HomeChemistryফুয়েল সেল কি? ফুয়েল সেল কত প্রকার?

ফুয়েল সেল কি? ফুয়েল সেল কত প্রকার?

 

তোমরা নিশ্চয় লক্ষ্য করে থাকবে আমরা ঘরে বাইরে, গৃহস্থালীর কাজে, গাড়িতে, শিল্পকারখানায় নানা ধরনের ব্যাটারি বা তড়িৎকোষ ব্যবহার করে থাকি। এর কোন কোনটি ব্যবহার করতে করতে ফুরিয়ে গেলে ফেলে দিতে হয়। আর রিচার্জ করা যায় না। যেমন ড্রাইসেলগুলো। এদের নাম প্রাইমারী সেল। আবার কিছু কিছু সেল বার বার রিচার্জ করে এর কর্মক্ষমতা ফিরিয়ে আনা যায়। যেমন, গাড়িতে ব্যবহৃত লেড স্টোরেজ সেল। এদেরকে সেকেন্ডারী সেল বলে।

 

ফুয়েল সেল একটি বিশেষ ধরনের প্রাইমারী সেল। এ সেলে যেসব রাসায়নিক দ্রব্য তড়িৎ উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত হয় সেগুলোর কার্যকারিতা শেষ হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এগুলোকে সরিয়ে নতুন রাসায়নিক দ্রব্য দেয়া হয়। এ কাজটি অবিরাম চলতে থাকে।

 

ফুয়েল সেল বা জ্বালানি কোষ হলাে এমন একটি ব্যবস্থা, যা জ্বালানি বা ফুয়েলের রাসায়নিক শক্তিকে বৈদ্যুতিক শক্তিতে রূপান্তরিত করে। এই সেলে ফুয়েলটি একটি জারক পদার্থের সাথে (যথা- অক্সিজেন অথবা অন্যান্য জারক) বিক্রিয়া ঘটায়। ফুয়েল সেলে প্রধানত হাইড্রোজেন গ্যাস ব্যবহৃত হয়। তবে হাইড্রোকার্বন যথা প্রাকৃতিক গ্যাসও ব্যবহার করা যায়। বর্তমানে ফুয়েল সেলে বিভিন্ন অ্যালকোহল যথা মিথানলও ব্যবহৃত হচ্ছে। ফুয়েল সেলে শক্তির উৎস ফুয়েল বাহির হতে সেলে আনা হয়। সেলে যে দুটি তড়িৎদ্বার ব্যবহৃত হয় তা ফুয়েল হতে শক্তি উৎপাদনে প্রভাবকের ভূমিকা পালন করে। ফুয়েলের পাশাপাশি সেলে অক্সিজেন বা বাতাসের একটা উৎস সর্বদাই চালু রাখতে হয় যেন বিক্রিয়াটি ঘটতে পারে। এভাবে এ দুটি উৎস যতক্ষণ চলমান থাকে, ফুয়েল সেল ততক্ষণ অবিরতভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে।

1838 সালে জার্মান পদার্থবিদ ক্রিশ্চিয়ান ফ্রিডরিচ শনবেন (Christian Friedrich Schonbein) সর্বপ্রথম একটি সরল ফুয়েল সেল আবিষ্কার করেন। এক বছর পরে 1839 সালে ওয়েলশ (welsh)-এর পদার্থবিদ উইলিয়াম গ্রোভও (William Grove) একটি সরল ফুয়েল সেল তৈরি করেন। বাণিজ্যিকভাবে সর্বপ্রথম আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা, NASA মহাকাশযান (Space Capsules) এবং উপগ্ৰহতে (Satellites) শক্তি সরবরাহের উৎস হিসেবে ফুয়েল সেলের ব্যবহার শুরু করে। তখন থেকেই ফুয়েল সেল অন্যান্য কাজে ব্যবহার করা শুরু হয়।

মূলত ফুয়েল সেল কোন যন্ত্র চালনা করতে প্রাথমিক বৈদ্যুতিক উৎস হিসেবে অথবা বিদ্যুতের অভাব ঘটলে ব্যাকআপ শক্তি হিসেবে আবাসিক, শিল্পে বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে ব্যবহৃত হয়। গ্রামে, হাটে, বাজারে বা দুর্গত এলাকায় যেখানে বৈদ্যুতিক সংযােগ নেই সেখানে ফুয়েল সেল ব্যবহার করে বৈদ্যুতিক শক্তি পাওয়া যায়। বর্তমানে যানবাহনে, বাসে, অটোমােবাইলে, উড়োজাহাজে, নৌকায়, মােটর সাইকেলে এবং সাবমেরিনে এটি ব্যবহৃত হচ্ছে।

 

ফুয়েল সেল এর প্রকারভেদ

এ মূলনীতির উপর ভিত্তি করে শুধু ইলেকট্রোলাইটের ভিন্নতা অনুসারে ফুয়েল সেলকে বিভিন্ন শ্রেণীতে ভাগ করা হয়। সে অনুসারে বিভিন্ন প্রকার ফুয়েল সেল হলো–

১. প্রোটন বিনিময় মেমব্রেন ফুয়েল সেল (PEMFC)

২. ফসফরিক এসিড ফুয়েল সেল (PAFC)

৩. কঠিন অক্সাইড ফুয়েল সেল (SOFC)

৪. গলিত কার্বোনেট ফুয়েল সেল (MCFC)

৫. অ্যালকালাইন (ক্ষারীয়) ফুয়েল সেল (AFC)

 

 

আরো পড়ুনঃ-

 

১। তড়িৎ বিশ্লেষ্য ও ইলেকট্রনীয় পরিবাহীর মধ্যে পার্থক্য কি?

 

২। দ্রাব্যতা ও দ্রাব্যতা গুণফল কাকে বলে? দ্রাব্যতা ও দ্রাব্যতা গুণফলের তুলনা লিখ।

 

৩। চেইন বিক্রিয়া (Chain Reaction) কি? চেইন বিক্রিয়া কত প্রকার ও কি কি?

 

৪। জলবিদ্যুৎ কাকে বলে? জলবিদ্যুৎ এর সুবিধা ও অসুবিধা কি?

 

৫। তেজস্ক্রিয় পদার্থ কাকে বলে? তেজস্ক্রিয় পদার্থের প্রকারভেদ।

 

৬। পারমাণবিক বর্ণালী কাকে বলে? পারমাণবিক বর্ণালী কিভাবে সৃষ্টি হয়?

 

৭। নিউক্লিয় বিক্রিয়া কাকে বলে? নিউক্লিয় বিক্রিয়ার প্রয়োগ, শ্রেণিবিভাগ।

 

৮। তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ কাকে বলে? তেজষ্ক্রিয় আইসোটোপের ব্যবহার।

 

৯। পারমাণবিক শাঁস কাকে বলে? কীভাবে পারমাণবিক শাঁস গঠিত হয়?

 

১০। উভমুখী বিক্রিয়া কাকে বলে? সকল বিক্রিয়াই কি উভমুখী?

 

১১। ল্যাম্বার্টের সূত্র কি? What is Lambert’s law in Bengali?

 

১২। হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল কাকে বলে? হাইড্রোজেন ফুয়েল সেলের প্রয়োগ ও সুবিধা।

 

১৩। মোলার পরিবাহিতা ও তুল্য পরিবাহিতা কাকে বলে?

 

 

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

MOST POPULAR