HomeTechnologyমোবাইল ব্যাংকিং কি? মোবাইল ব্যাংকিং এর সুবিধা ও অসুবিধা কি?

মোবাইল ব্যাংকিং কি? মোবাইল ব্যাংকিং এর সুবিধা ও অসুবিধা কি?

যে পদ্ধতিতে একজন গ্রাহক মোবাইল বা ট্যাব ব্যবহার করে আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করতে পারেন তাকে মোবাইল ব্যাংকিং (Mobile banking) বলে। খুব সহজে এবং দ্রুত টাকা এক স্থান থেকে আরেক স্থানে পাঠানোর এই মাধ্যম এখন অনেকেই পছন্দ করছেন। ২০১০ সালে ডাচ-বাংলা ব্যাংক বাংলাদেশে সর্বপ্রথম মোবাইল ব্যাংকিং চালু করে। মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে নেতৃত্বের ভূমিকায় রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ‘বিকাশ’।

 

মোবাইল ব্যাংকিং এর ইতিহাস (History of Mobile Banking)

প্রথম দিকের মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবাগুলি এসএমএস ব্যবহার করেছিল, যা এসএমএস ব্যাংকিং নামে পরিচিত একটি পরিষেবা। ১৯৯৯ সালে স্মার্ট ফোন চালু হওয়ার সাথে সাথে ডাব্লুএপি সহায়তা নিয়ে ইউরোপীয় ব্যাংকগুলি সর্বপ্রথম তাদের গ্রাহকদেরকে এই প্ল্যাটফর্মে মোবাইল ব্যাংকিং সুবিধা প্রদান করতে শুরু করে।

২০১০ সালের আগে মোবাইল ব্যাংকিং প্রায়শই এসএমএস বা মোবাইল ওয়েবের মাধ্যমে পরিচালিত হত। আইফোনের সাথে অ্যাপলের প্রাথমিক সাফল্য এবং গুগলের অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের উপর ভিত্তি করে ফোনের দ্রুত বৃদ্ধির ফলে মোবাইল ডিভাইসে ডাউনলোড করা বিশেষ মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনগুলোর ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে। এর সাথে বলা হয়েছে এইচটিএমএল৫, সিএসএস৩ এবং জাভাস্ক্রিপ্ট-এর মতো ওয়েব প্রযুক্তিতে অগ্রগতির ফলে অন্যান্য ব্যাংকগুলোও পরিপূরক হিসাবে দেশীয় অ্যাপ্লিকেশনের সাহায্যে মোবাইল ওয়েব ভিত্তিক পরিষেবা চালু করেছে। এই অ্যাপ্লিকেশনগুলো জেএসপিতে একটি ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন মডিউল যেমন জে২ইই এবং অন্য আরেকটি মডিউল জে২এমই-এর ফাংশন নিয়ে গঠিত।

মাপা রিসার্চের সাম্প্রতিক একটি গবেষণা (মে ২০১২) থেকে জানা যায় যে ব্যাংকের প্রধান ওয়েবসাইট পরিদর্শনের পর এক তৃতীয়াংশেরও বেশি ব্যাংকের মোবাইল ডিভাইস সনাক্তকরণ ব্যবস্থা রয়েছে। মোবাইল সনাক্তকরণে বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটতে পারে যেমন একটি অ্যাপ স্টোরে পুনঃনির্দেশিত করা, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নির্দিষ্ট কোন ওয়েবসাইটে পুনঃনির্দেশিত করা বা ব্যবহারকারীর বেছে নেওয়ার জন্য মোবাইল ব্যাংকিং অপশনের একটি তালিকা সরবরাহ করা।

 

মোবাইল ব্যাংকিং এর সুবিধা (Advantages of mobile banking)

মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহার করে একজন গ্রাহক যেসব সুবিধাগুলো পেতে পারেন তা নিচে তুলে ধরা হলো :

  • ২৪ ঘন্টা, ৩৬৫ দিন একাউন্টে লগইন করার সুবিধা। আপনি চাইলে যেকোনো মুহূর্তে একাউন্টে লগইন করতে পারবেন।
  • একাউন্টের ব্যালেন্স জানতে পারা।
  • এক একাউন্ট থেকে অন্য একাউন্টে টাকা পাঠানো যায়। তবে বাংলাদেশে এ সুবিধা শুধু একই ব্যাংকের মধ্যে সীমাবদ্ধ।
  • নিজের একাধিক একাউন্টের মধ্যে টাকা পাঠানো যায়।
  • ইউটিলিটি বিল। যেমন– বিদ্যুৎ, গ্যাস, ফোন, পানি ইত্যাদি পরিশোধ করা যায়।
  • একাউন্টের আয়-ব্যয়, উত্তোলন ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে পারা।
  • চেক বই এর জন্য আবেদন ও চেক এর পেমেন্ট বাতিল করা যায়।
  • সুদের হার, বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার ইত্যাদি জানা যায়।

বাংলাদেশে সব ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সুবিধা নেই, তবে নিচের কয়েকটি ব্যাংক তাদের গ্রাহকদের এ সুবিধা ২০১০ সাল থেকে দিয়ে আসছে। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড, ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড, ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড, প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড। এখন সোনালী ব্যাংক লিমিটেড এ কার্যক্রমের আওতায় তার গ্রাহকদেরকে এ সুবিধা প্রদান শুরু করেছে।

 

মোবাইল ব্যাংকিং এর অসুবিধা (Disadvantage of mobile banking)

অনেক সময় পাসওয়ার্ড অন্যে জানার ফলে একাউন্টের গোপনীয়তা বজায় রাখা সম্ভব হয় না। এছাড়া কর যারা ফাঁকি দেয় তারা এ ব্যাংকিং এর সুবিধা বেশি ভোগ করতে পারে। সুতরাং সুবিধার ন্যায় অসুবিধা থাকলেও আধুনিক সমাজে মোবাইল ব্যাংকিং এর ভূমিকা অনেক গুরুত্ব বহন করে।

 

 

অনলাইন ব্যাংকিং এবং মোবাইল ব্যাংকিং এর মধ্যে পার্থক্য

অনলাইন ব্যাংকিং এবং মোবাইল ব্যাংকিং এর মধ্যে বেশ পার্থক্য রয়েছে। এগুলো নিচে তুলে ধরা হলো–

  • মোবাইল ব্যাংকিং বিদ্যমান মোবাইল সাবস্ক্রাইবার আইডেন্টিফিকেশন মডিউল নম্বর থেকেই ব্যাংক হিসেব নাম্বার নির্ধারিত হয়।
  • অপরপক্ষে অনলাইন ব্যাংকিং আপনার মূল ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার বহন করে।
  • মোবাইল ব্যাংকিং মোবাইলের তরঙ্গ (নেটওয়ার্ক) ব্যবহার করেই কাজ করতে পারে।
  • অনলাইন ব্যাংকিং ব্যবহার করতে হলে অবশ্যই ইন্টারনেটে যুক্ত থাকতে হবে।
  • মোবাইল ব্যাংকিংয়ে যে কোন মুহূর্তে যে কোন জায়গায় টাকা পাঠানো যায়।
  • অনলাইন ব্যাংকে যে কোন স্থানে টাকা পাঠানো যায় কিন্তু তার আগে বেনিফিশিয়ারি এ্যড করে নিতে হয়।
  • অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিং এর যেকোনো মুহূর্তে টাকা টান্সফার করা যায়, কিন্তু মোবাইল ব্যাংকিং থেকে অনলাইন ব্যাংকিং এ টাকা পাঠানো দুরূহ।
  • অনলাইন ব্যাংকিংয়ে মানিট্রান্সফার অঙ্ক অনেক বেশি, কিন্তু মোবাইল ব্যাংকিং এর লিমিট সীমিত।
  • মোবাইল ব্যাংকিং এ টাকা এনক্যাশ করতে এজেন্ট অর্থাৎ তৃতীয় পক্ষ লাগে, কিন্তু অনলাইন ব্যাংকিংয়ে এটা লাগেনা।

 

Tags :

  • মোবাইল ব্যাংকিং এর সুবিধা
  • বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং কয়টি
  • মোবাইল ব্যাংকিং কি
  • বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং চালু হয় কবে
  • মোবাইল ব্যাংকিং উপায়
  • বিশ্বের প্রথম মোবাইল ব্যাংকিং চালু হয় কোন দেশে
  • মোবাইল ব্যাংকিং রচনা
  • মোবাইল ব্যাংকিং এর গুরুত্ব
  • মোবাইল ব্যাংকিং প্রচলন হয় কোন যুগে
  • মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাপ
  • মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবসা
  • মোবাইল ব্যাংকিং ও অনলাইন ব্যাংকিং এর পার্থক্য
  • মোবাইল ব্যাংকিং কেন জনপ্রিয়
  • মোবাইল ব্যাংকিং সমূহ
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

MOST POPULAR