যেসব শব্দ একটি বাক্যের সঙ্গে অন্য একটি বাক্যের বা বাক্যের অন্তর্গত একটি পদের সঙ্গে অন্য পদের সংযোজন, বিয়োজন বা সংকোচন ঘটায় তাকে যোজক বলে। যোজকের কাজ হলো একাধিক শব্দ, পদবন্ধ, বাক্যকল্প বা বাক্যকে জুড়ে দেওয়া বা সম্পর্কিত করা। যেমন–
- আমি গান গাইব আর তুমি নাচবে।
- এতগুলো বই আর খাতা ওই ব্যাগে ধরবে?
- গ্লাসটা ভালো করে ধরো, নইলে ভেঙে যাবে।
যোজক কত প্রকার ও কি কি?
অর্থ এবং সংযোজনের ধরন ও বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী যোজক শব্দ পাঁচ প্রকার। এগুলো নিচে আলোচনা করা হলো–
ক. সাধারণ যোজক : যে যোজক দ্বারা একাধিক শব্দ, বাক্য বা বাক্যাংশকে সংযুক্ত করা যায় তাকে সাধারণ যোজক বলে। আর, এবং, ও, বা, কিংবা তথা এগুলো সাধারণ যোজক। যেমন–
- দুটি শব্দের সংযোগক : আমি ও আমার বাবা বাজারে এসেছি। সুখ ও সমৃদ্ধি কে না চায়? অলি আর কলি একে অন্যের বন্ধু।
- দুটি বাক্যাংশের সংযোগ : আমাদের সমাজ আর ওদের সমাজ এক রকম নয়।
- দুটি বাক্যের সংযোগ : জলদি দোকানে যাও এবং একটা পাউরুটি কিনে আনো।
খ. বিকল্প যোজক : যে যোজক দ্বারা একাধিক শব্দ, বাক্য বা বাক্যাংশের মধ্যে বিকল্প বোঝায় তাকে বিকল্প যোজক বলে। যেমন– তুমি বা তোমার বন্ধু যে কেউ এলেই হবে। মৌসুমী হয় ট্রেনে, না হয় বাসে যাবে। সারা দিন খুঁজলাম, অথচ কোথাও গরুটা পেলাম না।
গ. বিরোধমূলক যোজক : যে যোজক দুটি বাক্যের সংযোগ ঘটিয়ে দ্বিতীয়টির সাহায্যে প্রথম বাক্যের বক্তব্যের সংশোধন বা বিরোধ নির্দেশ করে, তাকে বিরোধমূলক যোজক বলে। যেমন- এত বৃষ্টি হলো, তবু গরম গেল না। তোমাকে খবর দিয়েছি, কিন্তু তুমি আসোনি। আমি চিঠি দিয়েছি কিন্তু উত্তর পাইনি।
ঘ. কারণবাচক যোজক : যে যোজক এমন দুটি বাক্যের মধ্যে সংযোগ ঘটায়, যার একটি অন্যটির কারণ নির্দেশ করে, তাকে কারণবাচক যোজক বলে। যেমন– জিনিসের দাম বেড়েছে, কারণ হরতাল-অবরোধ চলছে। খুব ঠাণ্ডা লেগেছে, তাই আইসক্রিম খাচ্ছি না। আমি যাইনি, কারণ তুমি দাওয়াত দাওনি।
ঙ. সাপেক্ষ যোজক : যে যোজক একে অন্যের পরিপূরক হয়ে বাক্যে ব্যবহৃত হয়, তাকে সাপেক্ষ বা শর্তবাচক যোজক বলে। প্রথাগত ব্যাকরণে এগুলোকে বলে নিত্যসম্বন্ধীয় অব্যয়। যেমন : যত গর্জে তত বর্ষে না। যথা ধর্ম তথা জয়। যদি টাকা দাও তবে কাজ হবে।