HomeComputerমাইক্রোকম্পিউটার (Microcomputer) কাকে বলে?

মাইক্রোকম্পিউটার (Microcomputer) কাকে বলে?

 

ছোট আকারের কম্পিউটারকে মাইক্রোকম্পিউটার (Microcomputer) বলে। অর্থাৎ, আমরা দৈনন্দিন জীবনে যে কম্পিউটার ব্যবহার করে থাকি তাকেই মাইক্রো কম্পিউটার বলে। একে পার্সোনাল কম্পিউটার (Personal Computer) বা বিজনেস কম্পিউটারও বলা হয়।

মিনিকম্পিউটারের সূচনার পর মাইক্রোকম্পিউটারও বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠে।মিনিকম্পিউটারের অনেক আলাদা আলাদা যন্ত্রাংশের পরিবর্তে মাইক্রোকম্পিউটারে ব্যবহার শুরু হয় মাইক্রোচিপের।

মাইক্রোপ্রসেসর এবং সেমিকন্ডাক্টর মেমোরীর মূল্য ধীরে ধীরে হ্রাস পাওয়ায় মাইক্রোকম্পিউটারের মূল্য হ্রাস পেতে থাকে। যার ফলে এটি ব্যবহার করা সবার জন্য সহজ হয়ে উঠে।

 

মাইক্রো কম্পিউটারের প্রকারভেদ (Types of Microcomputer)

বর্তমানে বিভিন্ন ধরণের মাইক্রো কম্পিউটার রয়েছে। যেমন:

১. ডেস্কটপ মাইক্রো কম্পিউটার।

২. নোটবুক বা ল্যাপটপ মাইক্রো কম্পিউটার

৩. ট্যাবলেট মাইক্রো কম্পিউটার

৪. স্মার্টফোন মাইক্রো কম্পিউটার

৫. পামটপ মাইক্রো কম্পিউটার

 

১. ডেস্কটপ মাইক্রো কম্পিউটার

ডেস্কটপ মাইক্রোকম্পিউটার ব্যবহারকারীরা কোনো বাধা ছাড়াই অল্প সময়ে বেশ কিছু জটিল কাজ সম্পাদন করতে পারে। এই কম্পিউটারগুলো সহজে টেবিলে রাখা যায় এবং এটি বিভিন্ন উপাদানের যেমন কীবোর্ড, মাউস, মনিটর এবং সিস্টেম ইউনিটের সাথে তারের মাধ্যমে সংযুক্ত থাকে। ডেস্কটপ মাইক্রো কম্পিউটারগুলো Wi-Fi বা LAN তারের মাধ্যমে ইন্টারনেট সংযোগ করতে সক্ষম।

কিন্তু ডেস্কটপ মাইক্রোকম্পিউটারগুলো অন্যন্য মাইক্রো কম্পিউটার যেমন ল্যাপটপ, পিডিএ, স্মার্টফোন এবং নোটবুক এর তুলনায় কিছু ত্রুটি রয়েছে। কারণ এই কম্পিউটারগুলো আপনি চাইলে যেকোন জায়গায় বহন করতে পারবেন না।

 

২. ল্যাপটপ মাইক্রো কম্পিউটার

ল্যাপটপ কম্পিউটারগুলো ‘‘নোটবুক’’ নামেও পরিচিত। ল্যাপটপ মাইক্রো কম্পিউটারগুলো ডেস্কটপ কম্পিউটারের মতো বিভিন্ন জটিল ফাংশন সম্পাদন করতে সক্ষম এবং এটি অভ্যন্তরীণ ব্যাটারির পাশাপাশি যেকোন জায়গায় বহন করা যায়। এই মাইক্রোকম্পিউটারগুলো ডেস্কটপ কম্পিউটারের চেয়ে একটু বেশি ব্যয়বহুল কারণ এতে বিভিন্ন ছোট আকারের উপাদান অন্তর্নির্মিত থাকে যেমন একটি কীবোর্ড, টাচপ্যাড এলসিডি ডিসপ্লে এবং অন্যান্য অভ্যন্তরীণ অংশ যেমন (মাদারবোর্ড, সিপিইউ, হার্ড ডিস্ক, সিডি রম) ইত্যাদি।

 

৩. ট্যাবলেট মাইক্রো কম্পিউটার

ট্যাবলেট মাইক্রো কম্পিউটারগুলো হ্যান্ডহেল্ড পোর্টেবল ডিভাইস এবং একটি টাচ স্ক্রিন ইন্টারফেস নিয়ে গঠিত। এগুলো নোটবুক ডিভাইসের তুলনায় আকারে ছোট কিন্তু স্মার্টফোনের চেয়ে বড়। ব্যবহারকারীরা এর LCD স্ক্রিনে ইনপুট ও আউটপুট ক্রিয়াকলাপ সম্পাদন করতে পারে। ট্যাবলেট মাইক্রো কম্পিউটার ইন্টারনেট ব্যবহার করার জন্য Wi-Fi এবং অন্যান্য সেলুলার নেটওয়ার্ক ব্যবহারে সক্ষম।

এই ডিভাইসে বিভিন্ন এপ্লিকেশন যেমন মাইক্রোসফট ওয়ার্ড এবং এক্সেল, পাওয়ারপয়েন্ট, পটোশপের মতো বেশ কয়েকটি অ্যাপ্লিকেশন চালানো যায়। এগুলোতে এক্সটার্নাল কীবোর্ড ব্যবহার করে বিভিন্ন ইনপুট দেওয়া যায়। বাজারে কিছু ধরনের ট্যাবলেট পাওয়া যায় যেমন অ্যাপলের আইপ্যাড, মাইক্রোসফটের সারফেস বা অ্যামাজনের কিন্ডল ফায়ার ইত্যাদি।

 

৪. স্মার্টফোন (Smartphone)

স্মার্টফোন হল একটি টাচ স্ক্রিন মোবাইল ফোন যা কম্পিউটারের মতো বিভিন্ন উন্নত ফাংশন যেমন অপারেটিং সিস্টেম ইনস্টল করা, বিভিন্ন অ্যাপ ডাউনলোড করা, ইন্টারনেট অ্যাক্সেসসহ আরও অনেক কাজ করতে সক্ষম।

 

৫. PDA মাইক্রো কম্পিউটার

PDA এর পূর্ণরুপ হল Personal Digital Assistant। এটি একটি হ্যান্ডহেল্ড ডিভাইস যা সহজে বহনযোগ্য। এটি ট্যাবলেট, পামটপ এবং স্মার্টফোনের মতো আকারে ছোট হয়। ইনপুট- আউটপুট উভয় কাজ সম্পাদনের জন্য এটিতে একটি ছোট LCD স্ক্রিন রয়েছে। পিডিএ ল্যাপটপ, ডেস্কটপ এবং অন্যান্য কম্পিউটারের সাথে ল্যান কেবল, ব্লুটুথ, ওয়াই-ফাই এবং রেডিও তরঙ্গের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে সক্ষম।

 

৬. Palmtop মাইক্রো কম্পিউটার

পামটপ মাইক্রোকম্পিউটার ‘‘পকেট কম্পিউটার’’ নামে পরিচিত। এটি পিডিএ-র তুলনায় ছোট হওয়ায় খুব সহজে বহন ও কম শক্তি খরচ করে। পামটপ কম্পিউটার ইনপুট নির্দেশনার জন্য কীবোর্ডের পরিবর্তে একটি স্টাইলাস পেন স্টিক ব্যবহার করে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে উইন্ডোজ সিই অপারেটিং সিস্টেমগুলো পামটপ কম্পিউটারগুলোতে ব্যবহৃত হয়।

 

মাইক্রো কম্পিউটারের ব্যবহার (Use of Microcomputer)

বিভিন্ন ক্ষেত্রে মাইক্রো কম্পিউটারের ব্যবহার হয়ে থাকে। যেমেন:

  • মাইক্রোকম্পিউটার ব্যবসার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বর্তমানে এই কম্পিউটার ব্যবহারের কারণে ব্যাপক কাগজপত্র হ্রাস পেয়েছে।
  • উন্নত গ্রাফিক ডিজাইন, আর্কিটেকচার ফার্ম, ফিল্ম ইন্ড্রাস্ট্রিতে এটির ব্যবহার বেড়ে চলছে।
  • ছোট ক্লিনিক এবং হাসপাতালে রোগীর সমস্ত রেকর্ড রাখতে মাইক্রোকম্পিউটারগুলো খুব কার্যকর। এক্স-রে মেশিন এবং ম্যাগনেটিক রেজোন্যান্স ইমেজিং (MRI) ডিভাইসের মতো অত্যাধুনিক সরঞ্জামে এই কম্পিউটারগুলো ব্যবহার করা যায়।
  • প্রজেক্টরের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদান প্রক্রিয়ায় মাইক্রোকম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।
  • PDA, ট্যাবলেট, পামটপ এবং স্মার্টফোনের মতো মোবাইল কম্পিউটিং ডিভাইসে ব্যবহারের কারণে মাইক্রোকম্পিউটারগুলো দিনদিন জনপ্রিয় হচ্ছে। ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কের সাহায্যে এই ডিভাইসগুলো যে কোনও সময় এবং যে কোনও জায়গায় ইন্টারনেট অ্যাক্সেস করতে পারে।
  • গেম খেলা, গান শোনা, এবং সিনেমা দেখা
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

MOST POPULAR