HomeComputerজনপ্রিয় ৫টি অপারেটিং সিস্টেম (Best 5 Operating System in Bengali)

জনপ্রিয় ৫টি অপারেটিং সিস্টেম (Best 5 Operating System in Bengali)

চাহিদা ও ব্যবহারকারীদের মানের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন কম্পিউটারে বিভিন্ন অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করা হয়। নিম্নে কয়েকটি অপারেটিং সিস্টেমের নাম ও সংক্ষিপ্ত বর্ননা তুলে ধরা হলো। এই টিটোরিয়াল থেকে জানতে পারবেন কোন অপারেটিং সিস্টেম আপনার জন্য উপযোগী। তাহলে চলুন জেনেনি ৫টি জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম সম্পর্কে।

 

১. ডস (DOS-Disk Operating Systen)

৭০ এর দশকে মাইক্রোসফট কর্পোরেশনের তৈরি করা এমএস ডস (MS DOS) এবং আইবিএম (IBM) কোম্পানির তৈরি করা পিসি ডস (PC DOS) ছিল সর্বাধিক জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম। ডস এর উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বৈশিষ্ট্য হলোঃ

  • ডস একটি বর্ণভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম বলে কী-বোর্ড দিয়ে কমান্ড লিখে লিখে কাজ করতে হয়।
  • সিরিয়াল প্রসেসিং অপারেটিং সিস্টেম অর্থাৎ এক সাথে একাধিক প্রোগ্রাম পরিচালনা করা যায় না।
  • কেবলমাত্র একক ইউজার এবং একক প্রসেসর সমর্থন করে।
  • আর একটি বড় অসুবিধা হচ্ছে ডস কেবলমাত্র ৬৪০ কিলোবাইট ০.৬৪ মেগাবাইট র‌্যাম (RAM) মেমোরি সাপোর্ট করে। যেখানে আজকের কম্পিউটারগুলোতে অনেক বেশি পরিমাণ র‌্যাম থাকে।
  • গ্রাফিক্স, মাল্টিমিডিয়া, এনিমেশন, ওয়েব ডিজাইন এসব নিয়ে কাজ করার সুবিধা কম।

 

২. ম্যাকিনটোশ অপারেটিং সিস্টেম বা ম্যাক ওএস (MAC OS)

এটি অ্যাপল কোম্পানির তৈরি মেকিনটোশ কম্পিউটার পরিচালনাকারী অপারেটিং সিস্টেম। এজন্য সংক্ষেপে ম্যাক ওএস বলা হয়। চিত্রভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে ম্যাক ওএস প্রথমে বাজারে আসে এবং জনপ্রিয়তা লাভ করে। এতে মাউস, পুলডাউন মেনুসহ এমন সহজ গ্রাফিক্যাল বা চিত্রভিত্তিক ইউজার ইন্টারফেস আছে যার সাহায্যে কম্পিউটার বিষয়ে অতি সাধারণ জ্ঞান নিয়ে যে কেউ কম্পিউটারে কাজ করতে পারবে। এজন্য প্রকাশনা শিল্পে ম্যাক ওএস পরিচালিত ম্যাকিনটোশ কম্পিউটারের ব্যবহার জনপ্রিয়। ম্যাক ওএস এর উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বৈশিষ্ট্য হলোঃ

  • ম্যাক ওএস এ গ্রাফিক্স ও রঙের ব্যবহার অত্যন্ত চমৎকার।
  • চিত্রভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম হওয়ায় এর ব্যবহার করা খুব সহজ।
  • ম্যাক ওএস কেবল অ্যাপল কম্পিউটারে ব্যবহার করা যায়।

 

৩. ইউনিক্স (UNIX)

সবচেয়ে পুরাতন অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে ইউনিক্স পরিচিত। ১৯৬৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বেল ল্যাবরেটরিতে কিন টমসন এবং Dennis Ritchie প্রথম ইউনিক্স অপারেটিং সিস্টেম রচনা করেন। মূলত অগ্রসর গবেষণা ও উন্নয়ন কাজের জন্য ইউনিক্স অপারেটিং সিস্টেম তৈরি করা হয়। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে প্রচার না করে বেল ল্যাবরেটরি থেকে ইউনিক্স অপারেটিং সিস্টেমকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয় এর আরও উন্নয়নের জন্য। নেটওয়ার্ক সিস্টেমে ব্যবহার করার জন্য প্রথম থেকেই ইউনিক্স একটি শক্তিশালী ও কার্যকরি অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে পরিচিত। টেলিকমিউনিকেশন শিল্পের বিকাশে ইউনিক্স অপারেটিং সিস্টেম কার্যকর ভূমিকা রেখেছে। ইউনিক্স প্রায় সবধরনের কম্পিউটারেই চলে। ইউনিক্স এর উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বৈশিষ্ট্য হলোঃ

  • সুপার কম্পিউটার থেকে শুরু করে পিসি পর্যন্ত সকল কম্পিউটারেই ইউনিক্স ব্যবহার করা যায।
  • মাল্টিটাস্কিং এবং মান্টিইউজার এপ্লিকেশনের জন্য এটি খুবই উপযোগী।
  • ইউনিক্স একটি সিঙ্গেল সিপিইউ এর সাথে একাধিক কী-বোর্ড এবং মনিটর সংযােগ করে অনেক ব্যবহারকারীকে একত্রে কাজ করার সুযেগ দেয়।

 

৪. লিনাক্স (LINUX)

ইউনিক্স অপারেটিং সিস্টেম নিয়ে কাজ করার সময় ফিনল্যান্ডের যুবক লিনাস টারভোল্ডাস লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম উদ্ভাবন করেন। লিনাক্সের কোনো একক মালিক নাই। এটি বিনামূল্যে পাওয়া যায়। একে ওপেন সোর্স অপারেটিং সিস্টেম বলে। ফ্রি বা নামমাত্র মূল্যে পাওয়া যায় বিধায় দিন দিন এর ব্যবহার এতটাই বৃদ্ধি পাচ্ছে যে এটি অচিরেই জনপ্রিয় হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করে সাধারণ পিসি দিয়ে সার্ভার পিসির কাজ করা যায়। Linux লিনাক্স এর বৈশিষ্ট্যঃ

  • লিনাক্সের কোন একক মালিক নেই। একে ওপেন সোর্স অপারেটিং সিস্টেম বলে। শত শত প্রোগ্রামারদের নিবেদিত প্রচেষ্টার ফসল হিসেবে লিনাক্স আজ সুপ্রতিষ্ঠিত।
  • লিনাক্সের সোর্সকোড উন্মুক্ত বলে একজন দক্ষ কম্পিউটার প্রোগ্রামার এর সংশোধন এবং উন্নয়ন ঘটাতে সক্ষম যা অন্য কোন অপারেটিং সিস্টেমে সম্ভব নয়।
  • লিনাক্সের ডকুমেন্টেশন বেশ সমৃদ্ধ। লিনাক্স ইনস্টল করা থেকে শুরু করে পেরিফেরাল সংযেজনসহ যাবতীয় বিষয়ের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ রয়েছে।
  • লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করে সাধারণ পিসি দিয়ে সাভার পিসির কাজ করা যায়।

 

৫. উইন্ডোজ (WINDOWS)

ম্যাকওএস একটি চিত্রভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম এবং এর জনপ্রিয়তার কারণে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে আশির দশকের মাঝামাঝি মাইক্রোসফট কর্পোরেশন চিত্রভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম তৈরির পরিকল্পনা করে এবং ১৯৮৫ সালে উইন্ডোজ ১.০ ভার্সন বাজারে ছাড়ে। তাদের বর্ণভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম ডস এসময়ে বহুলভাবে ব্যবহৃত হচ্ছিল। তাদের প্রথম ও দ্বিতীয় ভার্সন তেমন জনপ্রিয় হয়ে উঠতে না পারলেও ১৯৯০ সালে উইন্ডোজ ৩.০ ভার্সন কিছুটা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। আইবিএম কম্পিউটারের জন্য উইন্ডোজ নিজেকে আদর্শ করে উপস্থাপন করতে পারে এর পরবর্তী ভার্সন উইন্ডোজ ৩.১ থেকে। এরপর বাজারে আসে উইন্ডোজের পরবর্তী ভার্সন উইন্ডোজ ৩.২ এবং তার পরের বছর উইন্ডেজ ৩.৩।

উইন্ডোজ ৯৫ (Windows 95)

Windows 95 হচ্ছে একটি ৩২ বিটের স্বয়ংসম্পূর্ণ অপারেটিং সিস্টেম। ১৯৯৫ সালের ২৪ আগস্ট এটি বাজারে আসে এবং সারা বিশ্বজুরে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। উইন্ডোজ ৯৫ তে সর্বপ্রথম  Start menu বা  Start Button ব্যবহার করা হয়।

উইন্ডোজ ৯৮ (Windows 98)

উইন্ডোজ ৯৮ অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজ ৯৫ অপারেটিং সিস্টেমের একটি আপগ্রেড বা উন্নত ভার্সন। উইন্ডোজ ৯৫ অপারেটিং সিস্টেমের সবকিছুই উইন্ডোজ ৯৮ অপারেটিং সিস্টেমে আছে এবং আরও কিছু নতুন বৈশিষ্ট্য তার সাথে যুক্ত হয়েছে।

উইন্ডোজ এনটি/২০০০ সার্ভার

১৯৯৩ সালে মাইক্রোসফট কর্পোরেশন উইন্ডোজ এনটি বাজারে ছাড়ে। এনটি (NT) কথাটির অর্থ হচ্ছে নতুন টেকনোলজি (New Technology)। মাইক্রোসফট কর্পোরেশন একে সার্ভার ও ওয়ার্কস্টেশনে ব্যবহারের জন্য রূপান্তর করে। এর নাম হয় উইন্ডোজ এনটি সার্ভার। উইন্ডোজ ২০০০ সার্ভার মাইক্রোসফটের আরেকটি সার্ভার ভার্সন অপারেটিং সিস্টেম। উইন্ডোজ এনটি সার্ভারের মতো এটিও ছোট ও মাঝারি ক্ষেত্রে নেটওয়ার্ক করার জন্য ব্যবহার করা হয়।

উইন্ডোজ ২০০০ প্রফেশনাল ও মিলেনিয়ামঃ উইন্ডোজ ৯৮ এর পর মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ২০০০ প্রফেশনাল ও মিলেনিয়াম বা ‘এমই’ নামের দুটি ভার্সন বের করে। এমই ভার্সনটি স্বল্পকাল স্থায়ী হয় এবং এর পরই এক্সপি বাজারে আসে। কিন্তু এনটি এর টেকনোলজিতে তৈরি উইন্ডোজ ২০০০ প্রফেশনাল নেটওয়ার্কিং এর ক্ষেত্রে এখনও জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম।

উইন্ডোজ এক্সপিঃ উইন্ডোজ পরিবারের সর্বশেষ ভার্সন হিসেবে উইন্ডোজ এক্সপি অপারেটিং সিস্টেম বাজারে ছাড়ার আগে মাইক্রোসফট অনেক প্রচার প্রচারণা করে। এনটি টেকনোলজি ব্যবহার করে তৈরি করা হয় উইন্ডোজ এক্সপি। উইন্ডোজ এক্সপিতে গ্রাফিক্স ও রঙের ব্যবহার চমৎকার। এতে নেটওয়ার্ক ও অনলাইনের মাধ্যমে আপগ্রেডের ব্যবস্থা আছে। এক্সপিতে একসাথে একাধিক ইউজার তৈরি করে রাখা যায় এবং প্রত্যেক ইউজারের ফাইল, ফোল্ডার ও ডকুমেন্ট আলাদা আলাদা করে সংরক্ষণ করা যায়।

উইন্ডোজ ভিসতাঃ উইন্ডোজ এক্সপি এর পরে মাইক্রোসফট কর্পোরেশন রিলিজ করে অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজ ভিসতা। কাঁচের মতো স্বচ্ছ আর অভিজাত গ্রাফিক্সের সমন্বিত ইন্টারফেস, উচ্চতর সার্চিং ও ফাইল অর্গানাইজেশন টুল, সম্পূর্ন মাল্টিমিডিয়া নির্ভর কোলাবোরেশন স্যুট এবং সর্বোপরি আপাদমস্তক নিরাপত্তা বেষ্টনিতে আবদ্ধতা নতুন উইন্ডোজ ভিস্তা অপারেটিং সিস্টেমের স্বাভাবিক স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য। উইন্ডোজ ভিস্তা অপারেটিং সিস্টেমে মাইক্রোসফট ইউজারের সিস্টেমের নিরাপত্তা দেবার ব্যাপক ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

উইন্ডোজ ৭ঃ ইন্টারফেসে বিশাল পরিবর্তন ছাড়াও একে আগের সব ভার্সন থেকে সহজ করা হয়েছে। উইন্ডোজ ভিসতায় যে উচ্চতর সিকিউরিটি সিস্টেম মাইক্রোসফটের ডেভেলপাররা যুক্ত করেছিলেন তা সেভেনে এসে আরও শক্তিশালী করা হয়েছে। উইন্ডোজ সেভেনে একটি নতুন ভিউ ফাইল স্টোরেজ স্ট্র্যাকচার ডেভেলপ করা হয়েছে যার নাম দেয়া হয়েছে লাইব্রেরি। এর মাধ্যমে একই উইন্ডো হতে বিভিন্ন স্টোরেজ লোকেশনে অ্যাকসেস করা যায়।

উইন্ডোজ ৮ঃ উইন্ডোজ ৭ এর পরবর্তী ভার্সন হলো উইন্ডোজ ৮। এটি হোম এবং বিজনেস ডেস্কটপ, ল্যাপটপ, মাইক্রোসফট ট্যাবলেট পিসি এবং হোম থিয়েটার পিসির জন্য এক সারি অপারেটিং সিস্টেম। এতে মাইক্রোসফটের মেট্রো ডিজাইন ল্যাংগুয়েজ ব্যবহার করে মাল্টিপল ইনপুট অপশন যেমন উইন্ডোজ ফোন এবং এক্সবক্স এর মতো টাচস্ক্রিন ইনপুট ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এ ভার্সনের নাম দেয়া হয়েছে Windows RT এবং এতে ARM প্রসেসর আর্কিটেকচার যুক্ত করা হয়েছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

MOST POPULAR