HomeChemistryইলেকট্রন বিন্যাস কাকে বলে? ইলেকট্রন বিন্যাস করার নিয়ম কি?

ইলেকট্রন বিন্যাস কাকে বলে? ইলেকট্রন বিন্যাস করার নিয়ম কি?

ইলেকট্রন বিন্যাস কাকে বলে? (What is called Electron configuration in Bengali/Bangla?)

বিভিন্ন শক্তিস্তরে, উপস্তরে এবং অরবিটালে ইলেকট্রন সাধারণত একটি নিয়ম মাফিক বিতরণ ব্যবস্থার মাধ্যমে সজ্জিত থাকে। বিভিন্ন অরবিটালে ইলেকট্রনের এ সজ্জাকে ইলেকট্রন বিন্যাস (Electron configuration) বলে। ইলেকট্রন বিন্যাসের সাহায্যেই কোনো মৌলের পর্যায় সারণিতে সঠিক অবস্থান নির্ণয় করা হয়। এটি পর্যায় সারণির মূল ভিত্তি।

কিছু মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাস নিম্নরূপঃ

H(1): 1s1

He(2): 2s2

Li(3): 1s22s1

Be(4): 1s22s2

Na(11): 1s22s22p63s1

Ca(20): 1s22s22p63s23p64s2

 

ইলেকট্রন বিন্যাস লেখার নিয়ম

ইলেকট্রন বিন্যাস লেখার নিয়ম : কোন একটি পরমাণুর ইলেকট্রন বিন্যাস করতে চাইলে আপনাকে প্রথমে পরমাণু্টির ইলেকট্রন সংখ্যা জানতে হবে। তারপর শক্তিস্তর ও উপশক্তিস্তর সম্বন্ধে ধারণা থাকতে হবে।

শক্তিস্তর সাধারণত ৭টি। এগুলোকে উর্ধ্বক্রমাণুসারে K, L, M, N…. দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। ইলেকট্রন বিন্যাসের ক্ষেত্রে 1, 2, 3, 4…. হিসেবে লেখা হয়। অর্থাৎ, K=1, L=2, M=3, N=4 ইত্যাদি।

প্রতিটি শক্তিস্তরের জন্য আবার নির্দিষ্ট সংখ্যক উপস্তর রয়েছে। উপস্তর সাধারণত ৪টি। এগুলো হল s p d ও f. এগুলোতে যথাক্রমে সর্বোচ্চ ২, ৬, ১০ ও ১৪ টি করে ইলেকট্রন থাকতে পারে।

এর মধ্যে ১ নং শক্তিস্তরে উপস্তর থাকে ১ টি, ২ নং শক্তিস্তরে উপস্তর থাকে ২ টি, ৩ নং শক্তিস্তরে উপস্তর থাকে ৩ টি এবং বাকিগুলোতে ৪ টি করে উপস্তর থাকে।

চলুন একটা উদাহরণের মাধ্যমে ইলেকট্রন বিন্যাস লেখার নিয়মটি আয়ত্ব করার চেষ্টা করি।

আমরা জানি, সালফার (S), এর ইলেকট্রন সংখ্যা ১৬ টি। তাহলে সালফার (S) এর ইলেকট্রন বিন্যাস হবেঃ 1s2 2s2 2p6 3s2 3p4

খেয়াল করে দেখুন, প্রথম শক্তিস্তর পূর্ণ করে ক্রমান্বয়ে ইলেকট্রন বিন্যাসিত হয়েছে।

প্রথম শক্তিস্তরে 2টি, দ্বিতীয় শক্তিস্তরে 2+6=8 টি, তৃতীয় শক্তিস্তরে 2+4 = 6 টি ইলেকট্রন রয়েছে। এখানে তৃতীয় শক্তিস্তরে 3p6 না হয়ে 3p4 হইছে, কারন সালফার পরমাণুতে মোট ইলেকট্রন সংখ্যা ছিলো ১৬ টি, তৃতীয় শেলের বা শক্তিস্তরের p উপস্তরের জন্য ৪ টি ইলেকট্রনই বাকি ছিলো। অর্থাৎ P উপস্তরে 4 টি ইলেকট্রন বসালেই সালফারের ইলেকট্রন বিন্যাস পূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। তাই আর বাকি 2 টি ইলেকট্রন লাগেনি।

 

ইলেকট্রন প্রবেশের পূর্ণ ধারাটি হলো :

1s -> 2s -> 2p-> 3s-> 3p-> 4s-> 3d-> 4p-> 5s-> 4d-> 5p-> 6s-> 4f-> 5d-> 6p-> 7s-> 5f-> 6d.

ক্রমটি এমন উল্টোপাল্টা কেনো তা জানতে হলে আপনাকে হুন্ডের নীতি সম্পর্কে জানতে হবে। উপরোক্ত ধারা অনুসারেই ইলেকট্রন বিন্যাস করতে হবে। তবে বিন্যাস লেখার সময় অবশ্যই সিরিয়ালি লিখবেন।

আপনার সুবিদার্থে আরেকটি উদাহরণ দিলাম:

Sc (21) = 1s2 2s2 2p6 3s2 3p6 3d1 4s2

আমরা যদি একটানা ইলেকট্রন বসাতাম তাহলে 3d3 লিখলেই হতো, কিন্তু উপরের ধারা অনুযায়ী আগে 4s এ ইলেকট্রন প্রবেশ করে তারপর 3d তে এসেছে। আর এজন্যই 4s অরবিটাল পূর্ণ হয়ে বাকি ইলেকট্রন্গুলো 3d তে এসেছে।

তবে কিছু ব্যতিক্রমও আছে। কখনো যদি দেখেন শেষে 4s2 আর তার আগে 3d4 থাকে তাহলে 4s থেকে একটি ইলেকট্রন 3d তে পাঠিয়ে দিতে হবে। অর্থাৎ তখন 3d5 এবং 4s1 হবে। অর্থাৎ শেষ ও তার আগের স্তর অর্ধেক পূর্ণ করা সম্ভব হলে এরকমটা হবে।

 

ইলেকট্রন বিন্যাসের সাহায্যে পর্যায় সারণিতে মৌলের অবস্থান নির্ণয়

আধুনিক পর্যায় সারণিতে গ্রুপ সংখ্যা হলো শূন্যসহ নয়টি ও পর্যায় সাতটি এবং সর্বাধুনিক পর্যায় সারণিতে গ্রুপ সংখ্যা 18টি। s-ব্লক এবং p-ব্লক মৌল হলো A উপশ্রেণির মৌল আর d-ব্লক এবং f-ব্লক মৌল হলো B উপশ্রেণির মৌল। গ্রুপ সংখ্যা রোমান সংখ্যা দ্বারা প্রকাশ করা হয়।

কোনো মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাস হতে সহজেই পর্যায় সারণিতে তার অবস্থান নির্ধারণ করা যায়। মৌলের সর্বশেষ শক্তিস্তরের ইলেকট্রন সংখ্যা তার গ্রুপ সংখ্যা নির্দেশ করে। কোন মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাসে ব্যবহৃত সর্বোচ্চ প্রধান কোয়ান্টাম সংখ্যা তার পর্যায় নির্দেশ করে।

নিচের উদাহরণগুলো পর্যালোচনা করলে এ বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যাবে।

1. আধুনিক পর্যায় সারণিতে Ca এর অবস্থান নির্ণয় :

Ca(20) : 1s22s22p63s23p64s2

এখানে Ca এর বহিঃস্থস্তর হলো 4s2

সুতরাং তার সর্বশেষ শক্তিস্তরের ইলেকট্রন সংখ্যা হলো 2টি এবং Ca হলো s-ব্লক মৌল। তাই Ca এর গ্রুপ IIA এবং Ca এর ইলেকট্রন বিন্যাসে ব্যবহৃত সর্বোচ্চ কোয়ান্টাম সংখ্যা হলো 4।

সুতরাং Ca 4 নং এর পর্যায়ের মৌল। অতএব, Ca এর গ্রুপ নাম্বার IIA এবং পর্যায় হলো 4।

2. S এর আধুনিক পর্যায় সারণিতে অবস্থান নির্ণয় : S এর ইলেকট্রন বিন্যাস নিম্নরূপ : S (16) – 1s22s22p63s23p4 সালফারের সর্বশেষ শক্তিস্তরের মোট ইলেকট্রন সংখ্যা 6টি এবং এটি p-ব্লক মৌল। তাই সালফারের গ্রুপ নাম্বার VIA আর সালফারের ইলেকট্রন বিন্যাসে ব্যবহৃত সর্বোচ্চ প্রধান কোয়ান্টাম সংখ্যা হলো 3। তাই s-এর পর্যায় নাম্বার হলো তিন। অতএব, সালফার তৃতীয় পর্যায়ের VIA গ্রুপের মৌল।

 

অনুশীলনী

১। ইলেকট্রন বিন্যাসের উপর ভিত্তি করে পর্যায় সারণির মৌলসমূহকে কত ভাগে ভাগ করা যায়?

উত্তর : ইলেকট্রন বিন্যাসের উপর ভিত্তি করে পর্যায় সারণির মৌলসমূহকে চার ভাগে ভাগ করা যায়। যেমনঃ i. s-ব্লক মৌল, ii. p-ব্লক মৌল, iii. d-ব্লক মৌল, iv. f-ব্লক মৌল।

 

Tags :

পরমাণুর ইলেকট্রন বিন্যাস কি?; ইলেকট্রন বিন্যাস এর জনক কে?; ইলেকট্রন বিন্যাস পর্যায় সারণির মূল ভিত্তি ব্যাখ্যা কর; ইলেকট্রন বিন্যাস কিভাবে করতে হয়?; ১১৮ টি মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাস pdf; ইলেকট্রন বিন্যাস pdf download; উত্তেজিত মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাস; ইলেকট্রন বিন্যাসের প্রয়োজনীয়তা কি?; What is meant by electron configuration?; How do you write the electron configuration?; What is 1s 2s 2p 3s 3p?; Why electron configuration is important?;

RELATED ARTICLES

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments