HomeBlogজলবায়ু বলতে কী বোঝায়? জলবায়ুর উপাদানসমূহ কি কি?

জলবায়ু বলতে কী বোঝায়? জলবায়ুর উপাদানসমূহ কি কি?

কোন স্থানের ৩০ বছরের বেশি সময়ের আবহাওয়া অর্থাৎ বায়ু, তাপ, বৃষ্টিপাত প্রভৃতির গড়কে জলবায়ু বলে।

বিভিন্ন কারণে বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে প্রকৃতি ও পরিবেশ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

কোনো অঞ্চলের বায়ুর তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, বায়ুর চাপ, বায়ু প্রবাহ, বৃষ্টিপাত, তুষারপাত, ঝড়, বায়ুপুঞ্জ, মেঘাচ্ছন্নতা ইত্যাদির দীর্ঘদিনের সামগ্রিক রূপকে ঐ স্থানের জলবায়ু বলা হয়। মূলতঃ কোন স্থানের ২৫ – ৩০ বছরের দৈনন্দিন আবহাওয়া পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে সে স্থানের জলবায়ু নির্ধারণ করা হয় বা এ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

আবহাওয়ার মতো জলবায়ুরও প্রধান উপাদানগুলো হচ্ছে বায়ুর তাপ, চাপ, আর্দ্রতা, বৃষ্টিপাত ইত্যাদি। আর এ উপাদানগুলোর নিয়ন্ত্রণকারী নিয়ামকসমূহ হচ্ছে সমুদ্র স্রোত, অক্ষাংশ, ভূ-পৃষ্ঠের উচ্চতা, সমুদ্র হতে দূরত্ব, বায়ু প্রবাহের দিক ইত্যাদি।

কোন স্থানের আবহাওয়া ও জলবায়ুর এ উপাদানসমূহ এবং এদের নিয়ন্ত্রণকারী নিয়ামকসমূহের পরিবর্তনের সাথে সাথে উক্ত স্থানের আবহাওয়া ও জলবায়ুরও পরিবর্তন ঘটে।

 

জলবায়ুর উপাদানসমূহ

কতকগুলো উপাদানের ওপর ভিত্তি করে কোন স্থানের জলবায়ু গড়ে ওঠে। নিম্নে জলবায়ুর উপাদানগুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-

১. তাপমাত্রা;

২. বায়ুর চাপ;

৩. বায়ুর গতি;

৪. বায়ুর আদ্রতা ও শুষ্কতা;

৫. বৃষ্টিপাত।

নিচে এগুলো ব্যাখ্যা করা হলো—

  • তাপমাত্রা : তাপমাত্রার পরিমাপের ওপর কোনো স্থানের জলবায়ু বহুলাংশে নির্ভরশীল। তাপমাত্রা বেশি হলে দেশটি উষ্ণতম জলবায়ু উপভোগ করে, আবার তাপমাত্রা খুব কম বা মধ্যম হলে দেশটিতে যথাক্রমে মেরুদেশীয় অথবা নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ুর সৃষ্টি হয়।
  • বায়ুর চাপ : বায়ুর চাপ জলবায়ুর একটি উল্লেখযোগ্য উপাদান। বিভিন্ন স্থানে চাপের মধ্যে পার্থক্য থাকে বলে আবহাওয়া ও জলবায়ুর মধ্যেও পার্থক্য হয়ে থাকে।
  • বায়ুর গতি : বায়ুর গতিও আবহাওয়া ও জলবায়ুর ওপর যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করে থাকে। সমুদ্র হতে জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু কোনো অঞ্চলের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলে সে অঞ্চলে বৃষ্টিপাত হয় এবং তাপ হ্রাস পায়। কিন্তু স্থলভাগ হতে আগত বায়ুর প্রভাবে তাপ হ্রাস পায় না। এ বায়ু শুষ্ক হলে এর দ্বারা বৃষ্টিপাত হয় না।
  • বায়ুর আর্দ্রতা : আর্দ্রতাও আবহাওয়া ও জলবায়ুর একটি উল্লেখযোেগ্য উপাদান। বায়ুতে জলীয় বাষ্পের উপস্থিতিকে বায়ুর আর্দ্রতা বলে। আর্দ্রতার প্রভাবে বৃষ্টিপাত ঘটে। বায়ু আর্দ্র হলে জলবায়ু শীতল হয় এবং বায়ুর শুষ্কতা জলবায়ুকে উষ্ণ করে তোলে।
  • বৃষ্টিপাত : বৃষ্টিপাত আবহাওয়া ও জলবায়ুর একটি প্রধান উপাদান। কোনো স্থানে বৃষ্টিপাত বেশি হলে সেখানকার জলবায়ু আর্দ্র থাকে এবং বৃষ্টিপাত কম হলে জলবায়ু শুষ্ক হয়।

 

জলবায়ুর নিয়ামক (Factors of Climate)

পৃথিবীর সব অঞ্চলের জলবায়ু একই রকম নয়। এর কোনো অঞ্চল উষ্ণ এবং কোনো অঞ্চল শীতল। আবার কোনো স্থান বৃষ্টিবহুল এবং কোনো স্থান বৃষ্টিহীন। কিছু ভৌগোলিক বিষয়ের পার্থক্যের কারণে স্থানভেদে জলবায়ুর এরকম পার্থক্য দেখা যায়। এই বিষয়গুলোকে জলবায়ুর নিয়ামক বলে।

 

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব

বর্তমানে বিভিন্ন কারণে বিশ্বের জলবায়ু পাল্টে যাচ্ছে। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে মানবসৃষ্ট দূষণ, শিল্প কলকারখানা, যানবাহনের ধোঁয়া ইত্যাদি। এর ফলে তাপমাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর অতিরিক্ত তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলে একদিকে বরফ গলে যাচ্ছে আর অন্যদিকে জলাশয় শুকিয়ে যাচ্ছে। এর প্রভাবে নানারকম সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। এর কয়েকটি হলো–

  • গড় তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে।
  • অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি হচ্ছে।
  • ঘূর্ণিঝড়ের প্রকোপ বাড়ছে।
  • ভয়াবহ বন্যা হচ্ছে।
  • কৃষিজমির ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
  • গাছপালা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।
  • পশু-পাখির ক্ষতি হচ্ছে।
  • ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে ইত্যাদি।
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments