার করা হয়। ট্রান্সফার করার পর সেখান থেকে কারেন্টে রূপান্তর করা হয়। পরে ওই কারেন্টের মধ্যমে লাইট সোর্স (লেড আথবা ILD) থেকে আলো অপটিক্যাল ফাইবারের মধ্য দিয়ে পূর্ণ অভ্যন্তরীণ প্রতিফলনের মাধ্যমে পাঠানো হয়। এটুকু হলো প্রেরক যন্ত্রের কাজ।

এরপর আলো Optical Fiber বা অপটিক ফাইবার ক্যাবলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয় । কিন্তু এ আলো অনেক দূর পাঠালে আলোক শক্তি দুর্বল হয়ে যায়। দুর্বল যাতে না হয়ে যায় সেজন্য সিগন্যাল রিজেনারেটর ব্যবহার করা হয়। গ্রাহক যন্ত্রেও ঠিক বিপরীত কাজটা করা হয়। এভাবে Optical Fiber বা ফাইবার অপটিক কাজ করে।

 

অপটিক্যাল ফাইবারের ব্যবহার (Use of Optical fibre)

সাধারণত নেটওয়ার্কিং, টেলিযোগাযোগ, ইন্টারনেট, ক্যাবল ডিস এবং শেয়ারিং-এর কাজে এটি ব্যবহার করা হয়। এছাড়া আলোকসজ্জা, সেন্সর ও ছবি সম্পাদনার কাজেও বর্তমানে ব্যবহৃত হচ্ছে।

 

স্যাটেলাইট এবং অপটিক্যাল ফাইবারের পার্থক্য কি?

পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যোগাযোগ করতে স্যাটেলাইট ও অপটিক্যাল ফাইবার পদ্ধতি বেশি ব্যবহৃত হয়। নিচে এদের পার্থক্য আলোচনা করা হলো।

  • স্যাটেলাইট পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে ৩৬,০০০ কি.মি. উপরে অবস্থান করে তথ্য প্রেরণ করে। অপরদিকে অপটিক্যাল ফাইবার সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে তথ্য আদান-প্রদান করে।
  • স্যাটেলাইট মাইক্রোওয়েভ তরঙ্গ ব্যবহার করে তথ্য প্রেরণ করে। কিন্তু অপটিক্যাল ফাইবার আলোক সংকেত ব্যবহার করে তথ্য প্রেরণ করে।
  • স্যাটেলেইটের গতি তুলনামূলক কম। কিন্তু অপটিক্যাল ফাইবারের গতি তুলনামূলক বেশি।
  • স্যাটেলাইট তারবিহীন যোগাযোগ মাধ্যম। কিন্তু অপটিক্যাল ফাইবার তারযুক্ত যোগাযোগ মাধ্যম।
  • স্যাটেলাইট সিগনালের বিঘ্নতা ঘটে। কিন্তু অপটিক্যালের হয় না।

 

এ সম্পর্কিত আরও কিছু প্রশ্ন ও উত্তরঃ–

১। অপটিক্যাল ফাইবার কিভাবে কাজ করে? (What is optical fiber and how it is work?)

উত্তর : অপটিক্যাল ফাইবার হলো এক ধরনে পাতলা স্বচ্চ কাঁচ দিয়ে বানানো তার (Wire), যা আলোর পূর্ণঅভ্যন্তরীণ প্রতিফলনের মাধ্যমে কাজ করে।

২। অপটিক্যাল ফাইবারের সবচেয়ে ভিতরের অংশের নাম কি?

উত্তর : কোর (Core)।

৩। অপটিক্যাল ফাইবার তারের দাম কত?

উত্তর : ফাইভার ৪ কোরের দাম প্রতি মিটার ১২-১৫ টাকা এবং ২ কোরের দাম ৬ -৮ টাকা।

 

Tags :

  • অপটিক্যাল ফাইবার কত প্রকার?; অপটিক্যাল ফাইবার এর বৈশিষ্ট্য কী কী?; অপটিক্যাল ফাইবার এর প্রতিসরাঙ্ক কত?; অপটিক্যাল ফাইবারের প্রধান উপাদান কোনটি?; অপটিক্যাল ফাইবার সাধারণত কয়টি অংশ থাকে?; স্যাটেলাইট ও অপটিক্যাল ফাইবার এর মধ্যে কোনটি বেশি কার্যকর?; অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবলের সুবিধা হলো; অপটিক্যাল ফাইবার কাকে বলে?; অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে ডেটা স্থানান্তরের প্রক্রিয়া বর্ণনা কর; ফাইবার অপটিক্যাল ক্যাবল কাকে বলে?; অপটিক্যাল ফাইবারের সবচেয়ে ভিতরের অংশের নাম কি?; চিকিৎসা ক্ষেত্রে অপটিক্যাল ফাইবারের ব্যবহার। What is the basic principle of optical fibre?; What is optical fibre made of?; When was optical Fibre invented?; বাংলাদেশে অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল প্রস্তুত করে কোন প্রতিষ্ঠান?;
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

MOST POPULAR