HomeBlogসামাজিক যোগাযোগ সাইট কাকে বলে?

সামাজিক যোগাযোগ সাইট কাকে বলে?

নিজের ভালো লাগা, মন্দ লাগা, অনুষ্ঠানাদি, চাকরিতে প্রমোশন, সন্তানাদির বিয়ে ইত্যাদি নানা বিষয়ের তথ্য, ছবি কিংবা ভিডিও বিনিময় করা যায় ইন্টারনেটের যেসব সাইট থেকে সেগুলোকে সামাজিক যোগাযোগ সাইট (Social Communication Site) বলে। সামাজিক সম্পর্ক উন্নয়নে এবং সমাজকে এগিয়ে নিতে সামাজিক যোগাযোগ সাইটের গুরুত্ব অনেক বেশি।

কয়েকটি উল্লেখযোগ্য সামাজিক যোগাযোগ সাইটের নাম হলো–

১) ফেসবুক (Facebook)

২) টুইটার (Twitter)

৩) লিংকড ইন (LinkedIn)

৪) গুগল প্লাস (Google Plus) ইত্যাদি।

 

ফেসবুক (Facebook)

ফেসবুক (Facebook) হলো বর্তমান বিশ্বে সর্বাধিক আলোচিত বিষয়। বর্তমানে যতগুলো সামাজিক নেটওয়ার্ক আছে তার মধ্যে ফেসবুক হলো অন্যতম। একটি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার জন্যে এ নেটওয়ার্কটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এ নেটওয়ার্কটির কল্যাণে আমরা হাজার মাইল দূরে থেকেও খুবই ঘনিষ্ঠভাবে প্রতি মুহূর্তে যোগাযোগ রাখতে পারছি। ইন্টারনেট ব্যবহার করে এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে একজন অন্যজনের সাথে ভাব বিনিময় করে, তথ্য বিনিময় করে, ছবি, ভিডিও বিনিময় করে, কথাবার্তা বলে কিংবা বিশেষ কোনো একটা বিষয়ক আলোচনা করতে পারে।

ফেসবুকে ‘বন্ধু’ কারা : ফেসবুক ব্যবহারকারী একজন মানুষের সঙ্গে অন্য যত মানুষের যোগাযোগ থাকবে তারা সবাই হচ্ছে তার ‘বন্ধু’।

ফেসবুক ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা : 

ফেসবুক হলো সামাজিক যোগাযোগের জনপ্রিয় ওয়েবসাইট। ফেসবুক ব্যবহারের বেশ কিছু সুবিধা নিচে দেওয়া হলোঃ

  • খুব সহজে পরিচিত-অপরিচিত মানুষের সাথে যোগাযোগ করা যায় এবং বন্ধু হওয়া যায়।
  • অল্প সময়ে ও স্বল্প ব্যয়ে একাধিক বন্ধুর খোঁজ নেওয়া যায়।
  • পারস্পরিক সম্পর্কের স্থায়িত্ব বাড়ে।
  • বিভিন্ন শিক্ষামূলক পেজ দেখার মাধ্যমে জ্ঞান বাড়ে।
  • দ্রুত দেশ-বিদেশের সংবাদ পাওয়া যায়।
  • গণসচেতনতা এবং সামাজিক মূল্যবোধ বাড়াতে সাহায্য করে।
  • অন্যায়ের বিরুদ্ধে জনমত তৈরিতে এবং সৃষ্টিশীল কাজে উৎসাহ বাড়ে।

ফেসবুকের এত সব সুবিধার পাশাপাশি কিছু অসুবিধাও রয়েছে। নিচে ফেসবুক ব্যবহারের কিছু অসুবিধা উল্লেখ করা হলোঃ

  • বর্তমান সময়ে স্বল্প বয়সীদের কাছে ফেসবুক আসক্তির মতো।
  • অসঙ্গতিপূর্ণ বা অসামাজিক কোন পোস্টের দরুন ব্যবহারকারী মানসিকভাবে আহত হতে পারে।
  • তরুণ-তরুণীদের বিপথে যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

 

টুইটার (Twitter)

টুইটার (Twitter) হলো সামাজিক আন্তঃযোগাযোগ ব্যবস্থা ও মাইক্রোব্লগিং এর একটি ওয়েবসাইট যেখানে ব্যবহারকারীরা সর্বোচ্চ ১৪০ অক্ষরের বার্তা আদান-প্রদান ও প্রকাশ করতে পারেন। এ বার্তাগুলোকে টুইট (Tweet) বলা হয়ে থাকে। টুইটারের সদস্যদের টুইট বার্তাগুলো তাদের প্রোফাইল পাতায় দেখা যায়। টুইটারের সদস্যরা অন্য সদস্যদের টুইট পড়ার জন্য নিবন্ধন করতে পারেন।

এ কাজটিকে বলা হয় অনুসরণ (Follow) করা। কোনো সদস্যদের টুইট পড়ার জন্য যারা নিবন্ধন করেছে তাদের বলা হয় অনুসারী (Follower)। টুইট লেখার জন্য সদস্যরা সরাসরি টুইটার ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে পারেন। টুইটারের প্রধান কার্যালয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সানফ্রান্সিসকো। ২০০৬ সালে টুইটারের যাত্রা শুরু হয়। টুইটারকে ইন্টারনেটের এসএমএস বলা হয়।

 

লিংকড ইন (LinkedIn)

লিংকডইন ফেসবুক বা টুইটারের মতোই একটা সামাজিক যোগাযোগ ওয়েবসাইট যা পেশাজীবীরাই বেশি ব্যবহার করে থাকে। ২০১৩ সালের এক বিবৃতিতে লিঙ্কডইন ঘোষণা দেয় বর্তমানে তাদের নিবন্ধিত ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২০০ মিলিয়ন, যারা ২০০টি ভিন্ন ভিন্ন দেশের নাগরিক।

এই সাইটটি বর্তমানে ইংরেজি, ফ্রেঞ্চ, জার্মান, ইতালীয়, পর্তুগিজ, স্পেনিশ, ওলন্দাজ, সুইডিশ, রোমানিয়ান, রাশিয়ান, তুর্কি, জাপানিজ, চেক, পোলিশ, কোরিয়ান, ইন্দোনেশিয়ান এবং মালয় ভাষায় ব্যবহার করা যায়।

লিংকডইন দিয়ে কী করা যায় : আপনি চাকরি অথবা ব্যবসা করছেন কিংবা করার যদি সম্ভাবনা/পরিকল্পনা থেকে থাকে, তাহলে অবশ্যই আপনার LinkedIn প্রোফাইল থাকা উচিত। আপনি যদি স্টুডেন্ট হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার লিংকডইন প্রোফাইল থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

LinkedIn সবার কাছেই সুপরিচিত একটি নাম। পেশাদারদের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বড় কমিউনিটি হচ্ছে এই লিংকডইন। পেশাজীবীদের কাছে কাজের এক সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম হলো লিংকডইন। বর্তমানে করপোরেট জগতে নিয়োগকর্তারা চাকরিপ্রার্থীর যোগ্যতা যাচাইয়ে লিংকডইনের সহায়তা নেন। কারণ একজন কর্মীর সব কটি পেশাগত দক্ষতা সম্পর্কে জানতে লিংকডইনের বিকল্প নেই। চাকরি বদলানো বা নতুন চাকরি পেতেও সহায়ক এই ওয়েবসাইট। শুধু পেশাজীবীদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি হয়েছে সামাজিক যোগাযোগের এই সাইটটি। ২০০৩ সালে রেড হোফম্যান চালু করেন। বর্তমানে বিশ্বজুড়ে প্রায় ৫০ কোটির বেশি মানুষ লিংকডইন ব্যবহার করে চলেছেন ক্যারিয়ারে পথচলা সুন্দর করতে। পেশাজীবীদের জন্য তৈরি এই সাইটে ইচ্ছে করলেই নিজের সব তথ্য রাখা যায়। শিক্ষাগত যোগ্যতা, নিজের কাজের খবর, বর্তমানে যেখানে কর্মরত এসব তথ্য সহজেই শেয়ার করা যায়। একনজরে কারও সব কটি পেশাগত বিষয় জানতে লিংকডইনের জুড়ি নেই।

বাংলাদেশেও বেশ দ্রুতগতিতে বেড়ে চলেছে লিংকডইনের জনপ্রিয়তা।

 

এ সম্পর্কিত আরও কিছু প্রশ্ন ও উত্তরঃ–

১। ফেসবুকের নির্মাতা কে?

উত্তর : মার্ক জুকারবার্গ।

২। বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ বলতে কোনটি বোঝায়?

উত্তর : ভার্চুয়াল যোগাযোগ।

৩। ভার্চুয়াল যোগাযোগে কোনটি ব্যবহার করা হয়?

উত্তর : ই-মেইল।

৪। কোনটিকে মাইক্রোব্লগিংয়ের ওয়েবসাইট বলা হয়?

উত্তর : টুইটার

৫। কোন সদস্যদের বার্তাগুলো তাদের প্রোফাইল পাতায় দেখা যায়?

উত্তর : টুইটার।

৬। ভার্চুয়াল যোগাযোগে ব্যবহৃত ওয়েবসাইট কোনটি?

উত্তর : www.twitter.com

৭। টুইটার সদস্যকে যারা অনুসরণ করে তাদের কী বলা হয়?

উত্তর : অনুসারী।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments